ব্লাড সুগার মাপতে এক অভিনব যন্ত্র আবিষ্কার করলেন আইআইটি খড়্গপুরের একদল গবেষক। সাধারণ কাগজের তৈরী এই কিটের সাহায্যে খুব সহজেই মাপা যাবে ব্লাড সুগার, হিমোগ্লোবিন সহ রক্তের অন্যান্য উপাদান এবং তা সম্পন্ন হবে সম্পূর্ণ নির্ভুলভাবে, এমনটাই মন্তব্য করেছেন তারা।
যে কোনো মানুষ ব্যবহার করতে পারবেন এই যন্ত্র, তার জন্য কোনো পূর্ব প্রশিক্ষণের প্রয়োজন পড়বে না। অত্যন্ত স্বল্প ব্যয়ে স্বচ্ছন্দে এ’টি বহন করা যাবে বলে জানিয়েছেন আইআইটি’র এই গবেষক দল।
গবেষণা দলটির নেতৃত্বে রয়েছেন আইআইটি খড়গপুরের মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক সুমন চক্রবর্তী। আঙ্গুলের ডগায় সুঁচ ফুটিয়ে নেওয়া এক বিন্দু রক্ত ব্যবহার করে, রক্তে শর্করা ও হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ সহজেই সনাক্ত করে ফেলতে পারবে কাগজের তৈরী এই বিশেষ কিট। সনাক্তকরণ প্রক্রিয়াটি স্মার্টফোন ও এলইডি-র মাধ্যমে বিচার্য হবে।
যন্ত্রটি ব্যবহারের ক্ষেত্রে কোনো প্রশিক্ষণের প্রয়োজন নেই। কাগজের তৈরী এই যন্ত্রের নির্দিষ্ট প্যানেলে এক ফোঁটা রক্ত ফেলে দিলেই পাওয়া যাবে অবধারিত ফল। আগামীদিনে এই কিটের সাহায্যে ডায়গনস্টিক সেন্টারগুলির অনুরূপ রক্ত, মল, মূত্র, থুতুর মতো সমস্তরকম তরল পদার্থের পরীক্ষা সম্ভবপর হবে বলে জানিয়েছেন সুমন।
“অনিয়ন্ত্রিত ধূলো, ময়লা ও আর্দ্রতাপূর্ণ জায়গাগুলির মতো প্রতিকূল পরিবেশে আমরা এটা পরীক্ষা করে দেখেছি। শীততাপ নিয়ন্ত্রিত প্যাথোলজিকাল ল্যাবরেটরি ছাড়াও এই পরীক্ষা কার্যকরী রূপ পেয়েছে। ফলাফলের দিক থেকে ক্লিনিক সেন্টারগুলির সাথে এর বিশেষ কোনো পার্থ্যক্য নেই,” জানিয়েছেন বিশিষ্ট শল্য চিকিৎসক তথা খড়্গপুর আইআইটি-র স্কুল অফ মেডিক্যাল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির ভিজিটিং প্রফেসর শতদল সাহা ।
বিশেষ এই কাগজের কিট’টি যথাযথ ব্যবহার করতে পারলে তা অনেক দরিদ্র মানুষের উপকারে লাগবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞ মহল। প্রযুক্তিকে এমন অভিনব পদ্ধতিতে ব্যবহার করতে পারলে আগামী দিনে জনস্বাস্থ্যের কল্যাণেও তা কার্যকরী ভুমিকা পালন করবে। এর ফলে শুধু দেশ নয়, সমগ্র বিশ্বের দরিদ্র মানুষ অত্যন্ত স্বল্প ব্যয়ে পেয়ে যাবেন ক্লিনিকতুল্য পরিষেবা।