পৃথিবীর প্রথম হিমবাহ-স্মৃতিসৌধ

গ্লোবাল ওয়ার্মিং বা উষ্ণায়ন - পরিবেশবিদ থেকে শুরু করে বিজ্ঞানী , এমনকি সাধারণ চিন্তাশীল মানুষের কাছে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ এর জন্য বিভিন্ন হিমবাহ গলে যাচ্ছে। এবার পরিবেশ রক্ষায় এ বিষয়ে আইসল্যান্ড পৃথিবীর প্রথম অনন্য উদ্যোগ নিয়েছে যা সারা বিশ্বের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে উঠবে বলে মনে করা হচ্ছে।

উদ্যোগটির অভিনবত্ব হলো - আইসল্যান্ড তার প্রথম হারিয়ে যাওয়া হিমবাহ ‘ওকজোকুল’ এর জন্য একটি স্মৃতিসৌধ তৈরী করেছে। আমেরিকার টেক্সাসের হিউস্টনের রাইস ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীর দল , স্থানীয় বিশেষজ্ঞ ও গবেষকদের দল , আইসল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ক্যাটরিনা জ্যাকবসদত্তি , দেশীয় পরিবেশ মন্ত্রী , আইসল্যান্ডের শীর্ষস্থানীয় লেখক আন্দ্রি স্নার ম্যাগনসন এবং ভূতাত্ত্বিক ওড্ডুর সিগুরাসন ১৮ ই আগস্ট ২০১৯ বোরগের্ফজুরিউর সাইটে এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের নেতৃত্ব দেন।

স্মৃতি সৌধের উপর তাম্র ফলকে ইংরেজি ও আইসল্যান্ডীয় ভাষায় লেখা আছে যে , পরবর্তী ২০০ বছরে সমস্ত হিমবাহের পরিণতি হয়তো এক হতে চলেছে। আর এ ক্ষেত্রে আমরাই জানি যে কি ঘটছে আর আমাদের কি করা উচিত- এই জন্য স্মৃতিসৌধ গড়ে তোলা হয়েছে বলে জানান বিজ্ঞানী সাইমন হয়। এছাড়াও মূলত মে মাসে বায়ুমণ্ডলে কার্বনডাইঅক্সাইডের পরিমান ‘405 ppm co2’ লেখা থাকবে এই ফলকে ।

FotoJet (186)

প্রসঙ্গত ১৮৯০ সালে ১৬ বর্গকিলোমিটার জুড়ে থাকা ওকোজকুল হিমবাহ ক্ষয় পেতে পেতে ২০১২ সালে মাত্র  .৭ বর্গকিলোমিটারের জায়গা নিয়েছে। ২০১৪ সালে আইসল্যান্ডের মেটরোলজিক্যাল ডিপার্টমেন্ট হিমবাহের তালিকা থেকে একে সরিয়ে দেয়। কারণ এটি ‘মৃত বরফ’ নামে চিহ্নিত হয় ।

FotoJet (185)

বিজ্ঞানীদের এই স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের ব্যাখাও চমকপ্রদ। তাদের মতে , মানুষ তার গৌরবময় কাজের জন্য নানান স্মারক গড়ে তোলে , এটাও তেমনি। কিন্তু ভিন্নতা হলো এই স্মৃতি সৌধ হলো মানুষের কাজেরই এক পরিণতি যা কোনো গর্বের বিষয় নয়। ২০০ বছর পর সব হিমবাহের ক্ষয় হলেও এটি অক্ষত থাকবে এবং তা দেখে মনুষ্য সমাজ নিজেদের কৃতকর্মের জন্য একটু হলেও লজ্জিত হবে , সতর্কীকরণ সত্ত্বেও পরিবেশের প্রতি তাদের দায়বদ্ধতা কি পরিমান ছিল তাও বুঝতে পারবে। পরিশেষে বলা যায়, পরিবেশ রক্ষায় , জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিষয়টি অভিনব ও গুরুত্বপূর্ণ।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...