আচ্ছা, কখনো ভেবে দেখেছেন কলকাতায় যদি তুষারপাত হয় তাহলে কী কী করবেন? যদি এখনো ঠিক না করে থাকেন তাহলে এটাই হল সঠিক সময় তা ঠিক করার| তার কারণ আন্তর্জাতিক মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র নাসার একটি সাম্প্রতিক গবেষণা জানান দিচ্ছে, পরিস্থিতি অনুকূল থাকলে এই বছর থেকেই সূত্রপাত হতে চলেছে তুষারযুগের|
বিজ্ঞানের ভাষায়, তাপমাত্রার বৃদ্ধি বা হ্রাস পাওয়া সম্পূর্ণটাই নির্ভর করে সূর্যের তাপমাত্রার হেরফের-এর উপরে| সূর্যের তাপমাত্রার রকমফের-এর জন্য বদল আসে আবহাওয়াতেও| কখনো অতিরিক্ত ঠান্ডা তো কখনো অতিরিক্ত গরম, সবটাই ঘটে সূর্যের তাপমাত্রার পরিবর্তনের কারণে| প্রাকৃতিক নিয়ম মেনেই এক এক সময়ে বদলে যায় সূর্যের তাপমাত্রা| যার প্রভাব পড়ে সৌরজগতের বিভিন্ন গ্রহের উপর| বিজ্ঞানের ভাষায়, সূর্যের তাপমাত্রা হ্রাসের এই ঘটনাকে বলা হয় 'সোলার মিনিমাম'| আর বেশ কিছু বছর অন্তর ঘটে এই মহাজাগতিক ঘটনা| বিজ্ঞানীদের কষা অঙ্ক অনুযায়ী, ২০২০ সাল অর্থাৎ চলতি বছরেই মানুষ সাক্ষী হতে চলেছে সোলার মিনিমাম-এর| নাসার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ২০২০ সাল থেকে কমতে শুরু করবে পৃথিবীর তাপমাত্রা| প্রতি ২০০ বছর অন্তর ঘটে এই ঘটনা| এইসময় সূর্যের তাপমাত্রা সর্বনিম্নে গিয়ে পৌঁছায়| সবচেয়ে বড় কথা, এই ঘটনার স্থায়ীত্বকাল হয় ৩০ বছর|
নর্থামব্রিয়া ইউভার্সিটির অধ্যাপিকা ও বিশেষজ্ঞ ভ্যালেন্টিনা ঝারকোভা জানিয়েছেন, সোলার মিনিমামের ফলে হুড়মুড়িয়ে কমবে বিশ্বের তাপমাত্রা| এরফলে যেসব জায়গায় তাপমাত্রা কখনো ৫ ডিগ্রী সেলসিয়াসের কাছেও যায়নি সেইসব জায়গার তাপমাত্রাও ১ ডিগ্রী হয়ে যেতে পারে| স্বাভাবিকভাবেই তাপমাত্রার এই পতন বিশেষ প্রভাব ফেলতে চলেছে পৃথিবীর উপর| ২০৫৩ সাল পর্যন্ত সূর্যের তাপমাত্রা এরকম কমই থাকবে বলে জানিয়েছেন ভ্যালেনটিনা| এর স্থায়ীত্বকাল যে সব জায়গায় সমান হবে না তাও জানিয়েছেন তিনি| এর আগে সোলার মিনিমামের প্রভাব সবচেয়ে বেশি দেখা গিয়েছিল কানাডা ও আইসল্যান্ডে| যা ১৬৪৫ থেকে শুরু করে শেষ হয়েছিল ১৭১৫ সালে| এরপরে আর গ্র্যান্ড সোলার মিনিমাম কখনো দেখেনি মানুষ|
বিশেষজ্ঞদের মত, ২০২০ সালের সোলার মিনিমাম আদৌ গ্র্যান্ড হবে কী না তা এখন থেকেই স্পষ্ট করে বলা না গেলেও তাপমাত্রার পতন যে অনিবার্য তা স্বীকার করেছেন তারা| বিজ্ঞানীদের এই গবেষণার প্রকাশিত হয়েছে সান পত্রিকায়| কলকাতায় সত্যিই কোনদিন তুষারপাত হবে কিনা তা বিজ্ঞানীরা স্পষ্টভাবে বলতে না পারলেও তাপমাত্রার পতন যে হবেই তা নিশ্চিত করেছেন তারা| কলকাতায় বরফ পড়ুক বা না পড়ুক তাপমাত্রার পতন হলে যে স্বস্তি আসবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না|