২০১৮-তে বাংলাদেশে এই অভিনব উদ্ভাবনের খবর পাওয়া গেলেও এ দেশে এই প্রথম। এই প্রথম হায়দ্রাবাদের সতীশ কুমার এ দেশে উদ্ভাবন করেছেন অভিনব ‘প্লাস্টিক-পেট্রোল’। ৪৫ বছর বয়সী সতীশ একজন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার, অধ্যাপনা করেন একটি কলেজে। বিশ্ব জুড়ে মুহুর্মুহু বেড়ে চলা তেলের দাম সঙ্গে দ্বিগুন তালে বেড়ে চলা প্ল্যাস্টিক-দূষণের আগ্রাসন থেকে খানিক হলেও রেহাই দেবে সতীশের এই উদ্ভাবন, এমনটাই মনে করা হচ্ছে।
হায়দ্রাবাদের আদি বাসিন্দা সতীশ কুমারের বক্তব্য অনুয়ায়ী, তিন ধাপের রিভার্স ইঞ্জিনিয়ারিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাতিল প্লাস্টিক থেকে তিনি পেট্রল বানাতে সক্ষম। প্লাস্টিক থেকে পেট্রল বানানোর এই প্রক্রিয়ার নাম ‘প্লাস্টিক পাইরোলাইসিস’। চারটি ধাপে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। প্রথম ধাপ- ভ্যাকুয়ামে প্লাস্টিক গরম করা, দ্বিতীয় ধাপ- ডিপলিমেরাইজেশন, তৃতীয় ধাপ- গ্যামিফিকেশন, চতুর্থ ধাপ- কন্ডেনসেশন।
সতীশ কুমারের কোম্পানির নাম Hydroxy Systems Pvt Ltd। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প মন্ত্রকের অধীনে এই সংস্থা তৈরি করেছেন তিনি। এই সংস্থার মাধ্যমেই তিনি পেট্রল তৈরী করেন। তাঁর কথায়, “প্লাস্টিককে প্রথমে ডিজেলে পরিণত করা হয়। তারপর অ্যাভিয়েশন ,ফুয়েল ও সবশেষে পেট্রল।”
সতীশ আরও জানান, ৫০০ কেজি পুনর্ব্যবহার যোগ্য নয় এমন প্লাস্টিক থেকে ৪০০ লিটার জ্বালানি বানানো যায়। এতে জলের কোনও প্রয়োজন হয় না, বর্জ্য জলও তৈরি হয় না। যেহুতু প্রক্রিয়াটা ভ্যাকুয়ামে হয় কাজেই বায়ুদূষণেরও কোনও সম্ভাবনাও নেই। ২০১৬-র শুরু থেকে এখনও পর্যন্ত এভাবেই তিনি ৫০ টন প্লাস্টিককে পেট্রলে পরিণত করেছেন।
এক জাতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রতিদিন ২০০ কেজি প্লাস্টিক থেকে ২০০ লিটার পেট্রল বানাচ্ছেন সতীশ কুমার। স্থানীয় কারখানায় ৪০-৫০ টাকা লিটার প্রতি এই পেট্রল বিক্রি হয়। তবে গাড়িতে এই পেট্রল ব্যবহার করা যায় কি না, এখনও তা পরীক্ষা করা হয়নি। PVC ও PET ছাড়া সবরকমের প্লাস্টিকই এই প্রক্রিয়া ব্যবহারযোগ্য।
‘ইকো অ্যান্ড বাজেট ফ্রেন্ডলি’ এমন জ্বালানি তেলের উদ্ভাবন দেশবাসীকে নতুন দিশা দেখাবে এমনটাই মনে করছেন হায়দ্রাবাদের সতীশ কুমার।