যত্ন নিন চোখের

পুজো প্রায় এসেই গেলো।পার্লারগুলিতেও ইতিমধ্যেই ভিড় হওয়া শুরু হয়েই গেছে।ত্বক ও চুলের যত্ন নেওয়ার এটাই তো সেরা সময়।পুজোর সময় সকলের মধ্যমনি হয়ে থাকার জন্য এখন থেকেই নিতে হবে ত্বকের যত্ন।ডি-ট্যানিং থেকে শুরু করে পছন্দমত হেয়ার কাট এখন থেকে না করলে তো মুখে সেট হবে না। তাই এখন থেকেই শুরু হয়ে গেছে সাজুগুজু। কিন্তু আমাদের মুখমন্ডলের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় অথচ সবচেয়ে অবহেলিত অঙ্গটি এখনো সেই অবহেলিতই রয়ে গেলো। কোন অঙ্গের কথা বলছি বলুন তো? হ্যাঁ, চোখের কথা বলছি। সুন্দর পৃথিবীর চারপাশ ভালো করে দেখতে গেলে আমাদের চোখেরই তো প্রয়োজন। কিন্তু সেই চোখের যত্ন নিতেই আমরা কোথাও যেন ভুলে যাই।যার থেকে ঘনিয়ে আসতে পারে বড় বিপদ। বিশেষজ্ঞরা কি বলছেন এই নিয়ে চলুন জেনে নেওয়া যাক............

 

বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, চোখের দৃষ্টি ঝাপসা না হওয়া পর্যন্ত কিংবা চোখে কোনো সমস্যা না হওয়া পর্যন্ত আমরা চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন মনে করিনা।সারাদিন চোখের উপর দিয়ে প্রচন্ড ধকল গেলেও দিনের শেষে চোখের আরাম নিয়ে আমরা মোটেও ভাবি না। দিনের শেষে কাজ থেকে ফিরে আমাদের সাধের স্মার্টফোনটিতেই মনোনিবেশ করতে পছন্দ করি আমরা বেশিরভাগ মানুষ। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এইভাবে বেশিদিন চলতে থাকলে একসময় চোখের মারাত্মক বিপদ ঘনিয়ে আসতে পারে।নিয়মিত পাওয়ার চেক না করানোর ফলে পাওয়ারের বাড়বাড়ন্তকেও এড়িয়ে যেতে থাকি আমরা।এর ফলে ভবিষ্যতে চোখের ক্ষতি অনিবার্য।বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন কোন কোন ক্ষেত্রে আমরা অজান্তেই চোখের নানা ক্ষতি করছি। চলুন জেনে নেওয়া যাক বিষয়গুলি।

 

১) চলন্ত ট্রেনে বা বাসে মোবাইলে চোখ রাখার ফলে কম্পমান লেখা আমাদের চোখের উপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে।শুধু মোবাইল নয় বাসে বা ট্রেনে যাতায়াতের সময় বই পড়ার অভ্যেস থাকলে সেটিও বদলানোর পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

২) ঘর অন্ধকার করে মোবাইল ঘাঁটার অভ্যেস অনেকেরই থাকে। এই অন্ধকারে মোবাইলের ব্যবহার যে চোখের কতটা ক্ষতি করে তার ধারণাও অনেকের নেই।এই ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, মোবাইল থেকে নির্গত হওয়া নীলরশ্মি চোখের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর।অন্ধকারে মোবাইল দেখলে সেই নীলরশ্মির প্রভাব অতিরিক্তভাবে চোখে পড়ে। যার থেকে চোখে পাওয়ার আসতে পারে। এছাড়াও চোখের আরও নানাপ্রকারের ক্ষতি হতে পারে।

৩) দীর্ঘক্ষণ কম্পিউটারের সামনে বসে কাজ করলে কিছুদিন পর থেকে ‘কম্পিউটার ভিশন সিন্ড্রোমে’ আক্রান্ত হওয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে।এছাড়া চোখ ড্রাই হয়ে যাওয়ার সমস্যাও দেখা দিতে পারে।এক্ষেত্রে চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, দীর্ঘক্ষণ কম্পিউটারে একভাবে বসে কাজ না করে কিছুসময় অন্তর উঠে গিয়ে চোখে জলের ঝাপটা দিয়ে আসা উচিৎ।

৪) চিকিৎসকদের মতে, মোবাইল টিভি প্রভৃতির ব্রাইটনেস যতটা সম্ভব কমিয়ে রাখা ভালো।এতে চোখের উপর চাপ কম পড়ে।চশমার লেন্স-এ অ্যান্টি গ্লেয়ার এবং অ্যান্টি রিফ্লেক্টিভ কোটিং লাগিয়ে নেওয়া ভালো

৫) চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, সারাদিনের কাজের পর চোখকে বিশ্রাম দিতে রাতে সাত থেকে আট ঘন্টা নিশ্চিন্ত ঘুম অত্যন্ত জরুরি

 

চোখের নিচের ডার্ক সার্কেলের সমস্যা নিয়ে পুজোর আগের অনেকেই চিন্তিত থাকেন। সেই ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এই পদ্ধতিগুলি ফলো করলেই ডার্ক সার্কেলের সমস্যা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।চিকিৎসকদের মতে, দুশ্চিন্তার কারণেও চোখের নিচে কালোভাব আসতে পারে। তাই চিন্তা একটু কম করুন। এতে আপনিও ভালো থাকবেন আর দেখতেও সুন্দর লাগবে। অনেকসময় তাড়া থাকার ফলে কিংবা ক্লান্ত থাকার ফলে রাতে শুতে যাওয়ার আগে চোখ থেকে কাজল তুলতে অনেকেই ভুলে যান।ত্বক বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, দীর্ঘদিন কাজল এইভাবে থাকার ফলে চোখের কোলে কালোভাব আসতে পারে যা পরবর্তীকালে ডার্ক সার্কেলের রূপ নিয়ে থাকে। চোখের কোল বেশি শুষ্ক হয়ে গেলেও সমস্যা হতে পারে। তাই ত্বক চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ভালো ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে তবেই রাতে শুতে যাওয়া উচিৎ

 

জানলেন বিশেষজ্ঞ এবং চিকিৎসকের মতামত। এবার আর কি? এই নিয়ন মেনে চলুন আজ পুজোর আগেই চোখের নিচ থেকে দূর করুন ডার্ক সার্কেল।বিশেষজ্ঞরা যে বিষয়গুলির দিকে খেয়াল রাখতে বলেছেন সেগুলিও মেনে চলুন আর পুজোর সময় হয়ে যান সকলের সেন্টার অফ অ্যাট্রাকশন...............

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...