চৈত্র পেরিয়ে এসেছে বৈশাখ| মাসের শুরু সবে| কিন্তু গরমের চোখ রাঙানি দেখে কে বলে যে গরমের সবে সূত্রপাত এটা? সুত্রপাতেই যা খেল দেখাচ্ছে এই বছরের গ্রীষ্ম তা রীতিমত চিন্তার ভাঁজ ফেলছে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে চিকিৎসক এবং বিজ্ঞানীদেরও কপালে| শুরুতেই যদি এইপ্রকার গরম পড়ে তাহলে ভরা জৈষ্ঠ্যে আবহাওয়া কিরকম হতে পারে তা ভেবেই কম্পমান সবাই| এই গরমের সাথে পাল্লা দিয়ে আবার বাড়ছে জ্বর| গরম থেকে ঠান্ডা আবার ঠান্ডা থেকে গরম| সবকিছু মিলিয়ে মানুষকে নাজেহাল করে ফেলছে এই আবহাওয়া|
সকালের দিকে হালকা রোদ, বেলা বাড়তে না বাড়তেই প্রখর রোদ এবং তার সাথে বইতে শুরু করছে লু| আর লু বইলে যে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ে তা তো সকলেরই জানা| এইসময়েই আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনার জন্যই ভুগতে হচ্ছে শিশু থেকে শুরু করে সমস্ত মানুষকে| প্রতি ঘরে ঘরে হানা দিয়েছে ভাইরাল ফিভার| এই সময় আবহাওয়ার পরিবর্তনের সময় যাদের ইমিউনিটি পাওয়ার কম তাদের বিশেষ করে এই সময় জ্বরে কাবু হতে দেখা যায়| এই ধরণের ভাইরাল জ্বর হলে সর্দিকাশির সাথে সাথেই গায়ে হাত পায়ে প্রচন্ড ব্যথা অনুভূত হতে থাকে| তাই এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে এই জ্বর থেকে নিজেকে কিভাবে বাঁচাবেন তা নিয়ে চলুন আলোচনা করা যাক|
এই রকমের জ্বর থেকে বাঁচার জন্য প্রথমেই শরীরের ইমিউনিটি পাওয়ার বাড়ানো দরকার| আর শরীরের ইমিউনিটি পাওয়ার বাড়ানোর জন্য প্রতিদিন সকালে খালি পেটে দুই কোয়া কাঁচা রসুন আর কাঁচা আদা চিবিয়ে খান| এই দুটি জিনিসেরই অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি-ফাঙ্গাল ধর্ম বর্তমান ফলে এতে শরীরের ইমিউনিটি পাওয়ার বাড়বে আর ভাইরাল জ্বর স্পর্শ করতে পারবে না| এছাড়াও আদা শরীরের রক্ত সঞ্চালন ক্ষমতা বাড়ায় আর কোলেস্টেরলের পরিমানও নিয়ন্ত্রণ করে|
চিকিৎসকেরা নিজেরাই জানাচ্ছেন এই সময় কি কি করলে এই ভাইরাল জ্বরের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে-
১) এই গরমে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা উচিত| পরিবারের কেউ যদি এই জ্বরে আক্রান্ত হয়ে থাকে তাহলে তাকে স্পর্শ করার পর সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নিন|
২) বাইরে থেকে আসার পরেই বিছানায় গিয়ে বসবেন না| জামা কাপড় ছেড়ে হাত মুখ ধুয়ে তারপরেই খাটে বসুন|
৩) ভাইরাল জ্বরের অন্যতম কারণ হল ডিহাইড্রেশন| তাই এই সময় বেশি করে জল খাওয়া উচিত| বাইরে বেরোলেও সাথে জলের বোতল নিয়ে বের হন| বাইরের ঠান্ডা ড্রিঙ্কস খেতে সেই মুহুর্তে ভালো লাগলেও পরে তা ক্ষতিকর রূপ ধারণ করতে পারে|
৪) বাড়ির কারোর ভাইরাল জ্বর হলে তাকে বলুন কাশির সময় মুখে হাত চাপা দিতে কারণ কাশি বা হাঁচির সময়েই এই ভাইরাস অপরের শরীরে প্রবেশ করে|
৫) ঘরে বাইরে যেখানেই থাকুন খাবারের আগে হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ভালো করে ধুয়ে নিন|
এছাড়াও বাইরে বেরোনোর সময় হালকা জামা কাপড় পরুন| ছাতা ব্যবহার করুন| আর চিকিৎসকেরাও পরামর্শ দিচ্ছেন সকাল ১১টা থেকে দুপুর ২টোর মধ্যে বিশেষ কোনো প্রয়োজন থাকলে তবেই বাড়ি থেকে বের হন| বিশেষ প্রয়োজন না থাকলে বেরোনোর দরকার নেই| রোদ থেকে এসেই ঠান্ডা জল খাবেন না বা এসিতে ঢুকে পড়বেন না| সাময়িক শান্তি পরবর্তীকালের অশান্তির কারণ না হয়ে যায় এটা খেয়াল রেখে চলবেন তাহলেই দেখবেন এইসব ভাইরাল জ্বরের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছেন আপনি|