জীবনের কোনো না কোনো সময়ে সবার জীবনেই একবার করে হানা দেয় স্ট্রেচমার্ক| বিশেষ করে মহিলাদের ক্ষেত্রে এই সমস্যাটি লক্ষ্যনীয় হয়| প্রেগন্যান্সির পর সমস্ত মহিলাদের জীবনেই এই দিন আসে যখন তার পেটের চারপাশ স্ট্রেচমার্কের কারণে পোশাক দিয়ে ঢেকে রাখতে হয়| এছাড়াও হঠাৎ ওজন বৃদ্ধি বা হ্রাসের জন্য স্ট্রেচমার্ক আসতে পারে| শরীরের যে সমস্ত জায়গায় স্ট্রেচমার্কের প্রাধান্য দেখা যায়, তা হলো, হাতের পিছন দিক, কোমরের কাছ, পিঠ, পায়ের নানা জায়গা এবং পেট|
স্ট্রেচমার্ক অবশ্যই মেয়েদের রূপের সামান্য হলেও ব্যাঘাত ঘটাতে সক্ষম| তাই শরীরে একবার স্ট্রেচ মার্ক থাবা বসালেই তটস্থ হয়ে ওঠে সব মেয়েই| কিছু কিছু বাজার চলতি ওসুধ, তেল এবং প্রসাধনী দ্রব্য ব্যবহারে সাময়িক স্বস্তি অনুভব হলেও এই রোগ থেকে সম্পূর্ণ মুক্তি পাওয়া বেশ কষ্টকর|
সবসময় প্রসাধনী দ্রব্য যে কাজ করতে ব্যর্থ হয় সেই কাজ করে দেখায় প্রাকৃতিক উপাদান| চলুন আজ খুব সংক্ষেপে জেনে নিই প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করে কিভাবে স্ট্রেচমার্কের দাগ দূর করা যায়| প্রথমেই জেনে নেওয়া যাক, কি কারণে হয় এই স্ট্রেচমার্ক?ত্বকের মূল উপাদান হল কোলাজেন এবং ইলাস্টিন| ত্বকের ভাঙ্গনে সাহায্য করে এই দুই উপাদান| তাই ত্বকযখন পুনরুজ্জীবিত হয়, তখন এই ভাঙ্গা জায়গাগুলিতে একধরনের দাগ থেকে যায় সেই দাগকেই স্ট্রেচমার্ক বলা হয়ে থাকে|
প্রাকৃতিক উপাদান যেগুলি এই স্ট্রেচমার্ক কমাতে উপকারী ভূমিকা পালন করে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, ভিটামিন ই তেল, কোকো বাটার, আমন্ড তেল, অলিভ তেল প্রভৃতি| এইসব সামগ্রী যদি স্ট্রেচমার্কের উপর হালকা হাতে মালিশ করা যায় তাহলে উপকার পাওয়া যায়| স্ট্রেচমার্কের উপর কখনো ট্যান পড়ে না| তাই শরীরে ট্যান পড়লে এই স্ট্রেচমার্ক বেশি দৃশ্যমান হয়ে থাকে|
এই স্ট্রেচ মার্কের সমস্যা থেকে মুক্তির উপায় কিন্তু লুকিয়ে আছে আমাদের রান্না ঘরেই| আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কাজে লাগে এমন অনেক উপাদান এই স্ট্রেচ মার্কের উপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে| তার মধ্যে অন্যতম হল, আলু| স্ট্রেচমার্ক রয়েছে যেসব জায়গায়, সেখানে আলুর রস লাগালে উপকার মেলে| প্রথমেই একটি আলু পাতলা পাতলা টুকরো করে কেটে নিন| সেই কাটা টুকরো দাগের উপর হালকা হাতে ঘসতে থাকুন| ১০ মিনিট পর উষ্ণ গরম জল দিয়ে জায়গাটা ধুয়ে ফেলুন| এইভাবে এক সপ্তাহ আলুর রস ব্যবহার করতে পারলে এই দাগ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে|
স্ট্রেচ মার্কের দাগ দূর করতে আরও একটি উপাদান ব্যবহার করা যায় তা হলো ডিম| ডিমের সাদা অংশ ভালোভাবে ফেটিয়ে নিয়ে দাগের উপর লাগিয়ে রাখুন| কিছুক্ষণ পর জল দিয়ে ভালো করে ধুয়ে কোনো ভালো ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন| যতদিন না পর্যন্ত দাগ হালকা হচ্ছে ততদিন এই প্রণালীটি ফলো করে যান|
লেবুর রস যেকোনো দাগ কমাতে সাহায্য করে| তাই স্ট্রেচ মার্কের দাগের উপর লেবুর রস লাগিয়ে রাখলেও উপকার পাওয়া যায়| দাগের উপর লেবুর রস লাগিয়ে রেখে দিতে হবে| রস সম্পূর্ণ শুকিয়ে গেলে জল দিয়ে ভালো করে ধুয়ে ফেলতে হবে| সপ্তাহখানেক ব্যবহার করলেই সুফল পাওয়া যাবে|
ত্বকের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধিতে হলুদের উপকারের কথা কারোর অজানা নয়| স্ট্রেচ মার্ক কমাতেও হলুদের উপকার অবিশ্বাস্য| কাঁচা হলুদ বাটার সাথে সর্ষের তেল মিশিয়ে একটু ঘন পেস্ট বানিয়ে নিন| সেই পেস্ট দাগের উপর লাগিয়ে রাখুন| শুকিয়ে গেলে উষ্ণ গরম জলে ধুয়ে ফেলুন|
এইসব উপায়ে আপনারা আপনাদের সুন্দর ত্বক থেকে অবাঞ্ছিত স্ট্রেচমার্কের দাগ থেকে মুক্তি পেতে পারেন| এছাড়াও এই দাগ কমাতে সাহায্য করে অ্যালোভেরা| অ্যালোভেরার ভিতর থেকে শাস বের করে নিয়ে দাগের উপর ঘসতে থাকুন| ধীরে ধীরে দেখবেন দাগ হালকা হয়ে যাচ্ছে|
স্ট্রেচমার্কের সমস্যার কোনো পাকাপাকি সমাধান না থাকলেও এইসব পদ্ধতির ব্যবহারে অনেকটাই হালকা হয়ে যায় এই দাগ|