রোজকার কাজের চাপে পড়ে দিনের শেষে মাথা যন্ত্রণার শিকার অনেকেই হয়ে থাকেন। সারাদিনের পরিশ্রম এবং ক্লান্তির ফলে মাথা যন্ত্রনা হওয়া অনেকের কাছেই খুব স্বাভাবিক ব্যাপার। তাছাড়া এখন চলছে আবার রোদ বৃষ্টির খেলা। এই মুহূর্তে রোদ তো পরমুহূর্তেই আবার বৃষ্টি। রোদ দেখে বাড়ি থেকে ছাতা না নিয়েই বেরোলেন আর বৃষ্টিতে ভিজে চুপচুপে অবস্থা হলো। ভিজে যাওয়ার পর সঙ্গে এক্সট্রা জামা না থাকলে বা রাস্তায় কোনো কাজে থাকলে গায়েই শুকোয় সেই জল। মাথায় জল বসার ফলে মাথা যন্ত্রনা হওয়াটা স্বাভাবিক। এছাড়াও রয়েছে নানা জিনিস নিয়ে যেমন চিন্তা সেরকম দুশ্চিন্তা। এইসব সামলাতে হয় আমাদের মস্তিষ্ককেই। তাই স্বাভাবিকভাবেই দিনের শেষে ক্লান্ত হয়ে পড়ে সেও।কিভাবে বিশ্রাম দেবেন নিজের মস্তিষ্ককে? কিভাবেই বা কমাবেন দিনের শেষের মাথাব্যথা?
চিকিৎসকদের মতে, পর্যাপ্ত পরিমান ঘুম না হওয়ার ফলে মাথা যন্ত্রনা হতে পারে। তাছাড়া ঘুম ঠিক না হলে সারাদিন শরীরে ক্লান্তিভাব থেকে যায়। ফলে কাজেকর্মে ইন্টারেস্ট পাওয়া যায় না। জোর করে কাজ করার ফলে মাথার উপর এক্সট্রা প্রেশার পড়ে। তাই মাথার যন্ত্রণাকে বশে রাখতে হলে পর্যাপ্ত পরিমান ঘুম অবশ্যই প্রয়োজন। হঠাৎ মাথার যন্ত্রণা শুরু হলে সেই সময় যদি সুযোগ থাকে তাহলে কিছুক্ষন চোখ বন্ধ করে শুয়ে থাকুন। মস্তিষ্ক বিশ্রাম পেলে মাথার যন্ত্রণা সহজেই কমে যাবে।
মাসাজ এইসময় ভালো কাজ দেয়। কিন্তু সবক্ষেত্রে তো পার্লারে যাওয়া সম্ভব নয়। সেই ক্ষেত্রে বাড়ির লোককেই অনুরোধ করুন মাথা ও ঘাড়ে মাসাজ করে দেওয়া জন্য। মাসাজ করার সময় যদি এসেন্সিয়াল তেল ব্যবহার করা যায় তাহলে আরও ভালো উপকার পাওয়া যায়। এসেন্সিয়াল তেলের সুগন্ধ নার্ভকে রিল্যাক্স করতে সাহায্য করে থাকে।
অনেকসময় আমাদের কাজের সূত্রে দিনের বেশিরভাগ সময় কম্পিউটার বা ল্যাপটপে চোখ রাখতে হয়। সেক্ষত্রে এক জায়গায় বসে কাজ করার ফলে যেমন শিরদাঁড়ার ব্যথা হতে পারে সেরকমই চোখের উপর অতিরিক্ত প্রেসারও পড়ে। সেই ক্ষেত্রে কিছুক্ষণ কাজ করার পর চোখ বন্ধ করে কিছুক্ষন বসুন। আলো থেকে চোখ সরিয়ে নিলে চোখের নার্ভ রিলিফ পায়। তখন মাথার যন্ত্রণার অনেকটা উপশম হয়।
কফিতে উপস্থিত ক্যাফিন মাথাব্যথা কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই মাথা ব্যথা হলে চিকিৎসকেরাও চা বা কফি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কড়া করে চা বা কফি খেলে মাথাব্যথা অনেকটা কমে যায়। তবে এই ক্ষেত্রে লিকার চা বা ব্ল্যাক কফি খাওয়াটাই বেটার। কফি পছন্দ না হলে আদা দিয়ে চা করে খেতে পারেন। আদা ইনফ্লেমেশন কমাতে সাহায্য করে থাকে। তবে সবক্ষেত্রেই মনে রাখা উচিত অতিরিক্ত কোনো কিছুই শরীরের পক্ষে ভালো নয় তাই ঘন ঘন চা বা কফি পান করবেন না এতে হিতে বিপরীত হতে পারে।
সবক্ষেত্রে মাথাব্যথা টেনশন বা ক্লান্তির থেকে হয় না। কিছুক্ষেত্রে মাথাযন্ত্রণা অন্য রোগের প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবেও আত্মপ্রকাশ করতে পারে। যদি রেগুলার বেসিসে মাথা যন্ত্রনা হতে থাকে তাহলে সময় নষ্ট না করে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।অনেকক্ষেত্রেই আমরা দোকান থেকে ওভার দা কাউন্টার মেডিসিন কিনে থাকি কিন্তু চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, এইজাতীয় মাথা যন্ত্রণার সময় চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ খাওয়া উচিত নয়।