শীতকালে চুল অতিরিক্ত শুষ্ক আবার গরমকালে চুল অতিরিক্ত তৈলাক্ত। এই নিয়েই চলতে হয় সকলকেই। এক এক ঋতুতে চুল থেকে শুরু করে ত্বকের এক একরকম অবস্থা হয়। বারবার পার্লারে গিয়ে ট্রিটমেন্ট করলেই চুল বা ত্বক যে ভালো হয়ে যায় না তাও সকলের জানা। কিন্তু যেভাবে প্রতিযোগিতার ইঁদুরদৌড়ে মানুষ দৌড়াচ্ছে সেখানে দাঁড়িয়ে চুল বা ত্বকের প্রতি অতিরিক্ত নজর দেওয়া সম্ভব হয় না কারোরই। কিন্তু গরমকালে ঘাম বসে যেভাবে চুলের ক্ষতি হয় তাও চুলের স্বাস্থ্যের জন্য ঠিক নয়। তাই আজ আমরা আপনাদের কাছে এমন কিছু পদ্ধতির খোঁজ এনেছি যা খুব কম সময়ে চুলের স্বাস্থ্য ফেরাতে সাহায্য করবে।
গরমকালে বাতাসে আর্দ্রতার পরিমান অনেকতা বেশি থাকে। তাছাড়া ঘাম তো রয়েছেই। এই দুয়ের প্রভাবে চুলের গোড়া আলগা হয়ে যায়। এই সময় চুল জোরে আঁচড়াতে গেলে চুল ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এছাড়াও চুলের গোড়ায় ঘাম বসে চুলের ক্ষতি হতে পারে। এইসময় চুল থেকে অতিরিক্ত পরিমানে তৈলাক্ত পদার্থ নির্গত হতে থাকে। তাই এই সময় চুলে জটও বেশি পড়ে। চুল যাতে হালকা হাতে আঁচড়ানো যায় সেইদিকে খেয়াল রাখা উচিত। এছাড়াও চুল তৈলাক্ত হয়ে গেলে স্বাভাবিকভাবেই চুলের ফুরফুরে ভাব নষ্ট হয়ে যায়। এইসব সমস্যা রোধ করার জন্য কি কি করবেন জেনে নিন...............
১) এই সময় চুলের গোড়ায় ধুলোবালি জমে যায় তাই যদি একদিন অন্তর শ্যাম্পু করা যায় তাহলে তা চুলের জন্য খুবই ভালো। কিন্তু খুব বড় চুল হলে একদিন অন্তর শ্যাম্পু করা সম্ভব হয় না। সেই ক্ষেত্রে সপ্তাহে কম করে দুবার শ্যাম্পু অবশ্যই করা উচিত।
২) একটি পাত্রে পাতিলেবুর রস নিন। সেই লেবুর রসের সাথে অল্প করে জল মিশিয়ে সেই লেবু মিশ্রিত জল মাথার স্ক্যাল্পে হালকা হাতে মালিশ করুন। ৩০ মিনিট এইভাবেই রেখে দিন। এরপর অল্প অল্প করে নারকেল তেল নিয়ে সেটিও চুলে লাগিয়ে নিন। এইভাবে আরো কিছুক্ষন রেখে শ্যাম্পু করে নিন। সপ্তাহে দুবার এই রেমিডিটি ব্যবহার করতে পারলে ভালো।
৩) অ্যালোভেরা জেল চুলের জন্য খুবই ভালো। শীত, গ্রীষ্ম বা বর্ষা যে কোনো সময়েই অ্যালোভেরা জেল চুলে লাগানো যায়। প্রতিবার শ্যাম্পু করার আগে অ্যালোভেরা জেল গোটা মাথায় লাগিয়ে নিন। সবচেয়ে ভালো হয় যদি অ্যালোভেরা জেলটি প্রাকৃতিক হয়। অনেকের বাড়িতেই অ্যালোভেরা গাছ থাকে। সেখান থেকে একটি ডাল নিয়ে তা ভাঙলে যে জেলটি পাওয়া যায় সেটাই প্রাকৃতিক অ্যালোভেরা জেল। এই জেল যদি চুলে লাগানো যায় তাহলে চুলের প্রয়োজনীয় আর্দ্রতা সেখান থেকেই চুল শোষণ করে নেয়।
৪) নানা কারণে চুল পেকে যাওয়ার সমস্যা দেখা যায়। সেই সব ক্ষেত্রে মানুষজন চুলে কালার বা কলপ করে থাকে। কিন্তু এইসব কৃত্রিম রং চুলে রং করার সাথে সাথে চুলের নানাপ্রকার ক্ষতি করে। তাই এইজাতীয় জিনিস চুলে যত কম ব্যবহার করা যায় ততই ভালো।
৫) রোদের মধ্যে বাইরে বেরোলে ছাতা অবশ্যই নেবেন। রোদের হাত থেকে চুলকে এইভাবে বাঁচানো সম্ভব। টুপি এই ক্ষেত্রে কাজ করবে না। টুপি পরলে চুলে ঘাম বসে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি বেড়ে যায়।
৬) অনেকেই আমরা চুলের পরিচর্যার জন্য পার্লারে যাই। চুল ট্রিম করা থেকে শুরু করে হেয়ার স্পা সবটাই আমরা করি চুল সুন্দর দেখানোর জন্য। হেয়ার স্পা করা সত্যিই চুলের জন্য খুবই ভালো। আজকাল বাড়িতেই স্পা-এর ক্রিম কিনে এনে স্পা করে থাকেন অনেকে। কিন্তু এতে পার্লারের মতো এফেক্ট পাওয়া যায় না। পার্লারে যারা স্পা করেন তারা যথেষ্ট এফিসিয়েন্ট হওয়ার কারণে পার্লার থেকে যদি মাসে একবার স্পা করা যায় তাহলেই চুলের টেক্সচার ধীরে ধীরে ভালো হতে থাকে।
৭) শুধু বাইরের প্রোডাক্ট ব্যবহার করেই সুন্দর হওয়া যায়না। তার সাথে সাথে পুষ্টিকর খাবার খাওয়া এবং প্রচুর পরিমানে জল খাওয়া প্রয়োজন। স্ট্রেস যতটা সম্ভব কম নেওয়া উচিত কারণ মনের আয়না কিন্তু আমাদের মুখমন্ডল। তাই মনের গভীরে স্ট্রেস পড়লে তার ছাপ মুখে পড়বেই। সবসময় হাসিখুশি থাকার চেষ্টা করুন। আর এই গরমে বারবার স্নান করলেও চুল যাতে বারবার না ভেজে সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে কারণ চুল ভেজা থাকলে আবার ঠান্ডা লাগার সম্ভাবনা তৈরী হতে পারে।