বাড়িতে পোষ্য রাখতে কার না ভালো লাগে? নিঃসন্তান দম্পতি পোষ্যকেই নিজের সন্তান মনে করে কাছে রাখেন তার আদরযত্ন করে থাকেন।মন খারাপের সাথী তো বটেই এরা হয় মন ভালো করার কারণ। সারাদিন কাজের শেষে বাড়ি ফিরে ছোট্ট পোষ্যের মায়াভরা মুখ দেখলে দূর হয় সমস্ত ক্লান্তি। কিন্তু অনেকেই আছেন যাদের পোষ্যদের লোম থেকে সমস্যা হয়। তারা চাইলেও বাড়িতে কোনো পোষ্য রাখতে পারেননা। যাদের ডাস্ট অ্যালাৰ্জি রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে বাড়িতে পোষ্য রাখা একদমই উচিৎ নয়। পোষ্যদের গায়ে একধরণের খুশকির মতন বস্তু থাকে। পোষ্য এসে গায়ে উঠলে সেই বস্তু মালিকের নাকে ঢুকতে পারে। আর তার থেকে সূত্রপাত হয় নানা সমস্যার। অনেকেই বলেন বাড়িতে পোষ্য থাকলে বাড়িতে হাইজিন সঠিকভাবে মেনে চলা যায় না।চলুন আজ জেনে নেওয়া যাক বাড়িতে পোষ্য রেখেও কিভাবে হাইজিন মেনে চলবেন..............
১) পোষ্যদের মধ্যে বিশেষ করে সারমেয় এবং মার্জার অর্থাৎ কুকুর এবং বিড়ালের গা থেকে লোম ঝরে সবচেয়ে বেশি। প্রথমে এদের গায়ে থাকে অন্যধরণের লোম যা খুবই নরম হয়ে থাকে। তুলোর মতো হওয়ার কারণে এই লোম ওড়ে খুব বেশি। পোষ্য খুব ছোট হলে অর্থাৎ তার পরিণত লোম না জন্মানো পর্যন্ত তার লোম আঁচড়ানোর সময় ফ্যান চালাবেন না। এতে লোম উড়ে ঘরের অন্যপ্রান্তে চলে যেতে পারে যা পরবর্তীকালে সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।
২) পোষ্যকে সবসময় পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করুন। নিয়ম করে প্রতি সপ্তাহে তাকে স্নান করান। পোষ্য পরিষ্কার থাকলে লোম ঝরার সম্ভাবনা অনেকটা কমে যায়। এছাড়াও বাজারে পোষ্যদের লোম ঝরা বন্ধ করার জন্য পাওয়া যায় নানা ধরণের ওষুধ। পশুচিকিৎসকের সাথে আলোচনা করে ওরকম কোনো ওষুধ ব্যবহার করতে পারেন। পোষ্যকে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ান। স্বাস্থ্য ঠিক থাকলে লোম ঝরার পরিমান অনেকটা কমে যায়।
৩) পোষ্যকে রাস্তার কুকুর বিড়ালের সাথে খেলতে না দেওয়াই ভালো। আর পোষ্যকে নিয়ে বাইরে হাঁটতে বেরোলে ফেরার পর জীবাণুনাশক তরল দিয়ে পোষ্যের পা ধুইয়ে দিন। পোষ্যকে স্নান করালে তার গা শুকানোর জন্য ড্রায়ার ব্যবহার করুন। তবে ড্রায়ারের তাপমাত্রা কুল মোডে সেট করবেন। পোষ্যদের ত্বক খুব নরম হয়ে থাকে। তারা খুব বেশি গরম বা ঠান্ডা সহ্য করতে পারেনা। তাই পোষ্যের গায়ে লাগানোর আগে ড্রায়ার থেকে কতটা গরম বা ঠান্ডা হাওয়া বেরোচ্ছে তা নিজের হাতে লাগিয়ে পরীক্ষা করে নিন।
৪) পোষ্যকে একটি বদ্ধ জায়গায় স্নান করানোর চেষ্টা করুন। না তা হলে পোষ্য ছুটোছুটি করলে তার গা থেকে জল বা সাবান ঘরের সর্বত্র পড়তে পারে। এর ফলে ঘর তো নোংরা হবেই তার সাথে বিপদের সম্ভাবনা থেকে যাবে। পোষ্যের গায়ের জল ভালোভাবে শুকিয়ে তবেই তাকে অন্য জায়গায় নিয়ে যান।
৫) বর্তমানে পোষ্যদের লোম আঁচড়ানোর জন্য বিশেষ একধরণের গ্লাভস পাওয়া যায়। সেই গ্লাভস দিয়ে পোষ্যের গা থেকে ঝরতে থাকা এক্সট্রা লোম ঝেড়ে ফেলতে পারেন।এতে লোম উড়ে এদিকওদিক যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।
৬) পোষ্যকে অনেকেই জামাকাপড় পরাতে পছন্দ করেন না। জামাকাপড় পরালে একদিকে যেমন পোষ্যকে দেখতে সুন্দর লাগে সেরকম পোষ্যের কিছু লোম পোশাকেই আটকে যায়। ফলে রাস্তাঘাটে পোষ্যের লোম ওঠা নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয় না।
৭) বাড়িতে ভ্যাকুয়াম ক্লিনার ব্যবহারের চেষ্টা করুন। অনেক সময় ঘরের কোনায় কোনায় পোষ্যের লোম চলে গিয়ে থাকে যা ঘর পরিষ্কারের সময় চোখে পড়ে না। এছাড়াও কার্পেট, সোফা প্রভৃতি থেকে পোষ্যদের লোম বা ড্যান্ডার পরিষ্কার করা মোটেও সহজ কাজ নয়। সেই ক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে একমাত্র ভালো মানের ভ্যাকুয়াম ক্লিনার। প্রতিসপ্তাহে একদিন করে আসবাবপত্র থেকে শুরু করে কার্পেট, সোফা সব পরিষ্কার করুন।
এইসব পদ্ধতি ব্যবহার করুন আর নিশ্চিন্তে পোষ্য নিয়ে বাড়িতে থাকুন। যদি ডাস্ট অ্যালার্জির সমস্যা খুব বেশি হয়ে যায় তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন।