মানব শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ হলো কিডনি বা বৃক্ক। মানুষের শরীরের সমস্ত টক্সিনজাতীয় পদার্থের নিষ্কাশনের দায়িত্বই রয়েছে তার কাঁধে। কিন্তু পরিবেশগত কারণেই হোক বা অন্য কোনো কারণে অসুস্থ হতে পারে এই অঙ্গটিও। এই অঙ্গটি অসুস্থ হয়ে পড়লে কিন্তু বিপদ অনিবার্য। কারণ কিডনি বিকল না হলেও যদি সামান্য অসুবিধাও সৃষ্টি হয় তাহলে তার রক্ত পরিশোধনকারী ক্ষমতা হ্রাস পেতে থাকে। রক্ত পরিশ্রুত না হওয়ার ফলে শরীরে নানা রোগের আগমন ঘটতে শুরু করে।
নানা কারণেই কিডনিতে সমস্যা হতে পারে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে এই রোগকে 'সাইলেন্ট কিলার' বলা হয়ে থাকে। সারা ভারতে এমনকি পুরো পৃথিবীতেই আজকাল কিডনি রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। সমীক্ষায় দেখা গেছে, পুরুষদের তুলনায় মহিলারা এই রোগে বেশি আক্রান্ত হয়েছে। গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, দিনের পর দিন কিডনির সমস্যায় জর্জরিত মানুষের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। তাই সব মানুষেরই উচিৎ এই বিষয়ে কিছু সাবধানতা অবলম্বন করা।
কিডনির খেয়াল রাখতে গেলে, প্রথমেই যেইসব কাজ আপনাকে করতে হবে সেগুলি হলো-
১) প্রতিদিন নিয়ম করে ২ থেকে ৩ লিটার জল খাওয়া উচিত। তবে শরীরে আগে থেকে যদি অন্য রোগ বাসা বেঁধে থাকে তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। অনেক রোগের ক্ষেত্রে কিন্তু রোগীদের পরিমিত জল পান করতে হয়। যেমন, হৃদরোগ, বিশেষ কিছু টাইপের ক্যান্সার প্রভৃতির ক্ষেত্রে চিকিৎসকেরা মেপে জল খাওয়ার পরামর্শ দেন।
২) মূত্র চেপে রাখা কখনোই কাম্য নয়। বেশিক্ষন মূত্র চেপে রাখার ফলে মূত্রথলিতে সংক্রমণ ঘটার আশংকা থাকে।
৩) চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনজাতীয় পেন কিলার খাওয়া উচিৎ নয়। পেন কিলার অতিরিক্ত পরিমানে খেলে কিডনির সমস্যা অনিবার্য।
৪) কিডনি সুস্থ রাখতে গেলে উচিৎ রক্তের শর্করার পরিমান নিয়ন্ত্রণ করা।
৫) উচ্চ রক্তচাপ কিডনির জন্য খুব খারাপ। তাই রক্তচাপও নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করুন| বয়স ৪০ পেরোনোর পর থেকেই নিয়মিত সুগার এবং প্রেসার চেক করানো উচিত|
৬) অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধির ফলে বৃক্কের কার্যকারিতা হ্রাস পেতে থাকে তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করুন|
এছাড়াও শরীরে যদি অন্য কোনো রোগ থেকে থাকে অর্থাৎ এরই সাথে যদি আপনার ডায়াবেটিস হয় বা আপনি হাইপারটেনশনের শিকার হয়ে থাকেন, বা বংশে কারোর যদি কিডনির রোগ হয়ে গিয়ে থাকে তাহলে প্রথম থেকেই সাবধান থাকা উচিত। এসব ক্ষেত্রে কিডনির রোগের আশঙ্কা অন্য মানুষের থেকে বেশি হয়।