নিজের ঘরবাড়ি সুন্দর করে সাজাতে কে না ভালোবাসে? সকলেই চান তাদের ঘর যেন একদম পরিপাটি করে সাজানো থাকে। তার জন্য ঘর সাজানোর জিনিসও প্রচুর পরিমানে কেনা হয়ে থাকে। কিন্তু বাড়ির নিরাপত্তার দিকটি কি সবসময় ভাবা হয়? অনেকসময়ই আমরা অন্দরসজ্জার দিকে বেশি নজর দিয়ে থাকি সেই ক্ষেত্রে খেয়ালই থাকে না নিরাপত্তার দিকটি। কিন্তু সম্প্রতি ঘটে যাওয়া নানা ঘটনার পর এই বিষয়ে নজর দিচ্ছে স্বয়ং প্রশাসনও। বাড়ির কাছাকাছি কোথাও গেলেও বাড়ির নিরাপত্তার দিকটির উপর ভালো করে খেয়াল রাখার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছেন পুলিশ প্রশাসনও। চলুন আজ জেনে নিই, বাড়ির নিরাপত্তা রক্ষা করার কিছু সহজ নিয়ম.......
১) ঘরের মূল্যবান জিনিস থেকে শুরু করে বাড়ির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সাধারণত আলমারির লকারেই রাখা হয়। কিন্তু লকারে থাকা মানেই কি আপনার সেই দামি জিনিস সেফ? যদি ধরাও হয় লকারে থাকা জিনিস একেবারে সেফ সেক্ষেত্রে লকারের বাইরে যেসব জিনিস রয়েছে সেইসব জিনিসের নিরাপত্তার বিষয়টির উপর খেয়াল রাখা উচিত। মূল্যবান জিনিস কখনো ঘরের মধ্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখবেন না। লকারে জায়গা না থাকলে তা আলমারির মধ্যে রেখে আলমারি লক করে চাবি সঙ্গে করে নিয়ে যান।
২) বাড়ির নিরাপত্তার জন্য এখন সবচেয়ে বেশি প্রচলন হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরার। সিসিটিভি ক্যামেরার সাথে আজকাল ইন্টারনেট সংযোগ করার ব্যবস্থাও পাওয়া যাচ্ছে। সেই ক্ষেত্রে বাড়ির ক্যামেরার সাথে যদি স্মার্টফোন কানেক্ট করে নেওয়া যায় তাহলে বাড়ির বাইরে থাকলেও বাড়ির ভিতরে কি চলছে তার খেয়াল রাখা যায়।
৩) মূল্যবান কাগজপত্র যত্রতত্র ছড়িয়ে রাখবেন না। আজকাল বাজারে একধরণের মেটালিক বাক্স পাওয়া যায় যা খানিকটা আগেকার দিনের সিন্দুকের মতো দেখতে। চাইলে সেই জাতীয় কোনো বাক্স কিনে নিয়ে তাতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র রাখতে পারেন। বাক্সগুলি লক করার ব্যবস্থাও রয়েছে। গোপন কাগজপত্র তাতে রেখে, বাক্স লক করে তাকে ঘরের কোনো গোপন জায়গায় লুকিয়ে রেখে বেরোতে পারেন।
৪) বর্তমানে আধুনিক হচ্ছে প্রযুক্তি। বাড়ির নিরাপত্তা বাড়াতেও এসেছে অনেক নতুন প্রযুক্তি। তার মধ্যে একটি হলো, আই কন্টাক্ট পেলে তবেই খুলবে দরজা। ইতিমধ্যে এই প্রযুক্তি চলে এসেছে আমাদের রাজ্যেও। এই প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে তালা ভেঙে ঘরে দুষ্কৃতী প্রবেশের ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা একদমই নেই। সেই ক্ষেত্রে দরজা ভাঙার প্রশ্ন চলে আসবে যা অত্যধিক শ্রমের কাজ বলেই বিবেচিত।
৫) বাড়ির তৈরীর সময় থেকেই বাড়ির নিরাপত্তার কথা মাথায় রাখুন। বাড়ির দরজা এবং জানলা তৈরী করুন মোটা ও ভারী কাঠ দিয়ে।
৬) বাড়ির নিরাপত্তার অর্থ শুধু চুরি বা ডাকাতি থেকে নিজের বাড়িকে বাঁচানো নয়। অনেকসময় বাড়ির লোকের অবর্তমানে অনেকরকম দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। যেমন ধরুন,আপনি হয়তো বাইরে গেছেন কাজে সেই সময় শর্ট সার্কিট হয়ে বাড়িতে আগুন লেগে গেল। খবর পেয়ে যখন বাড়ি ফিরলেন তখন দেখলেন ততক্ষনে সব শেষ। আগে থেকে এই বিষয়টির উপর নজর দিলে এরকম ঘটনা কম ফেস করতে হতে পারে। আগে থেকে চেক করিয়ে রাখুন বাড়ির আর্থিং ঠিক আছে কিনা।
৭) রান্নাঘর ছেড়ে বেরোনোর আগে ভালো করে চেক করে নিন যে গ্যাসের সুইচ অফ করেছেন কিনা। পারলে সিলিন্ডারের নবও বন্ধ করে তবেই ঘর থেকে বেরোন। শুধু গ্যাসের সুইচ নয়, বাড়ি থেকে বেরোনোর আগে আলো, পাখা, টিভি, এসি সব সুইচ অফ করে তবেই বাড়ি থেকে বেরোন।
৮) দরজায় তালা লাগাতে হলে ভারী ও দামি তালা ব্যবহার করুন। দরজায় ইন্টারলক লাগানোর ব্যবস্থা করুন।
৯) বাড়ির মেন সুইচ যাতে হাতের কাছেই থাকে সেইদিকে খেয়াল রাখুন। যাতে বিপর্যয়ের সময় সহজেই মেন সুইচের কাছে পৌঁছানো যায়।
১০) বাড়ির দেখাশোনার দায়িত্ব কাউকে দিয়ে গেলে তার সম্পর্কে আগে থেকে ভালো করে সব জেনে নিন। তার সচিত্র পরিচয়পত্র দিয়ে লোকাল পুলিশ স্টেশনে আগে থেকেই তার ব্যাপারে জানিয়ে রাখুন।
জানিয়ে দেওয়া হল, বাড়ির নিরাপত্তা রক্ষা করার কিছু অপরিহার্য স্টেপ। এই স্টেপ মেনে চলুন আর নিজের বাড়িকে রাখুন সুরক্ষিত।