অতীতে একটা সময় ছিল যখন সকলে তাদের প্রিয় মানুষটির সাথে কথা বলার জন্য তাদের উদ্দেশ্যে চিঠি লিখতো। কিন্তু যুগের পরিবর্তনের সাথে সাথে বিলুপ্ত হয়েছে চিঠি। তার জায়গায় এসেছে বিভিন্ন সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটের নানা চ্যাট অপশন। চিঠির বদলে এসেছে ইমেল। তাই মানুষের সাথে যোগাযোগ এখন অনেকটাই সহজ হয়েছে। হাতে স্মার্টফোন থাকলেই কেল্লাফতে। আর তাতে দরকার শুধু ইন্টারনেট কানেকশন। কিন্তু কিছু কিছু সময় নেটের স্পিড নিয়ে বেশ সমস্যায় পড়তে হয় সকলকেই। নেটের মাধ্যমেই আজকাল অফিসিয়াল কাজও করা হয়। সেইসময় নেটের স্পিড কমে গেলে সমস্যা হয়। অনেকসময় বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেওয়ার মাঝে নেট চলে গেলে যে রাগ হয় সেই রাগ গিয়ে পড়ে সার্ভিস প্রোভাইডারের উপরে। কিন্তু সবক্ষেত্রে আবার তাদের দোষ থাকে না। কিছু ক্ষেত্রে আমাদের ফোনের সেটিং-এর কিছু সমস্যার কারণে নেট ঠিকমতো কাজ করে না। চলুন আজ দেখে নিই কি কি কারণে নেটের স্পিড কমে যেতে পারে। আর জেনে নিই নেটের স্পিড কিভাবে বাড়ানো যায়..............
১) বদ্ধ ঘরে নেটওয়ার্ক পৌঁছাতে পারে না। সেই ক্ষেত্রে নেটের স্পিড কমে যেতে পারে। সেই ক্ষেত্রে জানলা দরজা খোলা রাখার চেষ্টা করুন। জানলা দরজা খোলার উপায় না থাকলে খুব প্রয়োজনীয় কাজের সময় খোলা জায়গায় যাওয়ার চেষ্টা করুন। খোলা জায়গায় সিগনালের স্ট্রেংথ বাড়ে।
২) আপনি যদি ওয়াইফাই ব্যবহার করেন তাহলে খেয়াল রাখুন ওয়াইফাইয়ের রাউটারের উপর। রাউটারটিতে যাতে লেটেস্ট ফার্মওয়ার থাকে সেইদিকে খেয়াল রাখুন। রাউটারের ফ্রিকোয়েন্সি ২.৪ গিগাহার্টজ এর জায়গায় ৫ গিগাহার্টজ করে রাখুন। ফ্রিকোয়েন্সি বাড়লে ইন্টারনেটের স্পিড বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ইন্টারনেটে বাধা আসার সম্ভাবনাও কমে যাবে।
৩) ওয়াইফাই ব্যবহার করলে রাউটার কখনো দেওয়ালের কাছে রাখবেন না। বদ্ধ ঘর যেমন নেটের স্পিড কমিয়ে দেয় সেরকমই দেওয়ালে সিগন্যাল বাধাপ্রাপ্ত হলে নেটের স্পিড কমে যায়। তাই রাউটার সবসময় ফাঁকা জায়গায় রাখার চেষ্টা করুন।
৪) অনেকদিনের পুরোনো ওয়াইফাই ব্যবহার করলে সেটি বদলে নতুন নেওয়ার চেষ্টা করুন। কারণ পুরোনো রাউটার আগেকার কনফিগারেশন নিয়ে কাজ করে। দিনের পর দিন উন্নত হচ্ছে প্রযুক্তি। সেই ক্ষেত্রে পুরোনো ওয়াইফাই থেকে নতুনের মতন স্পিড পাওয়া সমস্যার হতে পারে।
৫) বাড়িতে বেশির ভাগ মানুষই ওয়াইফাই ব্যবহার করেন। সেই ক্ষেত্রে অ্যান্টেনাযুক্ত ওয়াইফাই নিলে সিগনাল বাধা পাওয়ার সমস্যা মিটতে পারে।
৬) অনেকসময় ফোনের মধ্যে জমে থাকা অব্যবহৃত ফাইলস বা অ্যাপ এর ফলে নেটের স্পিড কমে যেতে পারে। তাই ফোনের যেসব ফাইলস ব্যবহার করা হয় না সেগুলি ডিলিট করে দিন। মোবাইল এ স্পেসের প্রব্লেম হলে তার এফেক্ট নেটের স্পিডের উপরেও পড়ে।
৭) ফোনের সেটিং অপশনে মোবাইল ডেটা লিমিট করার একটি অপশন থাকে। সেটি সবসময় হাইয়েস্ট করে রাখুন। অনেকসময় ডেটা ব্যবহারের লিমিট ক্রস করে দিলে নেটের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৮) ২জি স্পেকট্রাম-এর থেকে ৩জি বা ৪জি তে অনেক বেশি স্পিড পাওয়া যায় তা সকলেরই জানা। তাই ফোনের মোবাইল ডেটা অপশনে গিয়ে চেক করে নিন যে নেটওয়ার্ক মোড কিসে রাখা আছে। যদি ২জি তে থাকে তাহলে সিম অনুযায়ী তাকে ৩জি বা ৪জি করে নিন।
নেটের সমস্যা হলে সত্যিই সমস্যায় পড়তে হয় সকলকেই। তাই নেটের স্পিড কম আছে মনে হলে সার্ভিস প্রোভাইডারকে দোষ দেওয়ার আগে নিজের মোবাইলের সেটিংগুলি একবার ভালো করে চেক করে নিন। উপরোক্ত পদ্ধতিগুলি ফলো করুন আর দেখুন স্পিড বাড়ছে কিনা। তারপরেও যদি সমস্যা থেকে যায় তাহলে অবশ্যই সার্ভিস প্রোভাইডারের সাথে যোগাযোগ করুন।