বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বন। আর সেই পার্বনের মধ্যে সবচেয়ে বড় পার্বন নিঃসন্দেহে দুর্গাপূজা। সেই দুর্গাপূজা আর মাত্র এক মাসের অপেক্ষা। ইতিমধ্যেই সকলে কেনাকাটা শুরু করে দিয়েছেন। বাঙালির এই শ্রেষ্ঠ উৎসবে নিজেকে সুন্দর দেখাতে চান সকলেই। আর সেই তাগিদেই নিয়মিত পার্লার যাওয়া থেকে শুরু করে ত্বকের যত্ন -সবটাই শুরু হয়ে গিয়েছে। আর যেকোনো অনুষ্ঠানের আগে আজকাল মেয়েরা চায় সিল্কি-স্মুথ-স্ট্রেট চুল। পার্লারে গিয়ে পার্মানেন্ট স্মুথনিং করিয়ে নিলে তো কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু তাতে অত্যধিক কেমিক্যালের ব্যবহারে চুলের দফারফা। তাই পার্মানেন্ট স্মুথনিং অনেকেই করতে চান না। কিন্তু পার্মানেন্ট স্মুথনিং ছাড়া চুল সিল্কি স্মুথ স্ট্রেট করা কি সম্ভব, কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?
পার্লারে না গিয়ে ঘরে বসেই কিভাবে পাবেন সিল্কি স্মুথ এবং একেবারে স্ট্রেট চুল? তার জন্য মাত্র ৫টি রুলস বেঁধে দিয়েছেন হেয়ার এক্সপার্টরা। আসুন জেনে নেওয়া যাক সেগুলি কী কী-
প্রথম রুল- শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার জেনে রাখা ভালো
কোনো শ্যাম্পুই চুল স্ট্রেট করতে পারে না। বিশেষ কিছু শ্যাম্পু আছে যেগুলির ব্যবহারে চুল স্ট্রেট না হলেও স্মুথ অবশ্যই হয়। হেয়ার এক্সপার্টরা জানাচ্ছেন, ভালো কোম্পানির শ্যাম্পুই ব্যবহার করা বেস্ট অপশন। শ্যাম্পু করে চুল ভালো করে ধোয়ার কথাও মাথায় রাখা আবশ্যক। শ্যাম্পুর রেসিডিউ স্ক্যাল্পে থেকে গেলে আর তার সাথে প্রতিদিনের দূষণের সংযোজনে চুলের যেমন ক্ষতি হতে পারে সেরকম চুলে খুব তাড়াতাড়ি আঁঠালোভাব আসতে পারে। শ্যাম্পুর পরের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় স্টেপটি হলো কন্ডিশনিং করা। হেয়ার এক্সপার্টদের মতে, চুলের স্বাস্থ্য ধরে রাখতে কন্ডিশনারের জুড়ি মেলা ভার। ভালো কম্পানির কন্ডিশনার ব্যবহার করা উচিৎ। এরপর বড় দাঁতের চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়ে নিতে হবে।
শ্যাম্পু করার পর ড্রাই চুল যাদের তাদের চুলে জট পার সম্ভাবনা দেখা যায়। এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, চুল মোছার জন্য নরম টাওয়েল ব্যবহার করা উচিত। চুল মোছার সময় বেশি জোরে ঘষা উচিৎ নয়। এতে চুল ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা যায়।
দ্বিতীয় রুল- চুল শুকানো
সিল্কি স্মুথ চুল পাওয়ার জন্য স্ট্রেটনারের ব্যবহার করতেই হয়। তবে চুলে স্ট্রেটনার ব্যবহারের আগে খেয়াল রাখা উচিত চুল যেন একেবারে শুকনো হয়। চুল যদি ড্রায়ার দিয়ে শুকাতে চান তাহলে ভেজা চুলে হেয়ার সিরাম লাগিয়ে নিয়ে তারপর চ্যাপ্টা মুখযুক্ত নজেল ব্যবহার করে চুলে ব্লো ড্রায়িং করা উচিত। চ্যাপ্টা নজেলযুক্ত ড্রায়ারের ব্যবহারে চুল অনেকটাই স্ট্রেট হয়ে আসে।
তৃতীয় রুল- স্ট্রেটনারের ব্যবহার
চুল সম্পূর্ণভাবে শুকিয়ে গেলে তারপর চুলে হিট প্রোটেস্ট্যান্ট লাগিয়ে নিন ভালো করে। এরপর চুল প্রথমে চারটি ভাগে ভাগ করে নিন। প্রতিটি ভাগ উপর থেকে নিচের দিকে ভালো করে আঁচড়ে নিয়ে তারপর ফ্ল্যাট আয়রন বা স্ট্রেটনার দিয়ে ভালো করে প্রেস করে নিন। স্ট্রেটনারের তাপমাত্রা সবচেয়ে কমে সেট করে নিন। এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ফ্ল্যাট আয়রন কেনার সময় দেখে নেওয়া উচিৎ যে সেই প্রোডাক্টটিতে সিরামিকের কোটিন দেওয়া আছে কিনা। সিরামিক তাপনিরোধক হওয়ার কারণে এতে চুলের ক্ষতি কম হয়।
চতুর্থ রুল- ময়েশ্চারাইজারের ব্যবহার
চুলে হিট দিয়ে স্ট্রেট করার ফলে কিছুক্ষন পরে চুল আবার আগের অবস্থায় ফিরে আসতে পারে। চুলের আগের অবস্থায় ফিরে আসা আটকানোর জন্য বাজারে পাওয়া যায় নানা প্রোডাক্ট। চুলে অতিরিক্ত হিট দেওয়ার ফলে চুলের ক্ষতি হতে পারে তা বিশেষজ্ঞরা আগেই জানিয়েছেন। তাই স্ট্রেটনিংয়ের আগে ও পরে হিট প্রটেক্ট্যান্ট ব্যবহার করা একান্ত আবশ্যক। চুলে স্ট্রেটনার ব্যবহার করলে অনেকের চুল ড্রাই হয়ে যায়। তারা ভালো করে হেয়ার ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারেন। কিংবা বাড়িতে যদি লিভ ইন কন্ডিশনার থাকে সেটিও লাগাতে পারেন।
পঞ্চম রুল- হেয়ার সেটিং স্প্রে-এর ব্যবহার
স্ক্যাল্পে যেহেতু স্ট্রেটনার ব্যবহার করা যায় না সেক্ষেত্রে সামনে সামনের ছোট ছোট চুলগুলি স্ট্রেট হয় না। সেই চুল বাইরে গিয়ে সাজের দফারফা করে দিতে পারে। সেই ক্ষেত্রে বিউটিশিয়ানেরা জানাচ্ছেন, হেয়ার সেটিং স্প্রে ব্যবহার করে সেই অবাধ্য চুলকে বশে আনা যায়। একটি টুথব্রাশের মধ্যে হালকা করে হেয়ার সেটিং স্প্রে লাগিয়ে নিন। এবার সেই ব্রাশ দিয়ে মাথার সামনের দিকটি হালকা করে আঁচড়ে নিন।
ব্যাস আপনি সম্পূর্ণ রেডি মখমলের মতো চুলের জাদুতে সকলকে মোহিত করার জন্য।