কৃমির সমস্যায় ভোগেননি এরকম মানুষ খুঁজে পাওয়া দুস্কর। শিশুকালে প্রায় সমস্ত মানুষই কৃমির আক্রমনের শিকার হয়ে থাকেন। শুধু শিশুকালে কেন, বেশ বড় বয়সেও অনেকে কৃমির সমস্যায় ভোগেন। বলা হয়, অতিরিক্ত মিষ্টিজাতীয় জিনিস খাওয়ার ফলে শরীরে বাসা বাঁধে এই পরজীবী। শরীরে বাসা বাঁধার পরেই শরীরের মধ্যে সৃষ্টি হয় নানা অসুবিধা। খিদে না পাওয়া, মাড়ি দিয়ে রক্তপাত, পেটে ব্যাথা এমনকি আমাশয় পর্যন্ত হতে পারে কৃমির প্রকোপে।
গবেষনায় দেখা গেছে, পৃথিবীর প্রায় পঁচাশি শতাংশ মানুষের শরীরেই কৃমি বসবাস করে। অল্প পরিমানে কৃমি শরীরে উপস্থিত থাকলে তারা খুব একটা অসুবিধার সৃষ্টি করে না। কিন্তু এদের সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই দেখা দিতে থাকে উপরোক্ত সমস্যাগুলি। বাজারে কৃমি নিধনের জন্য নানা ওষুধ উপলব্ধ হলেও বেশ কিছু ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করলে এবং খাদ্যাভাসে পরিবর্তন আনলেই মুক্তি পাওয়া যায় এই সমস্যা থেকে। আসুন, আজ জেনে নেওয়া যাক এই সমস্যা থেকে মুক্তির কিছু ঘরোয়া উপায়।
শরীর থেকে কৃমির বংশ ধ্বংস করতে রসুন খুবই উপকারি ভূমিকা পালন করে। রসুনের ব্যাকটেরিয়া বিরোধী এবং ফাংগাস বিরোধী ধর্মের কারণে এই জিনিসটি কৃমিকে সমূলে ধ্বংস করতে সক্ষম হয়। পুষ্টিবিজ্ঞানীদের কথানুযায়ী, রসুন একধরনের পরজীবীনাশক খাবার। কাঁচা রসুনে থাকা অ্যামাইনো অ্যাসিড, যা শরীরে থাকা কৃমি মারতে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিন সকালে খালি পেটে দুই কোয়া করে কাঁচা রসুন খেলে কৃমির সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
শরীর থেকে কৃমি দূর করতে আরও একটি জিনিস উপকার করে তা হল শশার দানা। শশা থেকে দানা বের করে শুকিয়ে গুঁড়ো করে নিয়ে প্রতিদিন সেই গুঁড়ো এক চামচ করে খেলে দ্রুত উপকার পাওয়া যায়।
প্রতিদিন দুটো করে কাঁচা লবঙ্গ চিবিয়ে খেলেও কৃমির সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। লবঙ্গের অনুজীবনাশক ধর্ম কৃমি মারতে সক্ষম। তাই নিয়ম করে লবঙ্গ খেলে দ্রুত সুফল মেলে।
প্রতিদিন খাবার খাওয়ার আধ ঘন্টা আগে অ্যাপল সিডার ভিনিগার পান করলে শরীরের ভিতর তৈরি হওয়া অ্যাসিডের পরিমান বেড়ে যায় যা প্রত্যক্ষভাবে শরীরের ভিতর বেড়ে ওঠা পরজীবী ধ্বংস করে শরীরকে সুস্থ রাখে।
কাঁচা হলুদের ঔষধি গুণের কথা সবার জানা। কাঁচা হলুদও কৃমিনাশক হিসেবে কাজ করে। কাঁচা হলুদ বেটে, তাকে শুকিয়ে, তারপর গুঁড়ো করে পরিস্কার একটি কৌটোতে রেখে দিন। প্রতিদিন হাফ কাপ ঈষৎ উষ্ণ গরম জলে সামান্য হলুদ গুঁড়ো ও নুন মিশিয়ে পান করুন। দ্রুত আরোগ্য লাভ করবেন।
কৃমির সমস্যা নতুন কোনো সমস্যা নয়। বিশেষ কোনো ক্ষতিও সাধন করে না। কিন্তু শরীরে কৃমির পরিমান বেড়ে গেলে তা অবশ্যই চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই শরীরে কৃমি বাসা বেঁধেছে বোঝার সাথে সাথেই এইসব ঘরোয়া টোটকা ব্যবহার করা শুরু করুন। তবে বেশি বাড়াবাড়ি হওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিৎ।