একদিকে কিছু মানুষজন রোজ জিমে দৌড়াচ্ছে ওজন কমানোর জন্য, অন্যদিকে কিছু মানুষ ব্যস্ত তাদের ওজন বাড়ানোর জন্য। ওজন কমানোর জন্য জিমে গিয়ে একটু শরীরচর্চায় যথেষ্ট। ওজন কমানোর ইচ্ছে থাকলেই বেশ খানিকটা ওজন কমানো কোনো ব্যাপার নয় অনেকের কাছেই। অন্যদিকে চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, ওজন কমানোর থেকে ওজন বাড়ানো বেশি কষ্টকর। যদি শীর্ণকায় শরীর অপুষ্টির কারণে হয়ে থাকে তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শমতো খাবারদাবার খেলেই মোটামুটি কাজ হাসিল হয়ে যায়। ওজন বাড়ানোর জন্য যেসব প্রয়োজনীয় স্টেপ ফলো করা উচিৎ তা হলো,
১) ওজন বাড়াতে সাহায্য করে আমন্ড ও কিশমিশজাতীয় ড্ৰাইফ্রুট।তাই রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে জলের মধ্যে কিছুটা আমন্ড এবং কিশমিশ ভিজিয়ে রাখুন।সকালে বাদাম ও কিশমিশগুলি ফুলে উঠলে তারপরেই খান।
২) ওজন বাড়াতে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করে সবুজ শাকসবজি। তাই ওজন বাড়াতে চাইলে খেতে হবে প্রচুর শাকসবজি। আম, কাঁঠাল, লিচু, কলা প্রভৃতি ফল স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। এছাড়া মিষ্টি কুমড়ো, মিষ্টি আলু, কাঁচকলা প্রভৃতিও ওজন বৃদ্ধির সহায়ক।
৩) যারা ওজন কমানোর চেষ্টা করছেন তাদের চিকিৎসকেরা পরামশ দেন অল্প পরিমান খাবার এক একবারে খাওয়ার জন্য। কিন্তু যারা ওজন বাড়ানোর চেষ্টা করছেন তাদের ক্ষেত্রে চিকিৎসকরা বলছেন, বার বার অল্প অল্প করে না খেয়ে একবারে একটু বেশি পরিমানে খেলে তাদের ওজন বৃদ্ধি তাড়াতাড়ি হতে পারে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, স্বাভাবিক খাবারের চার ভাগের এক ভাগ প্রতিদিন বাড়ানো গেলে ওজন বৃদ্ধি ভালোমতো হয়ে থাকে। প্রতিদিন একটু একটু করে খাবারের পরিমান বাড়ানো উচিৎ।
৪) অনেকেই মনে করেন বারবার খাবার খেলে ওজন বৃদ্ধি হয়তো তাড়াতাড়ি হয়ে থাকে।কিন্তু চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, বারবার অল্প অল্প খাওয়া মোটেই ওজন বৃদ্ধির সহায়ক নয়। তার থেকে দুপুরে ও রাতে খাওয়ার সময় পেট ভরে খাবার খাওয়া উচিৎ। বারবার খাওয়ার ফলে শরীরের মেটাবলিজম রেট বেড়ে যায় ফলে ওজন কমতে থাকে।
৫) ডুবো তেলে ভাজা খাবারে থাকে প্রচুর পরিমানে ফ্যাট। তাই ওজন যারা বৃদ্ধি করতে চাইছেন তারা ডুবো তেলে ভাজা খাবার বেশি খাওয়ার চেষ্টা করুন। অবশ্য বাইরের খাবার এড়িয়েই চলবেন নাহলে ওজন হয়তো বাড়বে কিন্তু শরীরের মধ্যে কোন রোগ এসে হানা দেবে তা হয়তো জানতেও পারবেন না।
৬) ওজন কমাতে চাওয়া মানুষজন যেমন রোজ জিমে যাওয়া প্রেফার করেন সেরকম ওজন বাড়াতে চাওয়া মানুষেরও জিমে যাওয়ার অভ্যেস করা উচিৎ। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, শুধু মোটা হলেই চলবে না। সঠিকভাবে জীবনযাপন করার জন্য প্রয়োজন সুগঠিত শরীর। আর তার জন্য জিমে গিয়ে হালকা ব্যায়াম থেকে শুরু করে শরীর চর্চা করা ফলদায়ক হতে পারে। ব্যায়াম বা শরীরচর্চার ফলে খাবার হজম তাড়াতাড়ি হয় ফলে বারবার খিদে পায়।
৭) ভাতের বদলে খান ফ্যানভাত।ভাতের ফ্যান অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ফেলে দেওয়া হয়।এর ফলে ভাতের মধ্যে উপস্থিত স্টার্চ সবটাই বাইরে চলে যায়।তাই চিকিৎসকেরাও জানাচ্ছেন, ভাত রান্না করার পর সেই ভাতের ফ্যান যদি খেতে পারেন তাহলে ওজন বৃদ্ধি নিয়ে চিন্তা করতেই হবে না।অল্প নুন ও লেবু মিশিয়ে হালকা গরম থাকাকালীনই খেয়ে নিন ভাতের মাড় বা ফ্যান।
৮) ওজন বৃদ্ধির জন্য উপকারী হলো দুধ ও মধু। তাই রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে এক গ্লাস গরম দুধের সাথে বেশ খানিকটা মধু মিশিয়ে খেলে উপকার পাবেনই পাবেন।
অনেকগুলি উপায় নিয়েই এখানে আলোচনা করা হলো। কিন্তু সবচেয়ে বড় কথা হলো খাবার কোনোভাবে স্কিপ করা উচিৎ নয়। খাবার স্কিপ করলে বাকি সময় আপনি যতখুশি বেশি খাবার খান না কেন ঐসময়ের খাবারের অভাব কিছুতেই পূরণ হয় না। তাই ব্রেকফাস্ট থেকে শুরু করে দুপুরের লাঞ্চ, সন্ধ্যেবেলার টিফিন এবং রাতের ডিনার সবগুলোই ভালো করে করা উচিৎ।