জামা থেকে দূর করুন স্যাঁতস্যাঁতে ভাব

গ্রীষ্মের দাবদাহের পর সামান্য স্বস্তি দিতে হাজির হয়েছে বর্ষা। কিন্তু বর্ষার আগমন যে সবক্ষেত্রে সুখের হয় তা কিন্তু নয়। কিছু ক্ষেত্রে তা অস্বস্তির কারণও হয়ে যায়। যেমন লম্বা চুল শুকাতে বেশি সময় লাগে। বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকার কারণে এই সময় জামা কাপড় শুকাতে গিয়েও বেগ পেতে হয় সকলকে। ঘরবাড়ি থেকে শুরু করে বিছানাপত্র সবকিছুতেই কিরকম একটা স্যাঁতস্যাঁতে ভাব বিরাজ করে এই সময়ে । এই স্যাঁতস্যাঁতে ভাব থেকে মুক্তির জন্য প্রায় প্রতিটি গৃহিণীর মাথার ঘাম পায়ে পড়ে। জামাকাপড় ঠিকমতো না শুকালে সেটা থেকে যেমন ঠান্ডা লাগার আশংকা থেকে যায় সেরকমই আবার সেই জামাকাপড় থেকে ড্যাম্প গন্ধ বেরোতে পারে। সেই জামা পরে রাস্তায় বেরোনো সেই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে বেশ অস্বস্তির কারণ হয়ে যায়। কিছু ক্ষেত্রে আমাদের মা কাকিমারা ইস্ত্রি করে সেই জামা শুকানোর ব্যবস্থা করে থাকেন বা ঘরের মধ্যে ফ্যান চালিয়ে সেই জামা শুকানোর ব্যবস্থা করেন। কিন্তু জামা শুকালেও তার মধ্যে একটা ড্যাম্পভাব থেকেই যায় আর তার সাথে অস্বস্তিকর ড্যাম্প গন্ধ! তাই বর্ষাকাল এলেই এই সমস্যাটিতে জেরবার হতে দেখা যায় নারীপুরুষ নির্বিশেষে সকলকেই| তাই চলুন আজ জেনে নিই কিভাবে মুক্তি মিলতে পারে এই স্যাঁতস্যাঁতে ভাব আর ড্যাম্প গন্ধ থেকে................. 

১) বর্ষাকালে বৃষ্টির জন্য বাইরে জামাকাপড় শুকানো যায় না। বাড়িতে যদি কোনো  শেডযুক্ত জায়গা যেখানে বৃষ্টির জল আসে না সেরকম জায়গায় জামাকাপড় মেলতে  পারেন।কিন্তু সবার বাড়িতে এই সুবিধা থাকে না।সেই ক্ষেত্রে ঘরের মধ্যেই দড়ি টাঙিয়ে জামাকাপড় মেলতে হয় অধিকাংশ বাড়িতে। সেই ক্ষেত্রে ফ্যানের একেবারে নিচেই জামাকাপড় মেলা গেলে শুকাতে কম সময় নেয়। বৃষ্টির ছাঁট আসার কারণে অনেকেই এই সময় ঘরের জানলাদরজা বন্ধ করে রাখেন। কিন্তু এই সময় জানলাদরজা অবশ্যই খোলা রাখা উচিৎ কারণ ঘরের মধ্যে দীঘক্ষন ধরে জামাকাপড় শুকানোর ফলে এই স্যাঁতস্যাঁতে ভাব ঘরের মধ্যেই থেকে যায়। আর স্যাঁতস্যাঁতে ঘরে জামাকাপড় শুকাতে আরও বেশি সময় লাগে। তাছাড়া স্যাঁতস্যাঁতে ঘরে থাকলে সর্দিকাশির সাথে নানা শারীরিক সমস্যাও দেখা দিতে পারে। 

২) এই সময় জামাকাপড় স্যাঁতস্যাঁতে থাকার ফলে এতে জীবাণু বা ছত্রাক হানা দিতে পারে। সেই ক্ষেত্রে জামাকাপড় থেকে জীবাণু দূর করা একান্তই উচিৎ তা না হলে ছত্রাকযুক্ত জামা কাপড় পরলে চর্মরোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। এছাড়াও সেই জীবাণুর হানার ফলে নানা শারীরিক সমস্যাও হতে পারে যেমন ত্বক লাল হয়ে যাওয়া থেকে শুরু করে ফুসকুড়ির সমস্যা সবকিছুই হতে পারে। তাই জামাকাপড় ছত্রাকমুক্ত করা প্রয়োজন। এর জন্য প্রথমেই খেয়াল করুন জামার কোনো অংশে কাদা লেগে আছে কিনা। যদি কোনো জায়গায় কাদা লেগে থাকে তাহলে সেই জায়গা আগে ভালো করে সাবান দিয়ে ধুয়ে নিন।তারপর পুরো জামা কেচে নিন। 

৩) এছাড়াও যেসব জামা ঘামে সম্পূর্ণ ভিজে গেছে সেরকম জামা খুলেই সঙ্গে সঙ্গে কাচবেন না। ঘামে ভেজা জামা ফ্যানের হাওয়ায় শুকিয়ে তারপরই কাচা উচিৎ। কাচার পরে সেই জামা ভালো কোনো জীবাণুনাশক তরল দিয়ে ধুয়ে নেওয়া উচিৎ। 

৩) জামা থেকে স্যাঁতস্যাঁতে ভাব দূর করার জন্য আগেকার দিনের পদ্ধতিই ব্যবহার করুন। জামাকাপড় অর্ধেক শুকিয়ে গেলে তা ইস্ত্রি করে নিন। এতে  জামাকাপড় থেকে স্যাঁতস্যাঁতে ভাব যেমন দূর হবে তেমন জীবাণুও ধ্বংস হবে। 

৪) বর্ষাকালে আলমারিতে জামাকাপড় বেশিক্ষণের জন্য রেখে দিলেও তাতে স্যাঁতস্যাঁতে  ভাব আসতে পারে।তাই বাড়িতে ইঁদুরের আমদানি না থাকলে কিছুক্ষনের জন্য আলমারির দরজা খোলা রাখার চেষ্টা করুন। 

এইসব পদ্ধতিতে জামাকাপড় থেকে স্যাঁতস্যাঁতে ভাব সহজেই দূর করা যায় আর জামাকাপড়ে বাসা বাঁধা ছত্রাক বা জীবাণুকেও এই পদ্ধতিতে দূর করা যায়। বর্ষাকাল আমাদের অনেকের কাছেই বেশ অপছন্দের একটি ঋতু।একে তো ঘ্যানঘ্যানে বৃষ্টি তার উপর জামাকাপড় শুকানোর অসুবিধা। কিন্তু সমস্যার সমাধান আমাদের হাতের কাছেই থাকে শুধু সেগুলি একটু জেনে নিতে হয়।তাই আজ আপনারা জেনে গেলেন বর্ষাকালে জামাকাপড় থেকে স্যাঁতস্যাঁতে ভাব দূর করার কিছু পদ্ধতির কথা। এইভাবেই এইসব পদ্ধতির ব্যবহার করুন আর বর্ষাকালে জামাকাপড় রাখুন একদম শুকনো আর জীবাণুমুক্ত।    

 
 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...