কয়েকদিন ধরেই কোনও কাজ মনে দিয়ে করতে অসুবিধা হচ্ছে। চোখের নিমেষে ভুল হয়ে যাচ্ছে ধরতে পারছেন না। মেজাজটাও তিরিক্ষি। কেউ কোনও কথা বললেই সঙ্গে সঙ্গে ক্ষেপে উঠছেন। সবটাই যেন বোতল বন্দি ঠান্ডা পানীয়ের মতো উপচে আসছে। কিন্তু কিছুতেই বুঝতে পারছেন না কেন এমন ঘটছে।
সব ঘটনার সূত্র কিন্তু জট পাকিয়ে আছে এক জায়গাতেই। যার উত্তর হল ‘স্ট্রেস’। মানে মানসিক চাপ। ঠান্ডা মাথায় যদি একটু ভাবেন দেখবেন দিনের ৯০ শতাংশ কাজ আপনি করছেন তার পারদের ওঠা পড়ার ওপর নির্ভর করে আপনার দিনের প্রতিটা ঘটনা। জীবন যদি অফিস বা কাজ কেন্দ্রিক হয়ে ওঠে তাহলে আস্তে আস্তে ঝাপসা হয়ে যায় বাকি চারপাশ। বাড়ি, চারপাশের মানুষ, বন্ধু বা আত্মীয়স্বজন। এক ধরনের বিচ্ছিন্নতা তৈরি হয়ে যায় আপনার অজান্তেই। সেভাবেই সংঘাত তৈরি হয়। দিনের পর দিন জমে থাকা ক্লান্তি সেই সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে তোলে। তখন সামান্য থেকে সামান্য ঘটনাকে কেন্দ্র করেও মেজাজ বশ মানে না। তৈরি হয় উত্তেজনা।
রাগ সবার মধ্যেই কম বেশি থাকে। কিন্তু তা যদি মাত্রা ছাড়া হয় তাহলে কিন্তু সচেতনতার প্রয়োজন আছে।
প্রথমেই দরকার স্ট্রেস এর কারণ বা সূত্রটাকে খুঁজে পাওয়া জরুরি। কাজের চাপ থেকে সাময়িক বিরতি বা ছুটির অবকাশ বদলে দিতে পারে পরিস্থিতি।
কিন্তু রাগ যদি প্রকৃতিগতভাবে মাত্রা ছাড়া হয় তাহলে অন্য ভাবে ভাবতে হবে।
যে জায়গায় রাগের ঘটনা ঘটেছে বা বিরক্তি উৎপাদন হচ্ছে সেখান থেকে সরে যাওয়া জরুরি।
যে ব্যক্তির প্রতি রাগ তৈরি হয়েছে তাকেও কিছু সময়ের জন্য এড়িয়ে যাওয়া দরকার।
রাগ বিপদসীমায় পৌঁছাবার পরিস্থিতি তৈরি হলে অন্য বিষয়ে মন দিন।
বই পড়ুন, গান শুনুন, টিভি দেখুন বা ভাবনাকে একেবারে অন্য জায়গায় নিয়ে যান।
জিম বা রান্নাঘরে মন দিতে পারেন। যদি ছবি আঁকার অভ্যাস থাকে তাহলে রঙ তুলি টেনে নিন। রাগ কমাতে এর চেয়ে ভালো বন্ধু আর কিছু হয় না।
সবচেয়ে ভালো উপায় হল নিয়মিত মেডিটেশন। এতে শরীরের অন্য উপকারের সঙ্গে সঙ্গে রাগ নিয়ন্ত্রণও হয়।
এসবেও যদি না রাগ কমে তাহলে মনোবিদের পরামর্শ নিতে পারেন। বর্তমানে অনলাইনেও রাগ কমানোর ক্লাস হয়। ওয়ার্কশপ করেন বিভিন্ন ব্যক্তিত্বরা। এই ধরনের সেশনে যোগ দিয়ে ফল পেয়েছেন অনেক মানুষ। আপনিও দেখতে পারেন।