বর্ষায় বাঁচুন ফাঙ্গাল ইনফেকশন থেকে

বর্ষাকাল এসে গেছে আর বর্ষা মানেই বৃষ্টি। আর বৃষ্টি মানেই জল, কাদায় নাজেহাল অবস্থা। কাজে বা স্কুলকলেজে যাওয়ার সূত্রে রাস্তায় জমা জল পাড়িয়ে যেতেই হয়। তাছাড়া গাড়ি পাশ দিয়ে গেলে তো আর রক্ষা নেই। আপাদমস্তক ভিজিয়ে দিয়ে চলে যাবে। এমন অবস্থায় সর্দিকাশি একজন মানুষের যেমন সঙ্গী হতে পরে, সেরকমই সঙ্গী হতে পারে কিন্তু ফাঙ্গাল ইনফেকশনও। বেশিরভাগ সময়ে পা ভেজা থাকার কারণে এইসময় ইনফেকশনের সম্ভাবনা বেশিমাত্রায় সৃষ্টি হয়। এছাড়াও এই সময় জামাকাপড় শুকনো করা বেশ কষ্টসাধ্য ব্যাপার। ভেজা জামা গায়ে শুকানোর অর্থ ফাঙ্গাল ইনফেকশনকে নিমন্ত্রণ করে নিয়ে আসা। এই সময় ভাইরাল জ্বরের হাত থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য নানা সতর্কতা অবলম্বন করা হয়ে থাকে। কিন্তু ফাঙ্গাল ইনফেকশনের থেকে মুক্তির পথ খুঁজে পাওয়া এই বর্ষাকালে এতটা সহজ নয়। এর জন্য বেশ কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়। চলুন আজ আমরা সেইসব নিয়মগুলি জেনে নিই.......

১) এই সময় যতটা সম্ভব ঢাকা দেওয়া জুতো পরার অভ্যেস করুন। এর ফলে রাস্তার কাদা মিশ্রিত জল পায়ে লাগার সম্ভাবনা কমে যাবে। বৃষ্টিতে জুতো যদি নাও ভেজে তাহলেও সুযোগ পেলে অবশ্যই  জুতো খুলে রাখুন নাহলে ঘাম বসেই পায়ে ফাঙ্গাল ইনফেকশন হতে পারে। বৃষ্টিতে জুতো যদি ভিজে যায় তাহলে তা সম্পূর্ণ না শুকোনো পর্যন্ত না পরাটাই ভালো। ভেজা জুতো বেশিক্ষন পরে থাকলে সেই জায়গায় ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

২) বর্ষায় জামাকাপড় শুকোনো কষ্টকর ব্যাপার হয়ে যায়। তাই এই সময় সঙ্গে এক্সট্রা জামাকাপড় ক্যারি করুন।গন্তব্যে পৌঁছে যাতে ভেজা জামা বদলে নেওয়া যায় সেই দিকে খেয়াল রাখুন ভেজা জামা বেশিক্ষণ পরে থাকলে একদিকে যেমন সর্দিকাশি বা জ্বর হওয়ার সম্ভাবনা থাকে সেরকমই ফাঙ্গাল ইনফেকশনের সম্ভাবনাও বেড়ে যায়

৩) এইসময় অন্তর্বাস বাছার বিষয়েও সতর্ক হন। ভেজা বা স্যাঁতস্যাঁতে অন্তর্বাস যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন। শুধু অন্তর্বাস নয় এই ধরণের ভেজা জামাকাপড়ও এইসময় যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন।

৪) এই সময় এমন কোনো পোশাক পরবেন না যাতে ঘাম বেশি হয়। এই সময় বৃষ্টি হলেও গরমের কারণে ঘামও যথেষ্ট পরিমানে হয়ে থাকে। আর গ্রীষ্মে আর বর্ষায় ঘামের কারণে ঘাড়, কুঁচকি প্রভৃতি জায়গায় ফাঙ্গাল ইনফেকশন হতে পারে। এই সময় সুতির পোশাক পরার চেষ্টা করুন। সুতির পোশাক পরলে এই সময় ঘামও কম হয় আর বৃষ্টিতে ভিজে গেলেও তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যায়।

৫) বৃষ্টিতে ভিজে গেলে বাড়িতে এসে অবশ্যই সাবান দিয়ে স্নান করুন। শ্যাম্পু করার সুযোগ থাকলে করে নেবেন কারণ মাথায় বৃষ্টির জল পড়ার ফলে একদিকে যেমন মাথা যন্ত্রনা, জ্বর সর্দিকাশি প্রভৃতি হতে পারে সেরকম এর থেকে মাথায় ফাঙ্গাল ইনফেকশনও হতে পারে

৬) ত্বককে এই সময় যতটা সম্ভব আর্দ্র রাখার চেষ্টা করুন। এই সময় ত্বকে ভালো করে ক্রিম মেখে তবেই শোবেন। বৃষ্টির জল ত্বকে লাগার ফলে ত্বক একদিকে যেমন ড্রাই হয়ে যেতে পারে সেরকম নানা ত্বকের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এই সময় ত্বক ঠিক রাখতে টোনার, ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করুন। বর্ষায় ত্বক অতিরিক্ত সেনসিটিভ হয়ে থাকে তাই এই সময় ব্যবহারের জন্য অন্য ধরণের ফেসিয়াল কিট পাওয়া যায়। পছন্দের বিউটিশিয়ানের সাথে কথা বলে সেরা ফেসিয়াল কিটকিনে নিন কিংবা পার্লারে গিয়ে মাসে একবার করে ফেসিয়াল করান।

৭) বর্ষা শুরুর আগে একবার পারলে হেয়ার স্পা করিয়ে নিন। হেয়ার স্পা-এর অর্থ চুলে পর্যাপ্ত পরিমান পুষ্টি সরবরাহ করা। বর্ষায় চুল যেহেতু পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে তার জন্য বর্ষা শুরুর আগে থেকেই চুলের যত্ন করতে হয়। এই সময় দুইদিন অন্তর শ্যাম্পু করা গেলে ভালো ফল মেলে। বর্ষায় মাথায় জল জমে ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাই চুল বেশি ভিজলে হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার করে চুল শুকিয়ে নিন।

বর্ষায় ত্বক চুলের নানা সমস্যার সাথে সাথে শরীরের নানা সমস্যাও আমরা দেখতে পাই। এই সময় প্রতি ঘরে ঘরে জ্বর প্রায় লেগেই থাকে। তার সাথেই আবার রয়েছে এইসব ইনফেকশনের ভয়। এইসব সতর্কীকরণ বার্তা ভালো করে অনুসরণ করুন আর ইনফেকশনের পরিমান যদি বেড়ে গিয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন|

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...