দূর করুন অকাল ডিমেনশিয়া

অনেকসময়ই আমরা দেখি কিছু কিছু জিনিস কেমন যেন মনেই পড়ছে না। চেনা চেনা লাগলেও নামটা কেন জানি মনেই পড়ছে না। এইজাতীয় পরিস্থিতির সম্মুখীন আমরা অনেকসময়ই হয়ে থাকি। অনেকধরণের মানসিক রোগের মধ্যে একটি হল ডিমেনশিয়া। এই ডিমেনশিয়া হলো এমন একধরণের অসুখ যার ফলে ধীরে ধীরে স্মৃতি বিলুপ্ত হতে শুরু করে। বিলুপ্ত স্মৃতির ফলে অনেকসময় বহুবছর আগের কোনো ঘটনা মনে থেকে গেলেও মন থেকে মুছে যায় সকালের কোনো একটি ঘটনা। স্মৃতি একেবারে মুছেই যায়। আগে মনে করা হতো বয়স বৃদ্ধির কারণেই ক্রমশ মলিন হচ্ছে স্মৃতির পাতা। কিন্তু আধুনিক গবেষণার ফলে উঠে এসেছে অন্য তথ্য।

 

জানা গেছে, এইজাতীয় মানসিক রোগের জন্য দায়ী শুধুমাত্র বয়স নয়। সম্প্রতি নানা গবেষণা থেকে জানা গেছে, মানসিক রোগের মধ্যে অন্যতম অকাল ডিমেনশিয়া। জানা গেছে, পরিবেশ দূষণ মূলত বায়ুদূষণের কারণেই বর্তমানে হানা দিচ্ছে এই রোগ। স্মৃতির উপরে হালকা ধুলোর পর্দাই ঢাকা দিয়ে দিচ্ছে পুরোনো সমস্ত স্মৃতিকে

 

বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, বায়ুদূষণের ফলে শুধু সিওপিডি বা ফুসফুসের রোগই হচ্ছে না তার সাথে সাথে মস্তিষ্কের স্নায়ুতন্ত্রেও আঘাত হানছে। এর ফলে মাঝবয়স পেরোনোর আগে থেকেই স্মৃতির পাতা থেকে মুছে যেতে শুরু করছে নানা কথা। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, মানুষের গড় আয়ু কমিয়ে দেওয়ার পেছনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে বায়ুদূষণের। বায়ুদূষণের ফলে স্নায়ুর নিউরোনগুলি যেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তারা পরবর্তীকালে তথ্য দেওয়ানেওয়ায় অংশগ্রহণ করতেই পারছে না। তাই খুব কম বয়স থেকেই মানুষ ডিমেনশিয়ার শিকার হচ্ছেন।

 

চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, শুধুমাত্র শরীরচর্চা করলেই সমস্যার সমাধান হবে না। এর সাথে বদল আনতে হবে খাবার ও জীবনধারায়। মাছের তেল থেকে শুরু করে পাতে রাখতে হবে সবুজ শাকসবজি, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, ভিটামিন ডি প্রভৃতি। বাইরের অতিরিক্ত তেলমশলাযুক্ত খাবার পরিত্যাগ করাই উচিৎ। শরীরচর্চার কারণে মাংসপেশির সাথে সাথে স্নায়ুতন্রের কার্যকারিতা বাড়ায়। এ কারণে ডিমেনশিয়া আক্রান্ত ব্যক্তিদের শরীরচর্চার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। বিশেষজ্ঞরা এক্ষেত্রে জানাচ্ছেন, শুধু বাইরের ধুলোধোঁয়াই নয়, ঘরের ভেতরের ধুলোধোঁয়া থেকেও সমস্যা হতে পারে। ঘরে স্প্রে করা রুম ফ্রেশনার থেকেও শ্বাসকষ্টের সমস্যার সাথে সাথে মনোসিক সমস্যাও সৃষ্টি করতে পারে

 

বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, বেশ কিছু নিয়ম মেনে চললে এই সমস্যার থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। চলুন জেনে নেওয়া যাক সেইসব সাবধানবাণী বা নিয়মগুলি......................

 

১) কারখানাজাতীয় এলাকায় যতটা সম্ভব কম যাওয়ার চেষ্টা করুন। যদি প্রতিদিন এরকম কোনো জায়গায় যেতে হয় তাহলে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করুন।

২) প্রচুর পরিমানে গাছ লাগানোর চেষ্টা করুন। বৃক্ষরোপণ পরিবেশের পক্ষে যেমন ভালো তেমন একজন মানুষের শরীরের পক্ষেও খুব ভালো। গাছ লাগিয়ে বাড়ির অন্দরমহলও সাজাতে পারেন। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন বাড়িতে গাছ থাকলে শরীরের পাশাপাশি মনও ভালো থাকে।

৩) ঘরে ধুপ বা আগরবাতির ব্যবহার বেশি হলে সেই ঘরে এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করুন।এতে ধোঁয়া থেকে হওয়া শারীরিক সমস্যা কিছুটা হলেও কম হবে।

৪) ঘরে রুম ফ্রেশনার যতটা সম্ভব কম ব্যবহার করুন। তার জায়গায় নানা ধরণের সুগন্ধি ফুল ঘরে রাখতে পারেন।

৫) রান্নাঘর শোয়ার ঘরের সাথে কোনো কারণে অ্যাটাচ হলে রান্না করার সময় ঢাকা দিয়ে দিয়ে রান্না করুন।

বিশেষজ্ঞের এইসব পরামর্শ মেনে চলুন। দেখবেন অকাল ডিমেনশনের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া সহজ হবে।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...