বলুন তো আপনি কতটা খুশি? ঠিক-ঠাক পরিমাপ করে কি বলতে পারবেন? সেটা বোধহয় সম্ভব নয়। এই যে মানুষের আপাত ভাবনার বিষয়গুলি, যেমন সুখ, দুঃখ, খুশি, অখুশি-প্রভৃতির হিসেব কী আমরা জিনের মাধ্যমে পেতে পারি? হ্যাঁ, ঠিকই শুনছেন। আমাদের খুশির পরিমাপ করতে চলেছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক্স বিভাগের একদল অধ্যাপক এবং গবেষক ইতিমধ্যেই কয়েকশো মানুষের রক্ত সংগ্রহ করে তাদের খুশি পরিমাপ করতে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
আসলে মানুষ কিসে কতটা খুশি, তা আদৌ পরিবেশ-পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে, নাকি তাঁর জিনে প্রবাহিত রক্ত তাঁকে খুশি করছে বা দুঃখী করছে, সেটা নিয়ে বিস্তর ভেবেছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক্সের অধ্যাপক কৃষ্ণদাস নন্দগোপাল। সেই মতো বেশ কিছু বছর আগে তিনি কাজও শুরু করেন। কিন্তু গত বছর ডিসেম্বরে প্রয়াত হন কৃষ্ণদাস। তাঁর অসমাপ্ত কাজ এগিয়ে নিয়ে চলেছেন তাঁর সহকর্মী এবং ছাত্ররা। বিজ্ঞান শাখার ডিন মধুসূদন দাস, জেনেটিক্সের অধ্যাপক মৈনাক সেনগুপ্ত এবং দু'জন স্কলার তুষার পাইন ও মৃন্ময় ধাউরিয়া এগিয়ে এসেছেন কৃষ্ণদাসের কাজকে বাস্তব রূপ দিতে।
একই রকম পরিবেশে এক বা একাধিক মানুষের খুশির পরিমাণ কেন কম, বেশি হয় তা জানার চেষ্টার পাশাপাশি এই খুশির সঙ্গে জিনের সম্পর্ক কতটা রয়েছে, তা-ই খতিয়ে দেখবেন তাঁরা। যার জন্য রক্ত সংগ্রহ করা হচ্ছে-জানালেন মৈনাক। সাধারণত মনে করা হয় মানুষের সুখ-দুঃখ-খুশির সঙ্গে পরিবেশ বা প্রকৃতির যোগাযোগ যথেষ্ট। বিশ্ব সুখ সূচক পরিমাপেও একটি দেশের মানুষের গড় আয়ু, রোজগার, জিডিপি, পেশা নির্ণয়ের স্বাধীনতা, মহানুভবতাকে বিচার করেই দেশগুলির মান নির্ধারণ করা হয়। তবে মৈনাকদের এই কাজে সাফল্য পাওয়া গেলে খুশির সঙ্গে যে শারীরিক যোগসূত্র আছে, তা প্রমাণ হয়ে যাবে। এই ব্যাপারে যা একটি দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞ মহল।