তিনি এখন কার্তিকের প্রেমিকা। হাওড়া ব্রিজে হাওয়া খেতে খেতে চুটিয়ে ফ্লার্ট করেছেন কার্তিক আরিয়ানের সঙ্গে। প্রেমিকের বাইকে ঘুরে বেড়িয়েছেন চৈত্রের শহরে। ‘‘ভুলভুলাইয়া ৩’- এর জেরে এই বাঙালি কন্যেকে নিয়ে টলিউডে চর্চা এখন তুঙ্গে! হিন্দি রিয়্যালিটি শো ‘মিকা দি বোটি’-র মাধ্যমে পরিচিতি পান তিনি। ‘দারোগা মামুর কীর্তি’তে নায়িকা হিসেবে ইনিংস শুরু করেন। কলকাতার মেয়ের মুম্বইয়ে কেরিয়ার গড়ার জার্নি কেমন ছিল? চৈত্র সেলে তাঁর শপিং লিস্টে কী কী ছিল? বাংলা নববর্ষ কীভাবে কাটাবেন? ‘টলিকথা’র আড্ডায় অভিনেত্রী প্রান্তিকা দাস শেয়ার করলেন পয়লা বৈশাখের গপ্পো...
জিয়ো বাংলাঃ এইবছর কীভাবে পয়লা বৈশাখ উদযাপন করতে চলেছো তুমি?
প্রান্তিকা দাসঃ ছোটবেলার মতন এখন আর সেইভাবে প্ল্যান করা হয়না। নতুন জামাকাপড় পড়বো, পরিবারের সাথে সময় কাটাবো, যেটা এখন আর একদমই হয়ে ওঠে না। তাই বিশেষ দিনগুলোয় এটা একেবারে ‘মাস্ট’। উপহার দেওয়া-নেওয়া, সবাই মিলে একসাথে কোথাও ঘুরতে যাওয়া, সিনেমা দেখা, এগুলো হবেই।
জিয়ো বাংলাঃ বাঙালীদের কাছে পয়লা বৈশাখ মানেই শপিং করা বা চৈত্র সেলে জামাকাপড় কেনা। তোমার কী শপিং হয়েছে সেইভাবে?
প্রান্তিকা দাসঃ শপিং এখন তো আর সেইভাবে হয়না। কারণ সারাবছরই কিছু না কিছু কিনতেই থাকি। তো পয়লা বৈশাখের জন্য কিছু কেনা হয়েনি। কিন্তু মা কিছু না কিছু নিশ্চয়ই দেবে, কারণ প্রত্যেকবছরই কিছু না কিছু দেয়। খুব ছোটবেলায় দাদুর হাত ধরে যেতাম এই চৈত্র সেলের বাজারে। টেপ জামা কিনে দিত। বড় হতে ছিট কাপড়ের জামা দিত।
জিয়ো বাংলাঃ ছোটবেলার স্মৃতিগুলোর সাথে এখন অনেক কিছুই পালটে গেছে। মনে পড়ে সেই দিনগুলো। ফিরে দেখলে তুমি কী কী স্মৃতি দেখতে পাও?
প্রান্তিকা দাসঃ প্রচুর কিছু। সবথেকে বড় কথা হল যে আমরা হালখাতা করতে যাবই। দাদুর হাত ধরে যেতাম সোনার দোকানে। দাদুর কাছ থেকে কিছু না কিছু সোনার বানানো, মিষ্টির প্যাকেট, ক্যালেন্ডার বারিতে আসা। এইসব কিছুই স্মৃতি হিসেবে থেকেই যায়।
জিয়ো বাংলাঃ বাংলা ইন্ডাস্ট্রির পাশাপাশি দর্শকেরা তোমাকে বলিউড এবং সাউথ ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে দেখেছেন। নতুন বছরে দর্শকেরা পয়লা বৈশাখে কি কি উপহার পেতে চলেছেন তোমার থেকে?
প্রান্তিকা দাসঃ সাউথ ইন্ডাস্ট্রি থেকে ‘চেন্নাই বাজার’ আসছে। প্যান ইন্ডিয়া রিলিজ। এখন কিছুই বলবো না। হিন্দি ছবিও আসছে। তাছাড়া বাংলাতেও আসছে, বাংলাদেশেও আসছে। শাকিব খানের সাথে কথা চলেছে একটা কাজের। আর ওড়িয়া ছবিও আসছে।
জিয়ো বাংলাঃ এই যে অভিনেত্রী হওয়া স্বপ্ন, সেটা কী একেবারে ছোটবেলা থেকে?
প্রান্তিকা দাসঃ একদমই না। এটা সবাই জিজ্ঞেস করে। অভিনয়টা তৈরি হয়েছে স্কুলের শেষে অর্থাৎ ওই ক্লাস ১১-১২-এ। তারপর আমি ছিলাম সায়েন্স স্টুডেন্ট। চাপ ছিল। ওরকম চাপের সাথেই মডেলিং শুরু করে দিয়েছিলাম। একের পর এক কন্টেস্ট জিতছি বাবাকে লুকিয়ে। তবে, মা জানত। ভেবেছিলাম ইঞ্জিরিয়ারিং করবো। বিসিএ করি। কিন্তু মডেলিং শুরু করে দিয়েছিলাম। তাই এইদিকেই এগোলাম।
জিয়ো বাংলাঃ বাবা যখন জানতে পারলো, তখন কী বলেছিল?
প্রান্তিকা দাসঃ প্রচন্ড খুশি এবং গর্বিত হয়েছিল।
জিয়ো বাংলাঃ ‘মিকা দি বোটি’-তে সবাই দেখেছে তোমাকে। ওই শো-টা তোমার কতয়া জীবন পাল্টেছে বা কতটা প্রভাব ফেলেছে তোমার জীবনে?
প্রান্তিকা দাসঃ ডেফিনিটলি, একটা প্রভাব ফেলেছে। তার আগেও আমি কাজ করছিলাম। কিন্তু আমাদের একটা বড় ব্রেক দরকার ছিল। যেটা আমি বাংলা থেকে পাচ্ছিলাম না। অনেক চেষ্টা করেছি, অডিশন দিয়েছি। আমার মনে হয় এখানে ট্যালেন্টদের বেছে নেয়, যখন সে একটা বড় কাজ করে আসে। তার আগে সেইভাবে হয়েতো দেওয়া হয় না। বাংলার থেকে বেশি পাঞ্জাব কিংবা মুম্বাইতে বেশি মানুষ আমায় চেনে। হ্যাঁ ওই শো অনেক বদল এনেছে। এছাড়া ওই শোয়ের পর, আমার কাজ অনেক বেড়ে গেছে।
জিয়ো বাংলাঃ মানুষের ভালোবাসা তো পেয়েছো এবং পাবেই। কিন্তু মনের মানুষকে কী খুঁজে পেয়েছো?
প্রান্তিকা দাসঃ না। এখনও অব্দই পায়নি আর খুঁজছিও না। আর ইচ্ছে নেই।
জিয়ো বাংলাঃ শো’টা না জেতার কোনওরকম আক্ষেপ নেই?
প্রান্তিকা দাসঃ একদমই না। কারণ আমি যেই ছাপটা ছাড়তে চেয়েছি। সেটা ছেড়ে দিয়েছি। এখনও দর্শকেরা আমায় মনে রেখেছে। সেটাই আমি চেয়েছি।