মাইগ্রেন! এই রোগটির ভয়াবহতা বোঝানোর জন্য এর নামটাই যথেষ্ট। সারা দুনিয়ার মানুষ এই একটি রোগের থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে চলতে চান। কিন্তু সবসময় তা সম্ভব হয় না। অনেক সময়েই নানান মানুষকে নিজের ঘেরাটোপে এনে ফেলে এই রোগ। মাইগ্রেন এমন একটি রোগ যেখানে মাথার একপাশ থেকে যন্ত্রনা শুরু হয়ে পুরো মাথায় ছড়িয়ে পড়ে। অনেকসময় এই রোগটিকে 'আধ-কপালি' ব্যথা বলা হলেও আসলে এটিই হচ্ছে মাইগ্রেন। মাইগ্রেনের ব্যথা অনেকক্ষণ ধরে স্থায়ী হয় এবং খুবই কষ্টসাধ্য পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। যাদের মাইগ্রেন রয়েছে তারা মাথায় যন্ত্রণার সাথে বমি বমি ভাব, শরীরে অস্বস্তি, ঘাড়ে পিঠে ব্যথা প্রভৃতিও অনুভব করে থাকেন। মাইগ্রেনের ব্যথা সাধারণত ওষুধ না খেলে কমে না। একবার ব্যথা শুরু হলে বেশ কয়েকদিন না ভুগিয়ে যেতেই চায় না এই সমস্যাটি।
মাইগ্রেনের ব্যথা আবার বংশগত। তাই বংশে যদি একবার কারোর মাইগ্রেন হয়, তাহলে মোটামুটি পুরো পরিবারকেই এর জন্য ভুগতে হয়। একমাত্র মাইগ্রেনের ব্যাথা বংশ পরম্পরায় চলতে থাকে। তাই অনেকসময় যে মাথার যন্ত্রনা সৃষ্টি হয় তা মাইগ্রেনের ব্যাথা নাও হতে পারে। মাইগ্রেনের ফলে সৃষ্ট ব্যথা সাধারণত ওষুধ না খেলে কমে না। কিন্তু মাইগ্রেন তো বারবার হানা দিতে থাকে। কতবার পেইন কিলার খাবেন একজন মানুষ? পেইন কিলারের নিজস্ব পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে যা পরবর্তীকালে ধীরে ধীরে কিডনি থেকে শুরু করে হার্টের সমস্যাও সৃষ্টি করতে পারে। তাই এইজাতীয় ওষুধ বেশি ব্যবহার না করে আমাদের উচিত এমন কিছু ঘরোয়া পদ্ধতির ব্যবহার করা যা সাধারণত শরীরের কোনোপ্রকার ক্ষতি করে না। এমনই কিছু ঘরোয়া ব্যথা কমানোর কৌশল আজ আমরা এখানে আলোচনা করবো-
১) মাথার তীব্র যন্ত্রনা কমাতে পান করুন আদা চা। আদা ব্যথা কমাতে সাহায্য করার সাথে সাথে শরীরের অস্বস্তি কমাতেও সাহায্য করে।
২) গবেষণায় দেখা গেছে, আঙুরের রস মাইগ্রেনের পক্ষে উপকারী। মাইগ্রেনের অ্যাটাক হওয়ার সাথে সাথেই ২৫ গ্রাম আঙ্গুর সরাসরি খেয়ে নিন অথবা আঙুরের রস সামান্য জলের মধ্যে মিশিয়ে সেই জল পান করুন।
৩) চায়ের মতো কফিও মাইগ্রেনের ব্যথা কমানোর জন্য এক উল্লেখযোগ্য ভূমিকা গ্রহণ করে। তাই মাথা ধরার পর যদি এক কাপ কড়া কফি খাওয়া যায় তাহলে অনেকক্ষেত্রেই মাথা যন্ত্রনা কমে যায়।
৪) দারুচিনির গুঁড়োর সাথে জল মিশিয়ে মাথায় মাখতে পারলেও উপকার মেলে। এছাড়াও অ্যালোভেরা গাছ থেকে প্রাপ্ত অ্যালোভেরা জেল কপালে ঘষলেও উপকার পাওয়া যায়।
আমরা মাইগ্রেন নিয়ে নানারকম কথা বললাম বা বলা চলে নানা টোটকা আলোচনা করলাম। ব্যথা যখন অল্প থাকবে তখনই এগুলি ব্যবহার করে দেখবেন। মাইগ্রেন মোটেও অবহেলা করার জিনিস নয়। তাই বাড়াবাড়ি হওয়ার আগেই চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন।