সুয্যিমামার অত্যধিক তেজে জেরবার সকলে। ভরা জৈষ্ঠ্যের এই সময়ে বাইরে বেরোলেই মাথা থেকে পা পুরোটাই চাপা দিয়ে বেরোতে হচ্ছে। নাহলে সারা শরীর পুড়ে কালো হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। আমরা তো আমাদের মুখের ত্বকের দিকে বেশ খেয়াল রাখি। কিন্তু শরীরের বাকি যে সব অংশগুলি ইতিমধ্যেই ট্যানের সম্মুখীন হয়েছে তাদের কথা কি ভাবি? সকলেই চাই আমাদের মুখে যেন ট্যান না পড়ে। কিন্তু শুধু মুখকেই কি ট্যানের হাত থেকে বাঁচালে চলবে? তার সাথে সারা শরীরকেও তো বাঁচাতে হবে নাকি? যেমন বাইরে বেরোলে যদি ঢাকা জুতো না পরা হয় তাহলে পায়ে পড়ে ট্যান। ফুল হাত জামা না পড়লে যেইটুকু পর্যন্ত জামায় ঢাকা থাকে ততটুকু ফর্সা আর বাকি অংশে ট্যান। মুখের ট্যান তোলার জন্য বাজারে প্রচুর প্রোডাক্ট পাওয়া যায় কিন্তু পায়ের ট্যান তোলার জন্য খুব একটা বেশি প্রোডাক্ট বাজারে উপলব্ধ নয়। তাহলে কি করা যায়? কি উপায়ে তোলা যায় পায়ের ট্যান চলুন আজ জানা যাক.....
পায়ের ট্যান তোলার জন্য আপনি বাইরে থেকে বাজারচলতি কোনো প্রোডাক্ট যদি ব্যবহার না করতে চান তাহলে আপনি ব্যবহার করে দেখতে পারেন ঘরোয়া অথচ প্রাকৃতিক একটি প্যাক। যা খুব কম দিনের মধ্যেই কাজ দিতে বাধ্য। এর জন্য আপনার যেসব সামগ্রী লাগবে তা হলো,
১) গোলাপ জল- গোলাপ জল বাজারে কিনতে পাওয়া যায়। অনেক প্রসাধনী প্রস্তুতকারক সংস্থাই গোলাপজল বানিয়ে বিক্রি করে থাকেন। কিন্তু তাতে অনেকসময় আবার ক্ষতিকর রাসায়নিক মিশ্রিত থাকতে পারে। এর জায়গায় আপনি নিজেই ঘরে গোলাপ জল বানিয়ে নিতে পারেন। যেমন ফুল বাজার থেকে লাল গোলাপ কিনে এনে একটি পাত্রে জল দিয়ে রেখে দিন। দুদিন সে ঘরের শোভা বৃদ্ধি করুক। যেই ফুল একটু শুকাতে শুরু করবে তখনই পাপড়িগুলো খুলে নিন। গ্যাসে একটি পাত্রে জল ফুটতে দিন। জল ফুটে উঠলে সেই জলে পাপড়িগুলো দিয়ে ৫ মিনিটের জন্য চাপা দিয়ে দিন। ৫ মিনিট বাদে সেই জল থেকে পাপড়িগুলো ছেঁকে তুলে নিয়ে একটি পরিষ্কার শিশিতে ভরে রেখে দিন। প্রাকৃতিক গোলাপ জল তৈরী। এই জল আপনি ফেস প্যাকে ব্যবহার করতে পারবেন।
২) সি সল্ট- সি সল্ট হলো সমুদ্রের জলের বাষ্পীভবনের ফলে তৈরী হওয়া লবন। প্রসাধন থেকে শুরু করে খাবারের উপর মশলা হিসেবে ছড়ানোর জন্য এর ব্যবহার অধিক প্রসিদ্ধ। বাজারে যে লবন পাওয়া যায় তার থেকে এর গঠন সম্পূর্ণ আলাদা। বিভিন্ন কসমেটিক্স এর দোকানে সি সল্ট পাওয়া যায়।
৩) পুদিনা পাতা- পুদিনা পাতা নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। শরীর ঠান্ডা করার জন্য গ্রীষ্মে পুদিনার সরবতের ডিমান্ড অনেকটাই। সেই পুদিনা পাতাও প্রসাধনের কাজে ব্যবহার করা যায়। গ্রীষ্মে প্রতিটি সবজির দোকানে খুব সহজেই এই পাতা পেয়ে যাবেন।
৪) গোলাপের পাপড়ি- ফুল বাজার থেকে তাজা গোলাপ কিনে আনুন। আর তার পাপড়ি জলে ভিজিয়ে রেখে দিন। সেই পাপড়ি ব্যবহার করুন।
এছাড়াও এই পদ্ধতিতে আপনার যেসব জিনিস লাগবে তা হলো অলিভ অয়েল এবং ঠান্ডা জল। প্রথেমই আমরা জেনে নিই, কোন জিনিসটি কতটা পরিমানে লাগবে। এই প্যাক বা স্ক্র্যাবারটি বানানোর জন্য আপনার লাগবে এক চা চামচ গোলাপ জল, সি সল্ট হাফ কাপ, পুদিনা পাতা কুচি এক মুঠো, গোলাপের পাপড়ি কয়েকটা, আর এক চামচ অলিভ তেল এবং পরিমান মতো ঠান্ডা জল।
প্রথমেই সি সল্ট আর ঠান্ডা জল একটি পাত্রে মিশিয়ে নিন যাতে সি সল্ট সম্পূর্ণ গলে না যায়।এর মধ্যে পুদিনা পাতা কুচি এবং গোলাপের পাপড়ি ছড়িয়ে নিন। এই মিশ্রনের মধ্যে হাফ চামচ অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি যেন ঘন হয় সেইদিকে খেয়াল রাখবেন। এই স্ক্রাবার টি ব্যবহারের আগে পা ঠান্ডা জলে ডুবিয়ে রাখুন। তবে ৩ মিনিটের বেশি রাখবেন না। এর পর এই মিশ্রণটি ভালো করে পায়ের পাতায় ও গোড়ালিতে স্ক্রাব করুন। তবে হালকা হাতে ঘষবেন যাতে কেটে না যায়। হালকা হাতে ১৫ মিনিট মতো স্ক্রাব করুন। সপ্তাহে তিনদিন করলেই ফল পাবেন হাতেনাতে।