শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ নিষ্কাশনে লিভার বা যকৃতের ভূমিকা শরীরের অন্য অঙ্গগুলির থেকে অনেক বেশি| তাই শরীরের অন্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গ গুলির থেকে এই অঙ্গ একটু বেশি যত্ন দাবি করে| এই অঙ্গ যদি বিপদের সম্মুখীন হয় তাহলে বিপদের সম্মুখীন হবে গোটা জীবন| কারণ লিভার খারাপ হলে শরীর থেকে টক্সিনজাতীয় পদার্থ বের হতে পারবেনা| আর শরীর থেকে টক্সিনজাতীয় পদার্থ নির্গত না হলে শরীরের বাকি সমস্ত অঙ্গপ্রতঙ্গ ধীরে ধীরে বিকল হতে শুরু করবে| তাই একজন মানুষের সুস্থ থাকার জন্য লিভারের সুস্থ থাকাটা খুবই জরুরি| আর চিকিৎসকেরা জানান, পেট পরিষ্কার থাকলেই লিভারের অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যায়| এই লিভারকে সুস্থ রাখার জন্য কি কি ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করা যায় চলুন জানা যাক-
১) লিভারের কার্যক্ষমতা বাড়ানোর জন্য প্রচুর পরিমানে জল পান করুন| সারাদিনে যদি ২.৫ লিটার থেকে ৩ লিটার জল পান করা যায় তাহলে শরীরের অনেক সমস্যাই কমে যায়| মানবশরীরের অন্যতম মূল উপাদান হল জল| শরীরের প্রায় ৭০% তৈরী জল দিয়ে| এই জলই টক্সিনকে লিভারের মাধ্যমে ছেঁকে বের করতে সাহায্য করে| পর্যাপ্ত পরিমান জল না পেলে শরীর থেকে টক্সিন বেরোতে পারে না| ফলে সেই টক্সিন অন্য অঙ্গ প্রতঙ্গের মধ্যে প্রবেশ করে তাদের বিকল করে দেয়| তাই লিভার সুস্থ রাখতে বেশি করে জল পান করুন|
২) চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, উষ্ণ গরমজলে লেবুর রস মিশিয়ে খেলে তা লিভারের উপর সোজাসুজি ক্রিয়া করে| এই মিশ্রণ লিভারের মধ্যে উৎসেচকের ক্ষরণে সাহায্য করে| এছাড়াও ভিটামিন সি লিভারে গ্লুটাথিওন নামক একপ্রকার উৎসেচকের ক্ষরণ বাড়াতে সাহায্য করে| এই উৎসেচক লিভারের মধ্যে থেকে টক্সিন জাতীয় পদার্থ নিষ্কাশনে সাহায্য করে| তাই চিকিৎকেরা পরামর্শ দেন, প্রতিদিন সকালে উঠে অন্য কোনো পানীয় পান করার আগে খালি পেটে উষ্ণ গরমজলে লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন| এই পানীয়টি লিভারকে সুস্থ রাখার পাশাপাশি লিভারের কর্মক্ষমতা বাড়াতেও সাহায্য করে|
৩) লিভারের জন্য উপকারী একটি জিনিস হলো রসুন| রসুনের মধ্যে থাকা সালফার লিভারের কার্যক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে থাকে| এছাড়াও রসুনে উপস্থিত অ্যালিসিন ও সেলেনিয়াম লিভার পরিষ্কার করতে সাহায্য করে| এই কারণটির জন্যই চিকিত্সকেরা খালি পেটে কাঁচা রসুনের কোয়া খাওয়ার পরামর্শ দেন|
৪) লিভার সুস্থ রাখতে গ্রিন টির ভূমিকা উল্লেখযোগ্য| গ্রিন টিতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট শরীরের মধ্যেকার ফ্রি রেডিক্যাল টক্সিসিটি দূর করতে সাহায্য করে| প্রতিদিন নিয়ম করে এক থেকে দুই কাপ গ্রিন টি পান করলে লিভার সুস্থ থাকার পাশাপাশি লিভার পরিষ্কারও থাকে|
অন্য অঙ্গ প্রত্যঙ্গের কার্যকারিতা বজায় রাখার জন্য উচিত লিভারের সুস্থতা নিশ্চিত করা| আর লিভারের সুস্থতা কামনা করার সাথে সাথে আমাদের উচিত উপরোক্ত নিয়মগুলি মেনে চলা| কখনো কোনও অসুবিধা হলে নিজে থেকে ওষুধ এনে না খেয়ে সকলের উচিত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া|