বিন্দু'তেই সিন্ধু আতঙ্ক

 

মানুষ সবচেয়ে বেশি সচেতন তার সৌন্দর্য্য নিয়ে| আর সেই সৌন্দর্য্য একপলকে নষ্ট করতে পারে মুখের ত্বকে গজিয়ে ওঠা ব্রণ, ফুসকুড়ি, কালোছোপ প্রভৃতি| এর সাথেই রয়েছে আবার ব্ল্যাকহেডস এর সমস্যা| নাকের উপরে কালো কালো এক ধরণের ডটসকেই বলা হয় ব্ল্যাকহেডস| প্রধানত বয়ঃসন্ধিকালে এবং যৌবনকালে এই সমস্যার সম্মুখীন হন প্রতিটি মানুষ| বিশেষ করে এই সমস্যায় জর্জরিত হতে হয় নারীকেই|  কারণ পুরুষরা সকলে তাদের সৌন্দর্য্য নিয়ে যথেষ্ট সচেতন নন| কিন্তু এই ব্ল্যাকহেডস হয় কিভাবে তা কি জানা আছে?  ত্বকের উপরের সারফেসে থাকা রোমগ্রন্থির খোলা দিকটিতে যখন অতিরিক্ত সেবাম এবং ধুলোবালি জমে সেই জায়গাটি ফুলে ওঠে এবং ব্ল্যাকহেডস এর সৃষ্টি করে| অনেক সময় মনে করা হয়, ব্ল্যাকহেডস হয় কারণ তার মধ্যে প্রচুর ধুলোবালি জমে থাকে কিন্তু এর কারণটি আসলে তা নয়| এর কারণ হলো, এই আটকে যাওয়া গ্রন্থিগুলির উপর গজিয়ে ওঠা অতিরিক্ত সেবাম যখন বাতাসের সংস্পর্শে আসে তখনই জারণ প্রক্রিয়ার ফলে তারা ডার্ক কালার ধারণ করে|

এই ফুসকুড়ি বা ব্ল্যাকহেডস দূর করা বেশ কষ্টসাধ্য ব্যাপার| অনেকরকম প্রসাধনী সামগ্রী বাজারে উপলব্ধ থাকলেও প্রপার রেজাল্ট কেউই দিতে পারে না| তাহলে উপায়?  কোনওরকম ঘরোয়া উপায় কি আছে ব্ল্যাকহেডস দূর করার জন্য?  নিশ্চই আছে| চলুন আজ আমরা ব্ল্যাকহেডস দূর করার কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করি|

১) ব্ল্যাকহেডস এর ক্ষেত্রে হলুদ খুব উপকারী| তাই ব্ল্যাকহেডসের সমস্যা দূর করতে আপনি ব্যবহার করতে পারেন হলুদ| হলুদ বাটার সাথে কাঁচা দুধ এবং চন্দনের গুঁড়ো মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরী করে নিন| এবার ভালো করে ঈষদ উষ্ণ গরম জল দিয়ে মুখ ভালো করে ধুয়ে নিন| এবার এই প্যাকটি আপনি শুধু নাকের চারপাশেও লাগাতে পারেন বা সারামুখেও লাগাতে পারেন| এইভাবে ১৫ মিনিট রেখে জায়গাটি ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন|

২) হলুদ বাটার সাথে পুদিনা পাতার রস মিশিয়ে একটি ঘন পেস্ট তৈরী করুন| এবার এই পেস্টটি ব্ল্যাকহেডস আক্রান্ত জায়গার উপর লাগিয়ে রাখুন এবং শুকিয়ে গেলে তা ধুয়ে ফেলুন|

হলুদের এই প্যাক দুটি সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার ব্যবহার করুন এবং কয়েকদিনের মধ্যেই ব্ল্যাকহেডস মুক্ত সুন্দর ত্বক পেয়ে যান|

৩) উচ্চ ঔষধিগুন সম্পন্ন ভেসজ তরল হলো মধু| বহুযুগ থেকে হলুদের পাশাপাশি মধুকেও রূপচর্চা থেকে শুরু করে না কাজে লাগানো হয়েছে| ব্ল্যাকহেডস এর ক্ষেত্রে পরিষ্কার মুখে ব্ল্যাকহেডস আক্রান্ত জায়গায় মধু মাখিয়ে রাখুন| মধু যখন খুব ভালোভাবে শুকিয়ে যাবে তখন উষ্ণ গরম জল দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন| মধু একদিকে যেমন ত্বককে কোমল রাখে সেরকমই রোমকূপগুলি পরিষ্কার করতে সাহায্য করে| এর ফলে ব্ল্যাকহেডসের সমস্যা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ত্বক ছেড়ে পালায়|

৪)  ব্ল্যাকহেডস কমানোর জন্য যে বস্তুটি সর্বাপেক্ষা বেশি ব্যবহৃত হয় তা হলো বেকিং সোডা| শুধু ব্ল্যাকহেডস নয় ব্রণর উপরেও বেকিং সোডা ভালো উপকার দেয়| তাই এর জন্য দুই টেবিল চামচ বেকিং সোডার মধ্যে এক চামচ মিনারেল ওয়াটার মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরী করুন| এবার ব্ল্যাকহেডস আক্রান্ত জায়গায় এই পেস্টটি লাগিয়ে হালকা হাতে ম্যাসাজ করে ঐভাবেই রেখে দিন যতক্ষণ না মিশ্রণটি সম্পূর্ণ শুকনো হচ্ছে|  সম্পূর্ণ শুকিয়ে যাওয়ার পর উষ্ণ গরম জল দিয়ে মুখে ধুয়ে ফেলুন| সবচেয়ে ভালো ফলাফলের জন্য সপ্তাহে দুইবার এই মিশ্রণটি ব্যবহার করুন|

এছাড়াও বাজারে পাওয়া যায় চারকোল পাউডার যা ব্ল্যাকহেডস কমানোর জন্য খুবই ভালো| তবুও বাজার থেকে জিনিস কিনে এনে ব্যবহার করার আগে একবার ট্রাই করে দেখুনই না ঘরোয়া জিনিসের কামাল.......   

 

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...