রাজস্থানের নাথদ্বারা। দ্বার শব্দের অর্থ দরজা। অর্থাৎ ‘ভগবানের দরজা’। এই মন্দির ক্ষেত্র ঘিরেই প্রতি উৎসবে মেতে ওঠেন ভক্তরা। নাথদ্বারায় শ্রীকৃষ্ণ ‘শ্রীনাথজী’। পূজিত হন গিরি গোবর্ধন রূপে।
উদয়পুর থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত নাথদ্বারা মন্দির।
রাজস্থানের এই মন্দিরের সঙ্গে জড়িয়ে আছে ইতিহাসের কাহিনী। ১৬৬৫ সালে আওরাঙ্গজেবের সেনা বৃন্দাবন আক্রমণ করেন। সেই সময় মুঘল রোষের শিকার হয় বহু হিন্দু মন্দির। গোবর্ধন মন্দিরটিও যখন আক্রমণের মুখে পড়ে। তখন মন্দিরের ভক্ত এবং পুরোহিতরা আগের শাসকের দেওয়া উপহার এবং দান সামগ্রী তাদের দেখায়। মুঘল সেনাপতি তাদের ছেড়ে দেয়। কিন্তু মন্দির থেকে দেবতা নিয়ে অন্যত্র চলে যেতে হয় তাদের।
শোনা যায় আওরাঙ্গজেব স্বয়ং নিজের শহরে নিরাপদ স্থানে রাখেন গোবর্ধনকে। মূর্তি ৬ মাস আগ্রায় অধিষ্ঠান করে। নতুন করে মন্দির গড়ে ওঠে সেখানে। গোবর্ধন অন্য ভুবন পান।
মন্দির গড়ে ওঠার পশ্চাতের কাহিনিটিও বেশ অন্যরকম। আগ্রা থেকে গোবর্ধন যখন মাড়ওয়া প্রদেশ পাড়ি দিতে ৩২ মাস লেগেছিল। শেষ পর্যন্ত ‘শিহর’ নামে এক জায়গায় এসে গিরি গোবর্ধনের রথের চাকা মাটিতে বসে যায়।
মহারাণা রাজসিং এই ঘটনাকে গোর্বধনের নির্দেশ বলে মনে করেন। তাঁর মনে হয় ‘শিহর’- এই অধিষ্ঠান করতে চাইছেন গিরিরাজ। তাই তিনি স্থানেই মন্দির তৈরির সিদ্ধান্ত নেন। পরবর্তী সময়ে নাথদ্বারা মন্দিরকে কেন্দ্র করেই গড়ে ওঠে নাথদ্বারা নগরী।
১৬৭২ সালে শিহাদ গ্রামে নতুন মন্দিরে প্রতিষ্ঠা করা হয় গিরিরাজ গোবর্ধনকে। সেই মন্দিরই আজ চেনা ‘নাথদ্বারা’। এই মন্দির জনপ্রিয় ‘ শ্রীনাথজীর হাভেলি’ নামেও।
‘শ্রীনাথজী’ কৃষ্ণের সাত বছর বয়সী বালক রূপ। বৈষ্ণব বল্লভ সম্প্রদায়ের প্রধান পুজ্য দেবতা। নাথদ্বারা মন্দিরে দিনে ৮ বার পুজো করা হয়।