শিবরাত্রীর দিন ভক্তরা আসেন কটাস রাজ মন্দিরে

হিন্দুদের বিশ্বাস, মহাদেবের অশ্রুপাতের ফলে পৃথিবীর বুকে দুটি হৃদ সৃষ্টি হয়েছিল। এই দুটি হৃদের ধারেই গড়ে উঠেছিল দুটি মন্দির। যার মধ্যে একটি 'কটাস রাজ মন্দির'। প্রাচীন এই মন্দিরটির উপাস্য দেবতা হলেন শিব। মন্দিরটির স্থাপত্যের সঙ্গে মিল রয়েছে বৌদ্ধ স্থাপত্য ও কাশ্মীরী হিন্দু মন্দিরগুলির। প্রাচীনকালে এই মন্দিরেই প্রথমে শিব লিঙ্গের পূজা করা শুরু হয়েছিল। মহাভারতে এই মন্দিরের কথা উল্লেখ রয়েছে। মহাভারত উল্লেখ রয়েছে, পাশা খেলায় কৌরবদের কাছে হারের পর পান্ডবরা বারো বছর বনবাস ও একবছর অজ্ঞাতবাসে কাটিয়েছিলেন। সেই সময় চার বছর কটাস রাজ মন্দিরে কাটিয়েছিলেন তাঁরা। এছাড়াও চিনা পরিব্রাজক হিউয়েন সাং-এর লেখাতেও উল্লেখ রয়েছে কটাস রাজ মন্দিরের।

 

Katas1

 

বর্তমানে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের চ্যাকওয়াল জেলায় অবস্থান এই মন্দিরটির। পাকিস্তানের জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র কালার কাহার থেকে প্রায় দু' হাজার ফুট উঁচুতে অবস্থিত 'কটাস রাজ মন্দির'। শিখদের বিশ্বাস, শিখ ধর্ম গুরু নানক এই মন্দির দর্শন করতে এসেছিলেন। মহারাজ রণজিৎ সিং ১৮০১ সালে বৈশাখী উপলক্ষে এই মন্দিরে এসেছিলেন। পবিত্র শিবরাত্রীর দিন ভারত থেকেও বহু মানুষ এই মন্দির দর্শন করতে যেতেন।

এই মন্দিরটি ছাড়াও ঐ স্থানে আরও সাতটি প্রাচীন মন্দির, একটি বৌদ্ধ স্তুপ ও বেশ কিছু নতুন মন্দির রয়েছে। তবে বহুকাল ধরে মন্দিরটি জরাজীর্ণ অবস্থায় হয়ে পড়েছিল। তারপর পাকিস্তান সরকার এই মন্দিরের কিছুটা অংশ সংস্কার করায়। হিন্দুদের গুরুত্বপূর্ণ মন্দির গুলির মধ্যে 'কটাস রাজ মন্দির' অন্যতম। তবে শুধু হিন্দুরাই নয় মুসলিমরাও কটাস রাজকে সম্মান জানান।

 

Katas2

 

স্বাধীনতার পর এই মন্দির বন্ধ ছিল বহু বছর। তারপর ভারতীয় হিন্দুরা এই মন্দির দর্শন করতে আসতেন। কিন্তু ১৯৫৬, ১৯৬০, ১৯৬৫ সালে ভারত-পাক যুদ্ধ চলাকালীন ভারতীয়দের এই মন্দির দর্শনের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল। তারপর আবার ২০০৬ সালে এই মন্দির দর্শনের সুযোগ পায় ভারতীয়রা। কিন্তু দুই দেশের সম্পর্ক ফের অবনতি হওয়ায় এই মন্দিরে ভারতীয় তীর্থযাত্রী চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। হিন্দুদের এই পবিত্র মন্দিরটি অবস্থিত পাকিস্তানের পঞ্জাব রাজ্যের চকওয়াল জেলায়

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...