প্রাচীন টেরাকোটা কাজের নিদর্শন গোকুল চাঁদ মন্দির

ভগবান বিষ্ণু পুজিত হন গোকুল চাঁদ মন্দিরে। প্রাচীন এই মন্দিরটি ১৪৬০ খ্রিস্টাব্দে রাজা চন্দ্র মল্ল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর গোকুল নগর গ্ৰামে রয়েছে এই মন্দির। ভগবান বিষ্ণুর তিন অবতার অর্থাৎ নরসিংহ, বরাহ ও বামন অবতারের মূর্তি রয়েছে গোকুল চাঁদ মন্দিরের তিন পাশে। যার মধ্যে ভগবানের বরাহ মূর্তিটির অস্ত্রশস্ত্র ও স্থাপত্য শৈলী অপূর্ব সুন্দর দেখতে। যার আকৃষ্ট করবে সকলে। সেই সময় গোকুল নগর ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। কারণ তখন রাজধানী তাম্রলিপ্ত পৌঁছতে হলে গোকুল নগরের উপর দিয়ে যেতে হত। তখন এই মন্দিরেই বিশ্রাম নিতেন পথিকরা। মন্দিরের ভেতরে রয়েছে গোকুল চাঁদের মূর্তিই। মূতিটি তৈরী করা হয়েছিল কষ্টিপাথর দিয়ে। আর শ্রীকৃষ্ণের সেই মূর্তির বা পাশেই রয়েছে অষ্টধাতুর তৈরি শ্রীরাধিকা। সম্পূর্ণ মন্দিরটি মাকড়া পাথর দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে।

বিখ্যাত এই মন্দিরটির সামনে রয়েছে একটি নাটমন্দিরও। স্থানীয় মানুষরা বলেছেন, এক সময় এখানে পুজো হতো ভগবান শ্রীকৃষ্ণের। ঐ নাটমন্দিরের সামনেই রয়েছে একটি একটি সিঁড়ি। নাটমন্দিরের ছাঁদ থেকে দেখা যায় সমগ্ৰ মন্দিরটি। মন্দিরের চারি দিকে রয়েছে বেশকিছু শিব মন্দির। যার মধ্যে অন্যতম হল গন্ধেশ্বর শিব মন্দির। এটি হল বাঁকুড়ার বৃহত্তম শিব লিঙ্গ। কালা পাহাড়ের আক্রমণে এই মন্দির বহু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। আজও বহু পর্যটকদের ভিড় দেখতে পাওয়া যায় এখানে।  চিনা পরিব্রাজক হিউ এন সাং-এর বর্ণনাতে এই মন্দির ও এই এলাকার সম্পর্কে বহু তথ্য পাওয়া যায়। ১২০০ সালের পর বহুবার তুর্কি আক্রমণেরও শিকার হতে হয়েছে গোকুল চাঁদ মন্দিরকে। যার ফলে মন্দিরটি প্রায় ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। যদিও মন্দিরের বিষ্ণু মূর্তি ও পশুপতি শিবের দিগম্বরের মূর্তি আজও রয়েছে এখানে।

বিষ্ণুপুর টেরাকোটার কাজের জন্যে জনপ্রিয়। আর এই টেরাকোটা কাজের অন্যতম নিদর্শন হল গোকল চাঁদ মন্দির। সারা বছরই পর্যটকদের ভিড় লক্ষ্য করা যায় এখানে। তবে শীতকালে বেশি মানুষের আসেন এই মন্দির দর্শন করতে।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...