চলচ্চিত্রের প্রাণপুরুষ হিরালাল সেন বড়পর্দায়

বাংলা তথা ভারতীয় চলচ্চিত্রের প্রথম দিকের অন্যতম পরিচালক ছিলেন হীরালাল সেন। ভারতীয় চলচ্চিত্রের অন্যতম কিংবদন্তি ও প্রাণপুরুষ এই পরিচালকের জীবনকে পর্দায় তুলে ধরার পরিকল্পনা করেছেন পরিচালক অরুণ রায়। ছবির নাম ‘হীরালাল’। অভিনয়ে রয়েছেন কিঞ্জল নন্দ, খরাজ মুখোপাধ্যায়, শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়, শঙ্কর চক্রবর্তী প্রমুখ অভিনেতারা। এর আগে সিনেমাটি ২৪তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়। এই বছরেই সিনেমাটি দর্শকরা বড়পর্দায় দেখতে পাবেন।

রইল তাঁর সম্বন্ধে দু'চার কথা-

হিরালাল সেন মানিকগঞ্জ পৌরসভার বগজুরী গ্রামে ১৮৬৬ সালে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর হাতেই জন্ম হয় চলচ্চিত্রের। হীরালাল সেনের কল্যাণে উপমহাদেশের চলচ্চিত্রের সম্ভাবনা নতুন দিগন্তের রূপ পায়। স্কুলের ছাত্রাবস্থা থেকে হীরালাল সেনের ফটোগ্রাফীর প্রতি ছিল দারুণ আগ্রহ। প্রথমে বায়োস্কোপ দেখার মাধ্যমে অনুপ্রেরণা পান তিনি। প্রত্যহ বিকেলে হীরালাল সেনের বায়োস্কোপ দেখার নেশা ছিল। পরে পিতা চন্দ্রমোহন সেনকে বায়োস্কোপ কিনে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। ছেলের উৎসাহ উদ্দিপনা দেখে তাঁর পিতা আরও উৎসাহিত হয়ে ওঠেন। ১৮৯০ সালের প্রথমদিকে মানিকগঞ্জের নিজ বাড়িতে তিনি 'এইচএল সেন এন্ড ব্রাদার্স' নামে একটি ফটোগ্রাফিক স্টুডিও খোলেন। প্রথম পর্যায়ে বিদেশী সিনেমার মেশিন এনে হীরালাল সেন 'দি রয়েল বায়োস্কোপ কোম্পানি'ও গঠন করেন। ১৮৯৮ সালের ৪ এপ্রিল এই কোম্পানির মাধ্যমে চলচ্চিত্রের প্রদর্শনীর আয়োজন করেন এবং সেই বছর বরিশালে বাংলা ছবি প্রদর্শন করেন। ১৯০১ সালে হীরালাল সিনেমার কাজে হাত দেন। তিনি সেইসময়ে মঞ্চ নাটকের নির্বাচিত কিছু দৃশ্যের চিত্রগ্রহণও শুরু করেন। তাঁর চিত্রগ্রহণকৃত তিনটি নাটক হলো ১. বঙ্কিম চন্দ্রের 'সীতারাম' ২. তারনাথের 'সুবল' ৩. 'আলীবাজ'। প্রথমে মুভি ক্যামেরা চালিয়ে আলো জ্বালিয়ে ছবি তোলার কাজ শুরু করেন। ব্যাপক উৎসাহ উদ্দিপনা তাঁকে পৌঁছে দেয় চলচ্চিত্র নির্মাণের সফলতার দ্বারে। একেবারে শুরুর দিকের সফল চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে হীরালাল সেন আজও অমর হয়ে আছেন।

 

 

 

 

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...