বয়স প্রায় ৫০ থেকে ৬০ মিলিয়ন বছর কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় সে না কি এখনো পেরোয়নি কৈশোর! আর আজও সে না কি ক্রমশ হয়ে চলেছে লম্বা। না না - এর জন্য তার কোনো হেল্থ ড্রিংকের প্রয়োজন হয় না। রহস্যটা কী? বলব সে কথা।তার এই উচ্চতা নির্ধারণ করে বিশ্বকে সে সম্পর্কে জানান যিনি দিয়েছেন তিনি হলেন এক বাঙালী - বিষয়টি নিঃসন্দেহে গর্বের।
কিশোরীর বয়স শুনেই খানিক অনুমান করাই যায় তার নাম। বলছি, উচ্চতম শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্টের কথা। ভূতাত্ত্বিকদের মতে, তার কৈশোর পর্ব এখনো চলছে। আসলে ভূতাত্ত্বিকদের মতে কিশোরী হলেও নেপালিদের কাছে সে ‘সাগরমাথা’ বা ‘আকাশের দেবী’ এবং তিব্বতীদের কাছে ‘কোমোলাংমা’ বা ‘পবিত্র মা’ নামেই পরিচিত সে। এতদিন যার উচ্চতা ছিল ৮,৮৪৮ মিটার, অতি সম্প্রতি পরিমাপের পর দেখা গেল আরও ৮৬ সেন্টিমিটার উচ্চতা বৃদ্ধি হয়েছে তার। এভারেস্টের উচ্চতা নিয়ে এমনিতেই চীন এবং নেপালের বিবাদ ছিল, কারণ চীন পরিমাপ করত তুষার স্তর বাদ দিয়ে আর নেপাল ১৯৫৬ সালের সমীক্ষা রীতি মেনে পরিমাপ করত তুষার স্তর নিয়ে। সম্প্রতি তার মীমাংসা হয়েছে। আর এইবার নতুন নিয়ম অনুযায়ী উচ্চতা নির্ধারণ করে যেই তথ্য তুলে আনলেন বঙ্গসন্তান পরমেশ বন্দোপাধ্যায়, তাতে সকলের তাক লেগে গেল। এই উচ্চতা নির্ধারণের ব্যাপারে কিন্তু পথিকৃৎ ছিলেন আর এক বঙ্গসন্তান রাধানাথ শিকদার। তিনি ১৮৫৬ সালে হিমালয় পর্বতমালার ১৫ নং শৃঙ্গের উচ্চতা নিরূপণ করে প্রথম আবিষ্কার করেন যে, এটিই বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ। এই পর্বত শৃঙ্গটিকেই ১৮৬৫ সালে ভারতের ব্রিটিশ সার্ভেয়ার জেনারেল আন্ড্রু ওয়া মাউন্ট এভারেস্ট নামকরণ করেন। আর এবার সেই পথের পথিক হলেন আরো এক বাঙালী, সম্মানিত করলেন বাংলাকে। নিঃসন্দেহে বাংলা ও বাঙালীর এ এক গর্বের বিষয়।
কিন্তু ভূতাত্ত্বিকদের মতে, যতবার ভূমিকম্প হবে ততই উচ্চতা বৃদ্ধি পাবে। তাই কোনো হেলথ ড্রিঙ্ক নয় ইউরেশিয়া এবং ইন্ডিয়ান টেকটনিক প্লেটের চাপ আর ভূমিকম্পই এই কিশোরীর উচ্চতা বৃদ্ধির কারণ। কবে এই সুন্দরী যৌবন থেকে বার্ধক্যে পদার্পণ করবে এখন সেটাই দেখার।