রাজ্যবাসীর মনের অসুখের হদিশ জানতে এবার উদ্যোগী হয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। স্বাস্থ্য দফতরের শীর্ষ সূত্র থেকে এই খবর জানা গিয়েছে। প্রায় ৪৫ হাজার আশা কর্মী, ১২ হাজার এএনএম নার্স এবং ৮ হাজার চিকিৎসক-সব মিলিয়ে মোট ৬৫ হাজার কর্মী-চিকিৎসক-কে এই কাজে নিযুক্ত করা হয়েছে।
সমীক্ষার মাধ্যমে রাজ্য ইতিমধ্যেই জেনেছে, বাঙালিদের বেশিরভাগই কোনও না কোনও মনের অসুখে ভোগেন। কিন্তু অনেকে এই বিষয়টি বুঝতেই পারেননা, আবার অনেকে বুঝতে পারলেও লোকলজ্জার ভয়ে হাসপাতালে যাননা। তো রাজ্যের এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে স্বাস্থ্য দফতর যে বিপুল সংখ্যক কর্মী চিকিৎসককে নিয়োগ করেছে, তাদের প্রথমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে তারপর এই অসুখের সঠিক খোঁজ করতে পথে নামাবে দফতর। মানসিক ও স্নায়বিক চিকিৎসায় দেশের এক নম্বর চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান বেঙ্গালুরুর নিমহ্যানস-এর সঙ্গে এ বিষয়ে স্বাস্থ্যকর্তাদের চুক্তি হয়েছে। কলকাতার স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে নিমহ্যানসের প্রতিনিধিদলের ভিডিও কনফারেন্সিংএর মাধ্যমে গোটা প্রশিক্ষণপর্ব চলবে। প্রাথমিকভাবে হুগলির চিকিৎসক এবং এএনএম দের মধ্যে থেকে ২০ জন করে নিয়ে পাইলট প্রজেক্ট শুরু হবে। তারপর তা সব জেলার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে। ন'মাস থেকে এক বছরের মধ্যেই গোটা প্রশিক্ষণ পর্বটি শেষ করে দেওয়া হবে।
'ডিপ্লোমা ইন কমিউনিটি মেন্টাল হেলথ' নামে এই প্রশিক্ষণটি দেওয়া হবে। কিভাবে নির্দিষ্ট রোগ লক্ষণ ধরে ধরে চিকিৎসা করা হবে, সেসব বিষয়ে পাঠ ও দেওয়া হবে ডাক্তারদের। বিশেষত কোনও বিষয়ে উদ্বেগ, অবসাদ, দীর্ঘদিনের নেশা, তামাক আসক্তি এইসব বিষয় নিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে, শহরে, গ্রামে গিয়ে বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে নিজেদের মতো করে কথা বলবেন প্রশিক্ষিত কর্মী-চিকিৎসকেরা। কী বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করা হবে, সেই সম্পর্কে ছ'টি প্রশ্ন সম্বলিত ফর্ম দেবেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বর্তমানে প্রত্যেককে এলাকার উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসতে বলা হয়, শারীরিক রোগ নির্ণয়ের জন্য। সুগার, প্রেসার, ক্যান্সারের লক্ষণ পরীক্ষা করে দেখা হয়। এখন থেকে আশা, এএনএম কর্মীরা রাজ্যবাসীর মনের অসুখের হদিস নেবেন। তেমন কোনো সমস্যা যদি দেখা যায়, যার জন্য হাসপাতালে যাওয়ার প্রয়োজন, তাহলে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা করানো হবে।