কথায় বলে ‘আদা জল খেয়ে লেগে পড়া’-কিন্তু কেন এই প্রবাদ ব্যবহার করা হয় তা জানেন কি?
আসলে আদা-জল হল বল। প্রতিদিন আদার জল পান করলে এনার্জি বাড়ে। শরীরের জড়তা, আলসেমি কেটে যায় তাই বলা হয় ‘আদা জল খেয়ে’।
বাংলার প্রবাদ ভান্ডার বেশ আদা-সমৃদ্ধ বলা যায়। আদার ব্যাপারী জাহাজের খবর না রাখলেও আদার ব্যবহার কিন্তু আয়ুর্বেদে কিন্তু বেশ গুরুত্বপূর্ণ। আয়ুর্বেদ চিকিৎসায় সর্বাধিক ব্যবহৃত হয় আদা।
আদায় আছে পটাশিয়াম, ফসফরাস, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালশিয়াম, সোডিয়াম, জিঙ্ক, ম্যাঙ্গানিজ, আয়রণ, কপার এবং সেলেনিয়াম। আরো আছে ওমেগা -৬ ফ্যাটিএসিড, লাইনোলিকএসিড, এসপারটিকএসিড ও গ্লুটামিকএসিড।
শীতের মরসুমে ঠাণ্ডা লাগা, সাইনাসের হাত থেকে বাঁচতে আদা খুব কাজের। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। পরিপাকতন্ত্রকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। আদার ঝাঁঝালো স্বাদ ও গন্ধ পেটের জন্য উপকারী।
আদায় রয়েছে ভাইরাস প্রতিরোধ ক্ষমতা। হিউম্যান রেসপিরেটরি সিন্টিয়াল ভাইরাস দু’ধরনের প্রকারভেদ আছে যা আপার ও লোয়ার রেসপিরেটরি ট্র্যাক্টের ক্ষতি করে। এই ক্ষতি প্রতিরোধ করতে সক্ষম আদা।
মাথা ঘোরা, গা বমিভাব, অস্বাভাবিক ঘাম হওয়া, যানবাহনে অস্বস্তি ও বমিভাব আদা কার্যকর ভাবে ব্যবহার হয়।
পেশির ব্যথায় ভাল কাজ দেয় আদা। পড়ে যাওয়া, গাঁটে ব্যথা, অস্টিও আর্থারাইটিসের উপশমে আদা বহুলভাবে ব্যবহৃত হয়। নিয়মিত আদা খেলে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে যায়। আদা রক্তে শর্করার মাত্রা যেমন নিয়ন্ত্রণে রাখে তেমনি মেদ কমাতেও সাহায্য করে। প্রতিদিন দুবেলা এক চা–চামচ করে আদার রস, লেবুর রস ও মধু এক কাপ গরম জলে মিশিয়ে চায়ের মতো খেলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে উপকার দেয়।
চুল পড়া, খুশকি হওয়া, চুল ফাটা বা ভাঙ্গা, অকালপক্ক হওয়া ইত্যাদি সমস্যা থেকে প্রাকৃতিক ভাবে সমাধান পাওয়া যায় আদার ব্যবহারে। চুলে আর্দ্রতা ফিরিয়ে আনতেও আদা উপকারী।
তবে পুষ্টিবিদদের মতে রেফ্রিজারেটারে রাখা আদা কিন্তু ঔষধি তেমন কাজে দেয় না। তাজা আদা, শুঁটে আদা, আদার গুঁড়ো উপকারী।