ভাত না রুটি? কোনটি শরীরের জন্য অধিক উপকারী? এর উত্তরে অনেকেই বলবেন রুটি। কারণ, মনে করা হয় রোজ ভাত খাওয়ার ফলে শরীরে মেদ জমার আশঙ্কা থাকে। অপরপক্ষে, গমে থাকা গ্লুটেন আবার হজম হতে সময় লাগে। তাই অনেকেই ভাত কেই এক সম্পূর্ণ আহার বলে মনে করেন। না, আজ আমরা ভাত না রুটি কোনটি বেশি উপকারী এই নিয়ে আলোচনা করবো না। আজ আমরা আলোচনা করবো আটা ও ময়দা বেশি খেলে শরীরের কি কি ক্ষতি হতে পারে সেই নিয়ে।
রাতের রুটি হোক বা রবিবারের প্রাতঃরাশের লুচি, আটা ও ময়দার ব্যবহার বাঙালির রান্নাঘরে অবশ্যম্ভাবী। শুধু বাংলায় কেন, দেশের নানা প্রান্তের লোকজনই খাবার হিসেবে রুটির উপর ভরসা রাখেন। মনে করা হয়, রুটি খাওয়ার ফলে শরীর অনেক বেশি ঝরঝরে থাকে। কিন্তু প্রতিদিন আটা বা ময়দার তৈরী জিনিস খেতে থাকলে শরীরে কিছু সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।
গ্লুটেন থেকে যেসব শারীরিক সমস্যার সৃষ্টি কোনো পারে সেগুলি হলো, গ্লুটেন ইনটলারেন্স অর্থাৎ গ্লুটেনকে ঠিকমতো হজম করতে না পারা, তার থেকে পেটের নানা সমস্যা এবং সিলিয়াক ডিজিজ, গম থেকে অ্যাল্যার্জি, নানা অটোইমিউনো ডিজিজ প্রভৃতি। বেশ কিছু গবেষণা থেকে জানা গেছে, পাউরুটি বা পাউরুটিজাতীয় কোনো জিনিস খাওয়ার পরে শরীরের পরিপাক তন্ত্রের এক বিশেষ পরিবর্তন ঘটে। এর ফলে শরীরে বেশ কিছু হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায় যা মানসিক সমস্যাকে ত্বরান্বিত করে। গ্লুটেন হজম হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি পায়। তাই রোজ আটা বা ময়দা দিয়ে তৈরী খাবার খাওয়ার ফলে ধীরে ধীরে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে গিয়ে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাচ্ছে। জানা গেছে, দিনের পর দিন এরকম চলতে থাকলে টাইপ ২ ডায়াবেটিস শরীরে থাবা বসাতে বাধ্য। চিকিৎসকের মত, যাদের পরিবারে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত সদস্য থাকে তাদের পরিবারকে গমের তৈরী খাবার এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছেন তারা। হৃদরোগ বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, গমে থাকা নানা উপাদান শরীরে কোলেস্টেরলের পরিমান বৃদ্ধি করতেও সাহায্য করে। এছাড়াও গমের তৈরী খাদ্য ত্বকে বয়সের ছাপ ফেলতে পারে। ত্বক কুঁচকে যাওয়া, ত্বকে বলিরেখা প্রভৃতি সমস্যাকে ত্বরান্বিত করতে পারে গমের উপাদান। গমের অতিরি খাবার বেশি খেলে চুল পড়ার সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
অতিরিক্ত কোনোকিছুই শরীরের জন্য ভালো নয়। সে ভাত রুটি হোক বা অন্য কিছু। তাই যাই খাবেন পরিমান বুঝে খাবেন আর কোনো কিছুকেই অভ্যেস বানিয়ে ফেলবেন না। পরিমান মতো খাবার খান তা সে ভাত হোক বা রুটি। পরিমান বুঝে খেলে কোনো সমস্যায় সৃষ্টি হয় না। তবু রুটি খাওয়ার পরে বা গমের তৈরী কোন খাবার খাওয়ার পরে কোনো শারীরিক অসুবিধা হচ্ছে মনে হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।