স্বর্ণমন্দির অন্য নামে ‘হরমন্দির সাহিব’

শিখ ধর্মের পবিত্র ধর্মস্থান অমৃতসরের স্বর্ণ মন্দির। চতুর্থ শিখ গুরু রাম দাস সাহেব ষোড়শ শতাব্দীতে মন্দিরটির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তবে শুধু শিখদের জন্যেই নয় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কাছেও এই স্থান খুব গুরুত্বপূর্ণ। বৌদ্ধদের বিশ্বাস, এই স্থানেই ভগবান গৌতম বুদ্ধ তপস্যা করেছিলেন। সেই সময় এই অঞ্চল ছিল সম্পূর্ণ জঙ্গলে ঘেরা একটি হ্রদ ছিল। স্বর্ণ মন্দিরটি তৈরি হওয়ার আগে এই অঞ্চলটি প্রতিবিম্বের জন্য ব্যবহার করেছিলেন। তবে মন্দির নির্মাণের কাজ শুরু করেছিলেন শিখ গুরু অর্জান দেব। মন্দির নির্মাণের কাজ চলেছিল প্রায় চার বছর ধরে।  ১৫৮১ সালে শুরু হয়েছিল মন্দির নির্মাণের কাজ।

 

RanjitSingh1

 

বর্তমান সময় 'স্বর্ণ মন্দির' নামে পরিচিত হলেও এই মন্দিরের আরও একটি নাম রয়েছে। 'হরমন্দির সাহেব' নামেও ডাকা হয় এই মন্দিরটিকে। কিন্তু 'স্বর্ণ মন্দির' নাম দেওয়া হয়েছে মহারাজ রণজিৎ সিংহের জন্যে। তিনি এই মন্দিরটি সোনার ফয়েল দিয়ে মুড়ে দিয়ে ছিলেন। তবে তার আগে গুরু গোবিন্দ সিংহের মৃত্যুর এই গুরুদ্বার বহুবার ধ্বংস করা হয়েছে। মোঘল শাসকরা বার বার মন্দিরটি ধ্বংস করতে চেয়েছে। যার ফলে মন্দিরের বিভিন্ন অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। তবে পাঞ্জাবে শিখ মহারাজা রণজিৎ সিংহের উত্থানের পর ১৮৩০ সালে আবার নির্মাণ করা হয়েছিল এই মন্দিরটি। তিনি মন্দিরের সুরক্ষার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা করেছিলেন।

 

RanjitSingh2

 

'স্বর্ণ মন্দিরের' স্থাপত্যে হিন্দু ও মুসলিম সংস্কৃতির ছাপ পাওয়া যায়। 'স্বর্ণ মন্দিরের' দরবারা সাহেবে রাখা রয়েছে শিখদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ 'গ্ৰন্থসাহিব'। তবে এই মন্দিরের অন্যতম আকর্ষণ হল মন্দিরের লঙ্গরটি। প্রতিদিন পঞ্চাশ হাজারেরও বেশি মানুষকে খাবার পরিবেশন করানো হয়। ধর্মীয় অনুষ্ঠানে এই সংখ্যা বেড়ে যায় এক লাখেরও বেশি।

জনপ্রিয় এই মন্দিরে সব ধর্ম ও জাতির মানুষের জন্য খাবার পরিবেশন করা হয়। অমৃতসর থেকে 'স্বর্ণ মন্দিরের' দূরত্ব বেশি নয়। রেল পথ, সড়ক পথ ছাড়াও বিমানে আসার ব্যবস্থা রয়েছে অমৃতসরে। প্রত্যেক বছর এই পথ ধরেই মন্দির দর্শন করতে আসেন পর্যটকরা।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...