দেবী পার্বতী শিবকে স্বামী রূপে পেতে চেয়েছিলেন। তার জন্য বহু পরীক্ষার মুখে পড়তে হয় তাঁকে। ১০৮ বার জন্ম গ্রহণ করতে হয়। শেষ পর্যন্ত একাসনে তপস্যায় তুষ্ট করেন মহাদেব কে। তারপরই শিব পার্বতীকে অর্ধাঙ্গিনী হিসেবে গ্রহণ করেন।
প্রতি শ্রাবণে ফিরে আসে এই কাহিনী। শ্রাবণ মাসের শুক্ল পক্ষে তৃতীয়া তিথিতে শিব-পার্বতীর উৎসব পালন করে উত্তর ভারতের হিন্দু সম্প্রদায়ের মহিলারা। উৎসবের নাম ‘হরিয়ালী তিজ’। অন্য নামে ‘শাওন তিজ’। অনেক এই উৎসবকে আবার ‘ছোটি তিজ’ও বলে। ‘হরিয়ালী তিজ’ এর পনেরো দিন পর অনুষ্ঠিত হয় ‘ কেজরি তিজ’।
‘হরিয়ালী তিজ’ আসলে প্রকৃতির অবাধ দানকে মনে করার উৎসব। ফুল-ফল, শস্যে প্রকৃতি জগৎ সংসারকে ধারণ করে। এই বর্ষাতেই সুজলা সুফলা হয়ে ওঠে প্রকৃতি। এই উৎসব কৃষিরও। তাই ‘হরিয়ালী তিজ’ এর ‘থিম’ রঙ সবুজ।
মহিলারা নতুন সবুজ শাড়ি, সবুজ রঙের চুড়ি আর মেহেন্দিতে সেজে ওঠেন। হর-পার্বতীর পুজো করেন তাঁরা। পার্বতীকে বলা হয় ’তিজ মাতা’।
রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ডের মহিলারা হরিয়ালী তিজ পালন করেন। পঞ্জাবে ‘তিজ’কে তিয়ান বলা হয়। ‘তিজ’ পরবের গান গাওয়া হয়। যা আসলে বর্ষার আগমনী গান। পরিবারের সদস্যও স্বামীর শ্রী বৃদ্ধি, স্বাস্থ্য, আয়ু কামনা করেন মহিলারা।
বিবাহিতা মহিলাদের উপহার দেয় পরিবারের বয়স্ক সদস্যরা। দেওয়া হয় একটি বিশেষ ঝুড়ি। যার মধ্যে বাড়িতে তৈরি মিষ্টি আর কাচের চুড়ি থাকে।
বালুসাই, জিলিপি, প্যাড়া, ক্ষীর উৎসবের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। আর দোলনা। ‘হরিয়ালী তিজ’ এর দিন ‘ঝুলা’ মানে দোলনা থাকতেই হবে। উৎসবের আচারে ফিরে পাওয়া ছোটবেলার স্বাদ।