প্রত্যাবর্তনের পর বিশ্বকাপের নজর সবথেকে বেশী হার্দিকের ওপরেই।
বিশ্বকাপের প্রাককালে পাকিস্তানের প্রাক্তন অধিনায়ক শাহিদ আফ্রিদি তার দেশের এক চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, "হার্দিকের মতো ফিনিশার আমাদের দলে নেই। ভেবেছিলাম আসিফ এবং খুশদিল এই জায়গাটা নিতে পারবে কিন্তু ওরা কাজটা করতে পারল না। মহম্মদ নাওয়াজ ধারাবাহিক নয়, শাদাব খানও না। এই চার জনের মধ্যে অন্তত দু'জনকে নিয়মিত ফিনিশারের কাজটা করতে হবে। শাদাব যে সময় বল করে সেটা ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। ও যে দিন ভাল বল করে, পাকিস্তান জেতে।"
আইপিএলে গুজরাত টাইটান্সকে চ্যাম্পিয়ন করার পর থেকেই আলোচনার কেন্দ্রে হার্দিক পান্ডিয়া। ভারতীয় দলেও ফিরেছেন বডোদরার অলরাউন্ডার। চোট সারিয়ে ফিরে আসার এই পথ সহজ ছিল না। অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে তাকে।
মাঝে লোকেশ রাহুল চোটের জন্য ছিটকে যাওয়ায় ভারতীয় দলের সহ-অধিনায়কের দায়িত্ব সামলাতে হয়েছে হার্দিককে। সেই সময় তিনি বলেছিলেন, ''আবেগের দিক থেকে ঠিক জায়গাতেই ছিলাম। যদিও আমার ফিরে আসার লড়াইটা সহজ ছিল না। নিজের বিরুদ্ধেই জিততে হয়েছে আমাকে। অনেকের মধ্যেই প্রশ্ন ছিল। আমার মাঠে ফেরার সম্ভাবনা নিয়ে অনেক কিছু বলা হচ্ছিল। তাঁদের কখনই উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করিনি। কিন্তু নিজেকে যে ভাবে আবার তৈরি করেছি, সেটার জন্য গর্ব অনুভব করি।''
২০১৫-১৬ মৌসুমে সফরকারী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তার টুয়েন্টি২০ আন্তর্জাতিকে হার্দিকের অভিষেক। ২৬ জুলাই, ২০১৬ তারিখে অনুষ্ঠিত ঐ খেলায় তিনি ২ উইকেট তুলে নেন। ক্রিস লিন তার প্রথম শিকার। ২০১৬ সালের আইসিসি বিশ্ব টি-টয়েন্টি প্রতিযোগিতা উপলক্ষে বিসিসিআই কর্তৃপক্ষ ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ তারিখে ভারত দলের খেলোয়াড়দের তালিকা প্রকাশ করে। এতে তিনিও অন্যতম সদস্য মনোনীত হন।
কপিল দেবের পর ভরতের সফলতম পেস বোলিং অলরাউন্ডার হার্দিক পান্ডিয়ার জন্ম ১৯৯৩ সালের ১১ অক্টোবর, গুজরাটের সুরাতে। ২০১৩ সাল থেকে বরোদা ক্রিকেট দলের হয়ে খেলা শুরু। তখন থেকেই আসতে আসতে ক্রিকেট দুনিয়ায় নিজের নাম লেখানো শুরু। ২০১৩-১৪ মৌসুমে বরোদাকে সৈয়দ মুশতাক আলী ট্রফি জিততে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে, তার আটটি ছক্কার সহ অপরাজিত ৮৬ রান সৈয়দ মুশতাক আলি ট্রফিতে বরোদা ক্রিকেট দলকে বিদর্ভ ক্রিকেট দলের বিরুদ্ধে ছয় উইকেটে জয়ের পথ দেখায়।
আজ ২৯ এ পা দিলেন তারকা ভারতীয় অলরাউন্ডার হার্দিক পান্ডিয়া। জন্মদিনে ছেলে অগস্ত্যকে ভীষণ মিস করছেন তিনি। ছেলের সঙ্গে কাটানো একটি ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছেন। ৫৫ সেকেন্ডের সেই ভিডিও'তে বাবার হাতে অগস্ত্য'কে একটি ব্যাট তুলে দিতে দেখা গেছে, এরপর ধন্যবাদ জানিয়ে তার সঙ্গে খেলা শুরু করেন পান্ডিয়া। পোস্ট'টি "Major Missing" শীর্ষকে শেয়ার করেছেন হার্দিক। এমন একটা বিশেষ দিন নিজের ছেলের সঙ্গেই কাটাতে চাইছিলেন হার্দিক, কিন্তু টি-২০ বিশ্বকাপের জন্যে তা হয়ে উঠল না এবার।
হার্দিকের স্ত্রী নাতাশা একটি ভিডিয়ো শেয়ার করে উইশ করেছেন স্বামীকে। ভিডিওটিতে একসঙ্গে কাটানো সকল বিশেষ মুহূর্ত গুলোকে কোলাজ আকারে সাজিয়েছেন তিনি। এদিন জন্মদিনের শুভেচ্ছা ভাসলেন হার্দিক। ভাই ক্রুনাল পান্ডিয়া তাকে উইশ করেন প্রথমে। এরপর শ্রেয়স আইয়ার উইশ করে তাকে 'Rock star' বলেন। জাতীয় দলে দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তনের পর আর ফিরে তাকাতে হয়নি হার্দিককে।
চলতি বছরে টি-২০ ক্রিকেটে চারশোর বেশি রান এবং পনেরোটার বেশি উইকেট নিয়েছেন তিনি। এমন দুর্দান্ত পারফরম্যান্স পান্ডিয়া আসন্ন টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও দিক, চাইছে গোটা ভারত। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন করেছিলেন হার্দিক পান্ডিয়া। সম্প্রতি তার প্রশংসা পঞ্চমুখ হয়েছিলেন তার মুম্বই ইন্ডিয়ান্স দলের সতীর্থ কায়রণ পোলার্ড। আইপিএলে প্রত্যাবর্তন করার আগে সময় টা খুব খারাপ গিয়েছিল হার্দিকের। কারণ ওই সময় পেশাদার ক্রিকেট থেকে সরে গিয়ে নিজের চোট সারানোর দিকে মন দিয়েছিলেন তিনি। গতবছর টি-২০ বিশ্বকাপের পর হার্দিককে জাতীয় দলের হয়ে আর খেলতে দেখা যায়নি।
২০১৫ আইপিএল এ প্রথমবার খেলার সুযোগ হয় হার্দিকের। আইপিএল নিলামে ভিত্তি মূল্য ১০ লক্ষ টাকায় তাকে কেনে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। উমেশ যাদব, সুনীল নারিন ও আন্দ্রে রাসেলের মতো বোলিং লাইনআপ সমন্বিত কলকাতা নাইট রাইডার্স-এর বিরুদ্ধে মুম্বাইতে ৩১ বলে ৬১ রান করে দলকে জেতাতে বিশেষভাবে সাহায্য করেন। সেই টুর্নামেন্ট শীর্ষ চার দলের মধ্যে স্থান পাওয়ার জন্য মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের কাছে ম্যাচটি জেতা খুবই জরুরি ছিল। হার্দিকও সেই টুর্নামেন্টে দ্বিতীয় ম্যান অফ দ্য ম্যাচ পুরস্কার পেয়েছিলেন।
সম্প্রতি ২০২২-এর এশিয়া কাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে বলে-ব্যাটে দুর্দান্ত খেলে এশিয়া কাপে ভারতকে জিতিয়েছেন হার্দিক। বল হাতে প্রথমে তিন উইকেট নেওয়ার পর চাপের মুখে ১৭ বলে অপরাজিত ৩৩ রান করেন তিনি। হার্দিকের খেলায় মুগ্ধ শাহিদ আফ্রিদি। পাকিস্তানের প্রাক্তন অধিনায়ক মনে করেন, ভারতের অলরাউন্ডার একার হাতেই ম্যাচের ভাগ্য বদলে দিয়েছেন।
টুইট করে হার্দিককে প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছিলেন আফ্রিদি। লিখেছেন, 'দুটো দল যখন এ রকম একটা বড় ম্যাচে খেলতে নামে এবং সেটা যখন শেষ বল পর্যন্ত গড়ায়, তখন বোঝা যায় কতটা হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে। সমর্থকরা তো এটাই দেখতে চান। দেখার মতো একটা লড়াই হল। দুটো ইনিংসেই হার্দিক পাণ্ড্য নিজের উপস্থিতির প্রমাণ দিল। নাসিম এবং নওয়াজও খুব ভাল বোলিং করেছে।'
এবছরের আইপিএলে তার নেতৃত্বে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে গুজরাত টাইটান্স। ফাইনালের সেরাও হয়েছেন হার্দিক। এ বারের আইপিএলে ১৫ ইনিংসে ৪৮৭ রান এসেছে তাঁর ব্যাট থেকে। সেই হার্দিকই গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পরে ভারতীয় দল থেকে বাদ পড়েছিলেন। কিন্তু অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তন ঘটিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি সিরিজ়ে ফের জাতীয় দলে জায়গা করে নিয়েছেন। দিল্লিতে প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে চার-ছক্কা মেরে ১২ বলে ৩১ রানও করেছেন হার্দিক।
ভারতীয় দলে ফিরে হার্দিক জানিয়েছিলেন নিজের প্রত্যাবর্তনের লড়াইয়ের কথা ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড থেকে প্রকাশিত এক ভিডিওতে। হার্দিকের কথায়, ''আইপিএল জিতে আমি খুব খুশি। কারণ এই লড়াইটা ছিল ব্যক্তিগত ভাবে আমার কাছে ছিল ফিরে আসার লড়াই। এ ছাড়াও আরও কিছু ব্যাপার জড়িয়ে ছিল। আইপিএলের প্লে-অফে গিয়ে বা ফাইনালে ট্রফি হাতে তুলে সেই মানুষগুলোকে ভুল প্রমাণ করা গিয়েছে, যাঁরা কয়েক মাস আগে আমার প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন। অনেকের মনেই আমাকে নিয়ে অনেক প্রশ্ন ছিল। আমার প্রত্যাবর্তনের আগে অনেক নেতিবাচক কথা বলা হয়েছিল আমাকে নিয়েই। তাঁরা এখনচুপ করে গিয়েছেন।''
ভারতীয় দলে ফেরার সময়ে হার্দিক বলেছেন, ''প্রতি দিন ভোর পাঁচটায় ঘুম থেকে উঠতাম। সকালে কঠোর অনুশীলন করতাম। বিকালে চারটে থেকে আবার অনুশীলন করতাম। পর্যাপ্ত বিশ্রাম যাতে নিতে পারি, সে দিকে খেয়াল রাখতাম। অনেক কিছু ত্যাগ করতে হয়েছে এই সময়। আইপিএলের আগে আমাকে এই লড়াইটা লড়তে হয়েছে। সেই লড়াইয়ের ফল ক্রিকেটার হিসেবে আমাকে তৃপ্তি দেয়।''
হার্দিক আরও বলেছিলেন, ''কাউকে উত্তর দিতে চাই না। আমি বরং অনেক গর্বিত, যে পদ্ধতি অনুসরণ করে আমি পরিশ্রমের মাধ্যমে ফের ভারতীয় দলে জায়গা করে নিয়েছি, সে ব্যাপারে।কেউ জানেন না, ভারতীয় দলের বাইরে থাকার সময়ে ছ'মাস আমি কী ধরনের পরিশ্রমে নিজেকে ডুবিয়ে রেখেছিলাম।ভোর পাঁচটায় ঘুম থেকে উঠতাম। রাত সাড়ে ন'টায় ঘুমোতে যেতাম। অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে। আইপিএলের আগে এটাই ছিল আমার প্রত্যেক দিনের লড়াই। আমি সারা জীবনই কঠিন পরিশ্রম করে বড় হয়েছি। জানতাম, পরিশ্রম করলেফল মিলবেই।''
সেই সময় থেকেই হার্দিকের নজরে ছিলো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। তার কথায়, ''প্রতিটা ম্যাচ বা সিরিজ শেষ মনে করে খেলি। তেমন গুরুত্ব দিয়েই খেলি। এখন বিশ্বকাপের জন্য প্রস্তুতি সেরে নেওয়ার সময়। টানা ক্রিকেট রয়েছে। এই সময় ছন্দ ধরে রাখা জরুরি। এই সিরিজ নিজেকে প্রকাশ করার বড় সুযোগ আমার কাছে। কারণ আইপিএলের পর ভূমিকা বদলে গিয়েছে। এখন আর আমি অধিনায়ক নেই। ব্যাটিং অর্ডারের উপরের দিকে যাওয়ার দরকার নেই। যে হার্দিককে সকলে চেনেন, আবার সেই হার্দিককে ফিরে পাওয়ার সুযোগ এটা।''
হার্দিকের এই কঠিন সময়ে পাশে পেয়েছিলেন দাদা ক্রুণাল পান্ডিয়াও। ভাইয়ের সঙ্গে প্রত্যেক দিন সকালে যেতেন অনুশীলনে। ক্রুণালও তার ভাইয়ের প্রত্যাবর্তনে খুশি। লিখেছিলেন, ''তুমি কতটা পরিশ্রম করেছ, চোখের সামনে দেখেছি। সত্যি অসাধারণ প্রত্যাবর্তন।''
এবছরের আয়ারল্যান্ড সফর করে ভারতীয় দল। সেই দলের অধিনায়ক করা হয় হার্দিককে। হার্দিকের নেতৃত্বে সেখানেও জয় পায় ভারত। অনেকেরই মতে আইপিএলে গুজরাতকে সাফল্যের সঙ্গে নেতৃত্ব দিয়েছেন হার্দিক। তাঁক নেতৃত্বের প্রশংসা করেছেন প্রাক্তন ক্রিকেটারদের অনেকেই। তেমন তারকা খচিত দল পাননি। তাও ফ্র্যাঞ্চাইজিকে প্রথম আইপিএলেই চ্যাম্পিয়ন করেছেন। অলরাউন্ড পারফরম্যান্সের পাশাপাশি দুরন্ত নেতৃত্ব দিয়েছেন। দলকে এক সুতোয় বেঁধে রাখেন সাফল্যের সঙ্গে। এ বারের আইপিএল বডোদরার অলরাউন্ডারকে নতুন করে আবিষ্কার করেছে। সেই সাফল্যেরই সুবাদেই তাঁকে আয়ারল্যান্ড সফরের নেতৃত্ব দিয়েছেন জাতীয় নির্বাচকরা।
ভারতের তারকা অলরাউন্ডার হার্দিক পান্ডিয়াকে টি-টোয়েন্টিতে একাধিক বার ভারতের ত্রাতার ভূমিকায় দেখা গিয়েছে। ব্যাটে বলে অনেক ম্যাচ উইনিং ইনিংস খেলেছেন তিনি। ক্রিকেট বিশ্ব তাঁর প্রতিভা চাক্ষুস উপলব্ধি করেছে। সেই হার্দিকের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন বিশ্ব ক্রিকেটে সর্বকালের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার শেন ওয়াটসনও। প্রাক্তন অজি তারকা এক টিভি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বেন স্টোকসকেও ছাড়িয়ে গিয়েছেন হার্দিক।
এই মাসের শুরুতে লিজেন্ডস লীগ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট খেলতে ভারতে এসেছিলেন ৪১ বর্ষীয় অজি তারকা। ওয়াটসন বলেন, "হার্দিক এই মুহূর্তে তার ক্ষমতার শীর্ষে রয়েছে। ওকে খেলতে দেখাটা একটা বিশেষ ট্রিট। আমি ফাস্ট-বোলিং অলরাউন্ডারদের দেখতে পছন্দ করি। আপনি জানেন, তারা কী প্রভাব ফেলতে পারে এবং তারা খেলার যে কোনও সময় প্রতিপক্ষের কাছ থেকে খেলাকে দূরে নিয়ে যেতে পারে, তা ব্যাট দিয়ে কিংবা বল দিয়েই হোক।"
হার্দিককে ব্রিটিশ অলরাউন্ডার বেন স্টোকসের সাথে তুলনা করেন ওয়াটসন। তবে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ভারতীয় তারকাকেই সেরা বলে সার্টিফিকেট দেন। তিনি বলেন," হার্দিককে এখন যেভাবে খেলছেন তা দেখতে সত্যিই আনন্দদায়ক এবং টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ক্ষেত্রে, হার্দিক এখন বেন স্টোকসের চেয়েও অনেক উপরে রয়েছেন। হার্দিক যেভাবে ব্যাটিং করছেন, সে যেভাবে বোলিং করছে, শেষ পর্যন্ত ব্যাট করার সময় তার বহুমুখীতা ধরা পড়ে। এই মুহূর্তে, হার্দিক স্ট্যান্ড-আউট।"
শুধু মাঠের মধ্যে নয়, মাঠের বাইরেও ছক্কা হাঁকাচ্ছেন হার্দিক পাণ্ড্য। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ছক্কা মেরে যেমন দলকে জিতিয়েছেন, তেমনই বিজ্ঞাপনের বাজারে প্রতিযোগীদের বাউন্ডারির বাইরে ফেলে দিয়েছেন ভারতীয় অলরাউন্ডার। গত ছ'মাসে তাঁর দর চড়চড় করে বেড়েছে। নতুন নতুন সংস্থা তাদের বিজ্ঞাপনের মুখ করতে চাইছেন হার্দিককে।
চোট সারিয়ে ফেরার পর থেকে বদলে গিয়েছেন হার্দিক। অনেক বেশি পরিণত। গত আইপিএলে অধিনায়ক হিসাবে গুজরাত টাইটান্সকে ট্রফি জিতিয়েছেন। ভারতীয় দলে আবার নিজের জায়গা পাকা করেছেন। ব্যাট-বল দু'ক্ষেত্রেই রোহিত শর্মাকে ভরসা দিচ্ছেন হার্দিক। সেই সঙ্গে ভরসা দিচ্ছেন বিভিন্ন সংস্থাকে। তাঁরা আগ্রহ দেখাচ্ছেন। গত ছ'বছর ধরে হার্দিকের আর্থিক বিষয় দেখভাল করে 'রাইজ ওয়ার্লডওয়াইড' নামের একটি সংস্থা। তারা জানিয়েছে, গত ছ'মাসে ভারতীয় ক্রিকেটারের ব্র্যান্ড ভ্যালু ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ বেড়েছে।
কোম্পানির এক আধিকারিক নিখিল বারদিয়া সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, ''এখন হার্দিক ১১টা ব্র্যান্ডের মুখ। তার মধ্যে প্রায় ন'টা ব্র্যান্ডের সঙ্গে দীর্ঘ চুক্তি আমাদের। আরও পাঁচটা ব্র্যান্ডের সঙ্গে চুক্তি প্রায় পাকা। আগামী দু'মাসের মধ্যে সেটা আমরা জানিয়ে দেব। এই বছরের শেষে হার্দিক প্রায় ২০টা ব্র্যান্ডের মুখ হবে।''
কিন্তু কেন হার্দিকের জনপ্রিয়তা এতটা বেড়েছে? সেই কারণও জানিয়েছেন নিখিল। তিনি বলেন, ''হার্দিকের প্রত্যাবর্তন ভারতীয় ক্রিকেটের সব থেকে বড় বিষয়। এই ফিরে আসার মধ্যে লড়াই, আবেগ জড়িয়ে আছে। হার্দিকের ব্যক্তিত্বেও একটা বড় বদল এসেছে। এখন ও অনেক বেশি শান্ত, আত্মবিশ্বাসী। এই বদলে যাওয়া হার্দিককেই সবাই চাইছে। ও মাঠে যত ভাল খেলবে, ওর ব্র্যান্ড ভ্যালু তত বাড়বে।''
ব্র্যান্ড ভ্যালু বাড়ার কথা বললেও বিজ্ঞাপনের জন্য হার্দিক ঠিক কত টাকা নেন তা জানাননি নিখিল। তবে সূত্রের খবর, কোনও সংস্থার বিজ্ঞাপনের জন্য দু'দিন শ্যুটিং করতে হলে প্রতি দিনের জন্য দেড় থেকে দু'কোটি টাকা নেন ভারতীয় ক্রিকেটার। সেই সঙ্গে ওটিটি মাধ্যমেও সক্রিয় হার্দিক। বিভিন্ন ওটিটি মাধ্যমের বিজ্ঞাপনে হার্দিককে দেখা যায়। তার জন্যও একটা বড় অঙ্কের টাকা নেন তিনি।
নিবন্ধকারঃ ঋদ্ধি রিত