তিন দশকের অভিনয় জীবন। পার করে এসেছেন পঞ্চান্ন বসন্ত। কিন্তু তিনি সামনে এলেই নার্ভের ধকধক ফার্স্ট ট্র্যাকে দৌড়োয়। নাচ, অভিনয়, রিদম, এক্সপ্রেশন আদাহ দিয়ে এখনও অডিয়েন্সকে তবাহ করেন মাধুরী শঙ্কর দীক্ষিত নেনে। দ্য ধকধক গার্ল।
মুম্বই-এর ইস্ট আন্ধেরির জে বি নগর। সেখানেই মা স্নেহলতা এবং বাবা অনন্তরাও এর সঙ্গে থাকতেন মাধুরী। সঙ্গে দুই দিদি আর দাদা। ১০০ টাকা ভাড়ার এক কামরার ফ্ল্যাট। মধ্যবিত্ত মারাঠি পরিবার। আর পাঁচটা পরিবারের চেয়ে দিন গুজরানের লড়াইটা খানিক বেশিই।
স্কুলে ব্রিলিয়ান্ট ছাত্রী। নাচের প্রতিভা অসাধারণ। কিন্তু সিনেমাকে কেরিয়ার করার কোনও প্ল্যান ছিল না। খানিকটা অর্থনৈতিক কারনেই রুপোলী দুনিয়ায় আসা। ডেবিউ ১৯৮৪ তে। প্রথম সিনেমা ‘অবোধ’। বিপরীতে কলকাতার হিরো তাপস পাল। শুরুতেই ফ্লপ। পরের ছবি ‘মানব হত্যা’। কিন্তু অভিজ্ঞতা খুব ‘সুখকর’ হয় নি।
স্টুডিয়ো ফ্লোরে নজরে পড়ে গেলেন বিখ্যাত ফটোগ্রাফার রাকেশ শ্রেষ্ঠার। রাকেশ তাঁর বাবা-মা’কে বললেন, মাধুরীর স্পেশাল ফটোসেশন করতে চান। ওঁরা সাফ জানিয়ে দিলেন অত টাকা নেই। কিন্তু এমন ‘এক্সপ্রেসিভ ফেস হারাতে’ চাইলেন না রাকেশজি। বিনা পারশ্রমিকে মাধুরীর পোর্টফোলিও শুট করে দিলেন। সেই ছবি তিনি দেখালেন মুক্তা আর্টসের সুভাষ ঘাইকে। ছবি দেখে মুগ্ধ সুভাষ বললেন, ‘মুক্তা আর্টস কো নয়া হিরোইন মিল গ্যয়ি।’
মাধুরীর বাবা-মার সঙ্গে এক্সক্লুসিভ কনট্র্যাক্ট করেছিলেন সুভাষ ঘাই। অদ্ভুত এক কাণ্ড ঘটিয়েছিলেন মিস্টার ঘাই। বিখ্যাত ‘স্ক্রিন’ পত্রিকার ৬ টা পাতা শুধু মাধুরীর জন্য বুকড।। প্রতি পাতায় মাধুরীর ক্লোজআপ। কোনোটায় চোখ, কোনোটায় ঠোঁট, কোনোটায় নাক, কোনোটায় কান। মাধুরী রাতারাতি টক অফ দ্য টাউন!
তারপর সিলভ্যার মুন জার্নি।
১৯৮৮ সালে এম নন্দার ‘তেজাব’ মাধুরীর প্রথম বড় হিট। মাধুরী’র মোহিনী বিপুল সাড়া ফেলল। ফিল্মফেয়ার পুরস্কারের জন্যে মনোনয়ন পেলেন।১৯৯৯ তে আমেরিকা প্রবাসী ডাক্তার শ্রীরাম নেনে কে বিয়ে করেন। কেরিয়ারে দীর্ঘ বিরতি।
যশরাজ ব্যানারে আদিত্য চোপড়ার ‘আজা নাচলে’ দিয়ে ২০০৭ এ কাম ব্যাক তাঁর। তারপর ‘গুলাবী গ্যাং’, ‘ঢেড় ইশকিয়া’, ‘টোটাল ধামাল’। ইন্দ্র কুমার পরিচালিত মাল্টিস্টারার 'টোটাল ধামাল' সিনেমার। এই সিনেমা দিয়ে ১৮ বছর পর একসাথে ফিরছেন 'ধক ধক' অনিল-মাধুরী জুটি।
রিলিজ হওয়া ‘কলঙ্ক’। প্রায় ২৪ বছর পর এই সিনেমায় জুটি হিসেবে কাজ করেছেন সঞ্জয় দত্ত এবং মাধুরী। মারাঠি চলচ্চিত্র ‘বাকেট লিস্ট’ এই সিনেমার জন্য এই ৫১ বছর বয়সে এসে বাইক চালানো শিখেছেন তিনি। ২০০৮ সালে ভারত সরকারের পদ্মশ্রী সম্মান পান মাধুরী।
হতে চেয়েছিলেন মাইক্রোবায়োলোজিস্ট। কিন্তু হলেন অভিনেত্রী। বলিউডের বিগেস্ট স্টার। এখনও তিনি স্বপ্ন সুন্দরী।এখনও তিনি ম্যাজিক।