চিকচিকে চোখ। ঝর্ণার মতো হাসি। কোঁকড়ানো চুল। হইহই এক মেয়ে। পর্দায় এলেই যেন উপচে পড়ে খুশি। এমনই এক মেয়ে। নাম কাজল।
গায়ের রং কালো আর ঠিক নায়িকার মতো দেখতে নয় বলে গ্ল্যামারসর্বস্য পর্দার দুনিয়ায় এই মেয়ের ভবিষ্যৎ কী হবে সেই নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ ছিল টিনসেল টাউনের।
মা তনুজা অসাধারণ সুন্দরী। সারা ভারত পাগল ছিল তাঁর জন্য। মেয়ে কি পারবে? সেই ধারণা যে কত ভুল ছিল প্রমাণ দিয়েছে সময়। কাজল শুধু ‘হিরোইন’ নন। ‘এই দেশের অলি-গলি, এমন কোনও মহল্লা নেই যেখানে খুঁজলে ‘কাজল’ পাওয়া যাবে না। কাজল’ এক ইমোশনের নাম। নব্বই দশকের সেনসেশন।
ডিভা মাধুরী, করিশ্মা গ্ল্যামারকুইন। কাজল কিন্তু শুধুই কাজল। পাশের বাড়ির মেয়ে। কান্না-হাসি-আবদারে রঙিন। ১৯ বছরের কেরিয়ার। তিরিশটারও বেশি ছবি।
কাজলের জন্ম পুরোদস্তুর সিনেমা পরিবারে। তিরিশের দশকের অভিনেত্রী-পরিচালক-প্রযোজক শোভনা সমর্থের পৌত্রী। বাবা পরিচালক সোমু মুখোপাধ্যায়। মা তনুজা।
১৯৯৮ সালে প্রথম ফিল্মফেয়ার পেয়েছিলেন। তবে নায়িকার ভূমিকায় অভিনয়ের জন্য নয়, খলনায়িকার চরিত্রে সেরা অভিনয়ের জন্য। তাঁর জীবন বদলে দিয়েছিল ‘উধার কি জিন্দেগি’। ১৯৯৮ সালে অভিনয় করেছিলেন সেই ছবিতে। তার আগে অবশ্য তিন ছবিতে অভিনয়ের অভিজ্ঞতা হয়ে গিয়েছিল। তবু এই ছবি জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল অভিনেত্রী কাজলের।
একটা সময় ভেবেছিলেন ছবি করা ছেড়ে দেবেন। মাকে বলেওছিলেন সেই কথা। একইরকম ছবি করতে করতে মনে হয়েছিল নিজের সত্যিকরের সেরাটা আর দিতে পারছেন না পর্দায়। এই ছবি সেই খিদেটা মিটিয়েছিল।
অবসরে বই পড়তে খুব ভালোবাসেন। কবিতা লেখার অভ্যাস আছে। আইকনিক স্টার হলেও লাইমলাইটের আলোর থেকে বেশি টানে নির্জন জীবন। সংসারের শান্তি। কফি আর সি-ফুড খুব প্রিয়। বিশেষ করে কাঁকড়া।
আজ তাঁর জন্মদিন। সিনেমাপ্রেমী মানুষের চোখের মণি।