সুপার পাওয়ার নেই। তবু তিনি বিশ্বের অন্যতম সেরা সুপারহিরো। তাঁর অস্ত্র তুখোড় মগজ। আর মার্শাল আর্ট। সেই দিয়ে ঘায়েল করেন শত্রুকে। আজ তিনি আশিতে পড়লেন। ব্রুস ওয়েন ওরফে ব্যাটম্যান।
১৯৩৯ সালে ব্যাটম্যানের কমিক্স প্রথম প্রকাশ। ১৯৬০- এ টিভি সিরিজ। রীতিমতো হইচই ফেলে দেওয়া টিভি সিরিজ।
পরবর্তী সময়ে শুধু টিভি নয়, সিনেমাতেও ব্যাটম্যান ম্যাজিক দেখিয়েছে। রেডিয়ো সিরিজও হয়েছিল। ভিডিও গেম এবং খেলনাতেও ব্যাটম্যান। আট থেকে আশির মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল ব্যাটম্যান মাস্ক।
গব্রুস মার্কিন শিল্পপতি। ছোটবেলায় বাবা টমাস ওয়েন এবং মা আর্থা ওয়েনকে হারান। এক আততায়ীর আক্রমনে তাঁরা নিহত হন। বাবা-মা- এর মৃত্যুর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য ব্রুস নিজেকে তৈরি করেন।
অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য তিনি মানুষ থেকে বাদুড়ের বেশ ধারন করেন। ব্যাটম্যান থাকেন গথাম সিটিতে। তাঁর কাজে সাহায্য করার জন্য তাঁর কিছু সহচরও আছে। আলফ্রেড পেনিয়ক। পুলিশ কমিশনার জেমস গর্ডন, আর রবিন। ব্যাটম্যান সুপার হিরো। কিন্তু অন্যান্য সুপার হিরোদের মত তার বিশেষ কোনও সুপার পাওয়ার নেই। শুধু আছে মগজাস্ত্র। সঙ্গে শারীরিক ক্ষমতা, মার্শাল আর্ট,আর এক অনুসন্ধানী মন। এই অস্ত্র দিয়েই ঘায়েল করে শত্রুপক্ষকে। বিজ্ঞান এবং যুক্তির প্রয়োগ তাকে বলিষ্ঠ করে তুলেছে। অপরাধ জগতের মানুষদের ব্যাটম্যান ভয় দেখায়। তার চিরশত্রু জোকার।
বব কেন এবং বিল ফিঙ্গার ব্যাটম্যানের জনক।
ব্যাটম্যানের প্রথম গল্প ‘দ্যা কেস অফ কেমিক্যাল সিন্ডিকেট’। ১৯৩৯ সালে ডিটেকটিভ কমিকসে প্রথম প্রকাশ। সেই সময় ডিটেকডিভ কমিকস ছিল সবচেয়ে জন প্রিয় কমিকস ম্যাগাজিন।
জেরি রবিনসন, ডিক স্প্রাঙ্ক এর মত মানুষদের হাতে ব্যাটম্যানের বেশ কয়েকবার পরিবর্তন ঘটে। শিল্পীভেদে বারবার বদলে গিয়েছে ব্যাটম্যান। তবে ব্যাটম্যানের সিগনেচার একি থেকে গিয়েছে। একটি কেপ, প্রায় সম্পূর্ণ মুখমণ্ডল ঢেকে রাখা একটি কেপ, বাদুড়ের মতো একজোড়া কান, বুকে একটি বাদুড়ের চিহ্ন এবং কোমরে ইউটিলিটি বেল্ট। বদলেছে পোশাকের রং-ও।কখনো কালো। কখনো ধূসর। কখনো নীলচে।
ব্যাটম্যানের সঙ্গে সামুরাই চরিত্রের বেশ মিল পাওয়া যায়। অনেকেই ব্যাটম্যানের কার্যকলাপকে ‘ভায়োলেন্স’ আখ্যা দিয়েছে। অনেকের মতেই সুপারহিরদের মারদাঙ্গা শিশুমনকে হিংসাত্মক করে তুলবে। বদলা নেওয়ার দর্শনও ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলে। কিন্তু ব্যাটম্যানকে আদ্যন্ত সাদা বা কালো কোনওটাই বলা যায় না। ভালো- মন্দ মিলিয়ে কমিক চরিত্রটি এখানেই রক্ত মাংসের হয়ে ধরা দেয় আমাদের কাছে।