বাহারি কেশের যত্ন

নারী সৌন্দর্য্যের অন্যতম একটি দিক হলো তার ঘন কালো চুল। তা সে ছোট হোক বা বড়ো। ঘন কালো চুলের মায়ায় সেই কুঁচবরণ কন্যাই হয়ে ওঠে সকলের মধ্যে মূল আকর্ষণ। কিন্তু বছরের বিশেষ কিছু সময়ে আবহাওয়া আমাদের ত্বকের বা স্বাস্থ্যের অনুকূল থাকে না। সেই সময় যেমন শরীর খারাপ হতে থাকে সেরকমই ত্বক ও চুলের নানা সমস্যাও তৈরী হতে থাকে। একজন নারী বা পুরুষের কাছে চুল উঠে যাওয়ার থেকে বড় ভয়ের আর কিছু হতে পারে না। কি তাই তো?  ধরুন, এক সময়ে আপনার একরাশ ঘন কালো চুল ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে দেখলেন সেই চুল উঠে যেতে শুরু করেছে। ধীরে ধীরে পাতলা হতে শুরু করেছে আপনার মাথার চুল। বাজার থেকে নানা হেয়ার কেয়ার প্রোডাক্ট কিনে তা ব্যবহার করলেও আশানুরূপ ফল পাওয়া যাচ্ছে না। উল্টে কিছু প্রোডাক্টের ফলে আবার চুল ওঠার সম্ভাবনা। কি প্রোডাক্ট ব্যবহার করলে চুল ওঠার সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে তা মাথায় আসছে না তো? চলুন সেই পথের খোঁজ করা যাক আজ.....

পুজা-অর্চনার জন্য সকলের বাড়িতেই থাকে কর্পূর। অনেক সময় মিষ্টিজাতীয় জিনিস তৈরির জন্যেও ব্যবহৃত হয় কর্পূর। সেই কর্পূরকেই যদি চুলের কাজে লাগানো যায় তাহলে কেমন হয়? ভাবছেন তো কিভাবে? কর্পূর হলো অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি ফাঙ্গাল ধর্মযুক্ত একধরণের বস্তু। কর্পূর গাছের ছাল থেকে প্রাপ্ত তেল থেকে তৈরী কর্পূর ত্বক থেকে চুল সবকিছুর জন্যই প্রভূত উপকার সাধন করে থাকে। বিভিন্ন রোগ নিরাময়ের ক্ষেত্রেও প্রাচীনকাল থেকেই আয়ুর্বেদিক ওষুধ হিসেবে কর্পূরের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। চলুন এবার জানা যাক কিভাবে ব্যবহার করলে কর্পূরের ব্যবহারে চুলের স্বাস্থ্য ফিরে পাওয়া যাবে।

প্রথমেই বলে রাখা ভালো চুল উঠে যাওয়ার পিছনে নানারকম কারণ থাকতে পারে| কিছু ক্ষেত্রে তা ভয়াবহ আকার ধারণ করে| অনেকক্ষেত্রে দেখা যায় চুল উঠতে উঠতে টাক পড়ে যায়| সেইসব সমস্যা কে দুরে হটানোর জন্য কর্পুর বা কর্পুর তেল ব্যবহার করা যেতে পারে| এর জন্য যেসব পদ্ধতি ফলো করতে হবে তা হলো-

১) একটি কাঁচা ডিমের সাথে কর্পুরের তেল, মিশিয়ে মাথায় মাখুন| বিশেষ করে চুলের গোড়ায় এই মিশ্রণটি লাগিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট রাখুন| তারপর কোনো ভেষজ শ্যাম্পু দিয়ে মাথা ধুয়ে ফেলুন| এর ফলে চুল আগের থেকে বেশি শক্ত হবে|

২) চুল উঠে যাওয়া এবং টাক পড়ার সমস্যা থেকে বাঁচতে সমপরিমাণ নারকেল তেল ও কর্পুরের তেল একসাথে মিশিয়ে নিন| এই তেলের মিশ্রণ মাথায় ঘসে ঘসে লাগান| খেয়াল রাখবেন এই তেল যেন চুলের গোড়া পর্যন্ত পৌছায়। এই তেল মাথায় রাখেবন ১৫ থেকে ২০ মিনিটের জন্যই। তারপর শ্যাম্পু করে নিন ভালো করে যাতে তেলের অবশিষ্ট অংশও চুলে না থেকে যায়। এর ফলে যেমন টাক পড়ার হাত থেকে বাঁচবেন সেরকমই এই তেলের মিশ্রনের রেগুলার ব্যবহারে চুলের বৃদ্ধি সূচিত হবে। 

৩) দই, কর্পূরের তেল এবং ডিমের সাদা অংশ একসাথে মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরী করুন। এই প্যাক প্রতি সপ্তাহে একবার করে ব্যবহার করতে পারলে চুলের গ্রোথ খুব ভালো হয়।

৪) পরিবেশের দূষণের কারণে চুল রুক্ষ হয়ে যায় সেই ক্ষেত্রে নারকেল তেল বা অলিভ তেলের সাথে কর্পূর তেল মিশিয়ে মাথায় মালিশ করলে চুল নরম হয়|

সবসময় পরিবেশের কারণে বা আবহাওয়ার কারণে চুল উঠে যাবে এমনটা নাও হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে ওষুধের প্রভাবেও চুল পড়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে। সেইসব ক্ষেত্রেও এইভাবে প্রাকৃতিক উপায়ে চুলের ঘনত্ব বৃদ্ধি করা যেতে পারে।

 

 

 

 

 

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...