সোনালী বালুকাবেলা ছুঁয়ে যায় ঢেউ। ভিজে যায় বালি। দাগ পড়ে পায়ের। ছোট ছাপ-বড় ছাপ। পাশাপাশি-একসঙ্গে। হাঁটি হাঁটি পা পা'। নতুন ছবি নিয়ে আসছেন পরিচালক অর্ণব মিদ্যা। মুখ্য ভূমিকায় অভিনেত্রী রুক্মিণী মৈত্র। সেল্যুলয়েড ফিল্মস প্রযোজনায় এবং মানবতা কনসালট্যান্ট প্রাইভেট লিমিটেড সহ প্রযোজনায় আসতে চলেছে এই ছবি।
‘হাঁটি হাঁটি পা পা’ এক চিরন্তন ভালোবাসার গল্প। তবে সে ভালোবাসা সমবয়সী নারী পুরুষের প্রেম নয়! বরং প্রেমের সম্পর্কের বাইরেও যে প্রতিটা সম্পর্কেই গভীর এক আত্মিক টান, দায়িত্ব বোধ,পারস্পরিক শ্রদ্ধা থাকে সেই ভালোবাসার গল্প শোনাবে ‘হাঁটি হাঁটি পাপা’।
যে সম্পর্কগুলো সৃষ্টির আদি থেকে আজ পর্যন্ত আমাদের সবার জীবনে সবথেকে বেশী গুরুত্বপূর্ণ অথচ সবথেকে বেশী অবহেলিত উপেক্ষিত। যে গাছের গোড়ায় ভালোবাসার সার জল সরবরাহ হয় ঐশ্বরিক ভাবে,যে গাছ অলক্ষ্যে অযত্নেও ফুল ফল দিয়ে চলে, সে গাছের কথা আমরা যেমন ভুলে যাই... ঠিক তেমনই জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ যেসব সম্পর্কগুলো সেইসব সম্পর্কেও রোজ রোজ ভালোবাসার কথা বলা হয় না বহুকাল।
জীবনের টানাপোড়েনে 'আছে কিন্তু নেই' এর মতো ছায়া হয়ে থেকে যাওয়া সম্পর্কের ওপর থেকে ধুলোবালির চাদর আলতো হাতে সরিয়ে, আদর যত্ন ভালোবাসার আলপথ ধরে হেঁটেই হাঁটি হাঁটি পা পা করে পৌঁছতে হয় এই গল্পের চরিত্রদের কাছে। এই গল্পের চরিত্রগুলো যেন রোজকার ডালভাতের তরল জীবনে ঠিক হাসি কান্না সুখ দুঃখের পাঁচমেশালি তরকারি, যারা তাতে ভালোবাসার লবণ টুকু কম নয় আবার বেশীও নয় একদম ঠিক ঠিক মাপে মেশাতে পারে কিনা সেই ভারসাম্যের পরীক্ষার মুখে এসে বারবার দাঁড়ায়।“
ছবির অন্যতম মুখ্য চরিত্রে দেখা যাবে রুক্মিণী মৈত্রকে। ছবি প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, “হাঁটি হাঁটি পা পা’-র গল্প যখন শুনি তখন কেন জানি না, গল্পটা আমাকে ভীষণ ভাবে ছুঁয়ে যায়। তারপর চিত্রনাট্য, সংলাপ নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা, কাঁটা ছেঁড়ার পরে আজ আমার সত্যিই খুব ভালো লাগছে যে দর্শকদের আমরা এইরকম একটা ছবি উপহার দিতে চলেছি। তাছাড়া অর্ণবের সঙ্গে কথা বলে খুব ভালো লেগেছে , সংবেদনশীল মানুষ, আর আমাদের গল্পটা যেহেতু সম্পর্কের গল্প, আমার বিশ্বাস ছবিটা ও খুব ভাল বানাবে। ওর আগের ছবিগুলোও আমার ভালো লেগেছে।’ ছবি যে দর্শকদের ভাল লাগবেই সে বিষয়ে আশাবাদী তিনি।
আসন্ন ছবি নিয়ে পরিচালক অর্ণব মিদ্যা জানিয়েছেন, “হাঁটি হাঁটি পা পা-র গল্প, চিত্রনাট্য নিয়ে আমরা দীর্ঘ দিন ধরেই কাজ করে চলেছি। গল্পটা আসলে রুক্মিণীকে ভেবেই লেখা। একটা সম্পর্কের গল্পে যেমন হাসি-কান্না, ভালোলাগা-ভালোবাসা থাকে, এই গল্পটা আসলে তারই যথাযথ সংবেদনশীল মিশ্রণ। গল্পটার চিত্রনাট্য, সংলাপ লেখার সময় সেই সংবেদনশীলতারই পরিচয় দিয়েছেন কাহিনীকার প্রিয়াঙ্কা পোদ্দার।
রুক্মিণীকে যখন গল্পটা শোনাতে যাই, ওনার চোখেমুখে সেই অভিব্যক্তিগুলোই দেখতে পাই, যেগুলো যে কোনও পরিচালক সিনেমা দেখার শেষে দর্শকদের থেকে দেখতে চান। গল্পটা শুনে রুক্মিণীর রাজি হওয়া, তারপর একসাথে দিনের পর দিন চিত্রনাট্য আর সংলাপ পরিমার্জনা, গল্পটাকে দর্শকদের মনের কাছাকাছি পৌঁছে দিতে পারবে বলেই আমাদের বিশ্বাস। আর রুক্মিণী যেভাবে চরিত্রের প্রয়োজনে একটার পর একটা ছবিতে নিজেকে ভেঙেচুরে দর্শকদের সামনে মেলে ধরছেন, এই ছবিতেই সেইরকমই কিছু হতে চলেছে। শুধু তাই নয়, এই ছবিতে আরও অনেক সারপ্রাইজ আছে, যা ক্রমশ প্রকাশ্য।“