শ্রীকৃষ্ণের এই মন্দিরে মনস্কামনা পূরণ হলে হাতি দান করেন ভক্তরা

ভগবান বিষ্ণুর অষ্টম অবতার হলেন শ্রীকৃষ্ণ। আর বিষ্ণুর শ্রীকৃষ্ণ রূপেরই পুজো করা হয় কেরলের গুরুভায়ুর কৃষ্ণ মন্দিরে। তবে শ্রীকৃষ্ণ এখানে কান্নান, উন্নি-কান্নান, উন্নি-কৃষ্ণন, বালকৃষ্ণন ও গুরুভায়ুরাপ্পান নামে পরিচিত। ঐতিহাসিকদের ধারণা, এই মন্দিরটি প্রায় হাজার বছর পুরনো। আর মন্দিরের আরাধ্য দেবতার বয়স প্রায় তিন হাজার বছর। আদি শঙ্করাচার্যের নির্দেশিত পুজো পদ্ধতি মেনেই ভগবান শ্রীকৃষ্ণের পুজো করা হয় এই মন্দিরে। প্রাচীন এই মন্দিরে প্রচুর পরিমাণে সোনা সঞ্চিত রয়েছে। মন্দিরের ধ্বজস্তম্ভটি সম্পূর্ণ সোনায় মোড়া। বৈষ্ণবদের গুরুত্বপূর্ণ তীর্থস্থানগুলির মধ্যে অন্যতম হল গুরুভায়ুর কৃষ্ণ মন্দির। তবে ১০৮টি দিব্য দেশমের তালিকায় এই মন্দিরের নাম নেই।

entrance

কেরলের ইতিহাসে খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল এই মন্দির। ১৯২১ সালে ইংরেজ ও সামন্ত রাজাদের বিরুদ্ধে বিপ্লবের পথ বেছে নিয়েছিলেন প্রজারা। সেই সময় প্রজাদের হাত থেকে বাঁচতে ভালিয়া রাজা গুরুভায়ুর মন্দিরে এসেছিলেন। তারপর প্রাণ ও রাজ্য বাঁচানোর জন্যে ভগবানকে তিনি একটি হাতি উপহার দিয়েছিলেন। যার নাম ছিল কেশবন। কেরলে 'আনায়োট্টম' নামক একটি হাতির দৌড়ের প্রতিযোগিতা হত যেখানে প্রত্যেক বছর জিতত গোবিন্দন নামের একটি হাতি। তাই তার দৌড় দেখতে প্রচুর মানুষের ভিড় জমাতো প্রত্যেক বছর। কিন্তু ১৯৩০ সালে সকলকে আশ্চর্য করে এই মাত্র ১৮ বছর বয়সী কেশবন। অনেকের বিশ্বাস ভগবানের আশির্বাদেই কাজ করতে পেরেছিল কেশবন।

elephant

প্রত্যেক বছর জাঁকজমক ভাবে জন্মাষ্টমী পালিত হয় এই মন্দিরে। সকাল থেকে পুজা ও মন্ত্রপাঠ শুরু হয়ে মন্দিরে। তবে মন্দিরে প্রবেশ করার আগে ভক্তদের কিছু নিয়মাবলী অনুসরণ করে চলতে হয়ে। পুরুষদের মালাবার ধুতি পরনে উত্তরীয় পরতে হবে আর মহিলাদের শাড়ি বাধ্যতামূলক। এছাড়াও বহুকাল ধরেই হাতি দানের প্রথা রয়েছে। ভক্তরা হাত দান করেন ভগবানের উদ্দেশ্যে।

কেরলের জনপ্রিয় এই মন্দিরে পুজো দিয়েছিলেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কেরল রাজ্যের গুরুভায়ুর নগরে অবস্থিত গুরুভায়ুর মন্দির। কেরলের রাজধানী কোচি থেকে এই মন্দিরের দূরত্ব প্রায় ৯৩ কিলোমিটার। জন্মাষ্টমীর সময় দেশের নানা প্রান্ত থেকে বহু মানুষের ভিড় হয় এখানে।   

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...