গুগল ডুডলের শ্রদ্ধার্ঘ্যে ভারতের প্রথম মহিলা ‘সার্জেন’ ও বিধায়ক

ডঃ মুথুলক্ষ্মী রেড্ডি। তিনি ছিলেন ভারতের প্রথম মহিলা চিকিৎসকদের মধ্যে অন্যতম, এমনকি দেশের প্রথম মহিলা বিধায়কও তিনি। দেশের ‘প্রথম মহিলা’ হিসেবে অনেক কৃতিত্বেরই অধিকারী তিনি। তাঁর ১৩৩তম জন্মদিনে বিশেষ শ্রদ্ধার্ঘ্য জানালো ‘গুগল-ডুডল’

 ব্রিটিশ শাসিত ভারতে নারীদের সামাজিক অবস্হান একেবারেই সহজ ও সুবিধাজনক ছিল না, তা আর নতুন করে বলার দরকার পড়েনা। অনেক প্রতিকূলতার বিপক্ষে গিয়ে রেড্ডি তার শিক্ষাগ্রহন সম্পূর্ন করেছিলেন। ১৮৮৬ সালে তামিলনাড়ুর পুডুকোট্টাই-এ জন্মগ্রহন করেন মুথুলক্ষ্মী রেড্ডি।

মাদ্রাস মেডিকেল কলেজের প্রথম ছাত্রী ছিলেন ডঃ রেড্ডি। নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন সাধারন মানুষের সেবায় এবং বর্নবৈষম্য ও শ্রেণীবিভাজনের বিরুদ্ধে। তামিলনাড়ুর সরকার সোমবার ঘোষনা করেছে  সরকারী হাসপাতালগুলোয় তাঁর জন্মবার্ষিকীতে ‘হসপিটাল ডে’ পালন করা হবে প্রতি বছর।

১৯১২সালে তিনি শিক্ষাগ্রহন শেষ করে ভারতের প্রথম মহিলা ডাক্তারদের মধ্যে একজন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। ১৯১৮ তে তিনি স্থাপন করেছিলেন ওম্যানস্ ইন্ডিয়ান অ্যাসোশিয়েশান এবং মাদ্রাস লেজিসলেটিভ কাউন্সিলের সহসভাপতি পদে নিযুক্ত হন। এই দ্বায়িত্ব গ্রহনের পরই মেয়েদের বিবাহযোগ্য হওয়ার বয়সের সীমা তিনি বাড়িয়ে দেন এবং অনৈতিক ট্রাফিক নিয়ন্ত্রন বিল ও দেবদাসী বিলোপের বিল পেশ করেন।

এরপর তিনি লবন সত্যাগ্রহ আন্দোলনে যোগদান করার জন্য কাউন্সিল থেকে পদত্যাগ করেন। ১৯৩০ সালে তিনজন দেবদাসী তাঁর বাড়ীতে এসে উপস্থিত হলে আর্ত মহিলাদের জন্য আবাসন তৈরির জন্য প্রেরনা পান তিনি। স্থাপন করেছিলেন ‘অ্যাভাই হোম’ তাঁর মতো শিক্ষানুরাগী মহিলাদের জন্য। ১৯৫৪ সালে চেন্নাইতে স্থাপন করেছিলেন ক্যানসার ইনস্টিটিউট, ১৯৫৬ তে তিনি পদ্মভূষন উপাধী লাভ করেন। ৮১ বছর বয়সে ১৯৬৮ সালে তাঁর জীবনাবসান ঘটে।

দি হিন্দু পত্রিকায় স্বাধীনতা দিবসের দিন মেয়েদের ভূমিকা নিয়ে এক প্রবন্ধ প্রকাশ পেয়েছিল সেখানে তিনি বলেছিলেন "আ্ধুনিক বিশ্বে কোলাহল এবং যুদ্ধপরিস্থিতিতে ভারতীয় নারীদের এক গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রয়েছে । তাঁদের দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং ধর্মীয় বিশ্বাস,মাতৃত্বের দৃঢ় অনুভূতি শান্তি ,ভালোবাসা এবং একতার বার্তাবাহক হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। এই আদর্শ মহাত্মা গান্ধী প্রচার করেছিলেন হিংসার আগ্রাসন থেকে পৃথিবীকে বাঁচানোর স্বার্থে। ভারতীয় মহিলারাই সাম্যতার আদর্শ নিজেদের মধ্যে ধারন করে পৃথিবীকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারে।"

ডুডুলটিতে দেখা যাচ্ছে ডঃ মুথুলক্ষ্মী রেড্ডি তরুন মহিলাদের নির্দেশ দিচ্ছেন। ছবিটা এঁকেছেন বেঙ্গালুরুর শিল্পী অর্চনা শ্রীনিবাসন। মথুলক্ষ্মী একজন মহিয়সী ছিলেন, যিনি ভারতীয় মহিলাদের জন্য এক উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কল্পনা করতে পেরেছিলেন।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...