প্রিয় গিবসন গিটারকে আদর করে ডাকতেন ‘লুসিল’ নামে, এক সুরে বেঁধেছিলেন জ্যাজ আর ব্লুজ

‘লুসিল’, ‘সুইট ব্ল্যাক অ্যাঞ্জেল’ আর  ‘রক মি বেইবি’ গানের শিল্পী; জ্যাজ এবং ব্লুজ মিউজিক মাস্টার- বি বি কিং। ৮৯ বছর বয়সে চলে গিয়েছেন 'দ্য কিং অব দ্য ব্লুজ'। ১৭ সেপ্টেম্বর তাঁর ৯৪তম জন্মদিন উপলক্ষে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দিনের মতো এদিনও বিশেষ ডুডল তৈরি করল গুগল। তাঁর প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্যে তাঁরই কম্পোজিশন ‘দ্য থ্রিল ইজ গন’ গানের মাধ্যমে একটি বিশেষ মি স্লাইড শো তৈরি করেছে তারা।

বলা হয়, বি বি কিংয়ের গিটারেই ব্লুজ সঙ্গীতধারা কৃষ্ণ-আমেরিকানদের গানের আসর থেকে মূলধারায় আসে এবং এক পর্যায়ে এরিক ক্ল্যাপটন, স্টিভ রেসহ রক শিল্পীদের পুরো একটি প্রজন্মকে তিনি অনুপ্রাণিত বা প্রভাবিত, যাই বলা হোক, তাইই করেছিলেন নিজের আলোয়।

নিজের প্রিয় গিবসন গিটারকে আদর করে বি বি কিং ডাকতেন ‘লুসিল’ নামে। সেই গিটারের তারেই তিনি এক সুরে বেঁধেছেন জ্যাজ আর ব্লুজ। মৃত্যুর কিছু দিন আগে পর্যন্ত বছরে একশটির বেশি কনসার্ট মাতিয়েছেন এই শিল্পী।

যুক্তরাষ্ট্রের মিসিসিপিতে জন্ম নেওয়া কিং মঞ্চে গিটার বাজানো শুরু করেন গত শতকের চল্লিশের দশকে। এই খামারকর্মী সঙ্গীতশিল্পী জীবনের পঞ্চদশ গ্র্যামিটি ঝুলিতে ভরেন ২০০৯ সালে, ‘ওয়ান কাইন্ড ফেভার’ অ্যালবামের জন্য। হ্যাঁ, সারা জীবনে তিনি সর্বমোট ১৫ বার গ্রামি অ্যাওয়ার্ড জয় করেন

রোলিং স্টোন ম্যাগাজিন তাদের সর্বকালের সেরা ১০০ গিটারবাদকের যে তালিকা প্রকাশ করেছিল, তাতে জিমি হেন্ড্রিক্স ও ডুয়ান অলম্যানের পরেই ছিল বি বি কিংয়ের নাম। ব্লুজ ফাউন্ডেশন হল অফ ফেইম এবং রক অ্যান্ড রোল হল অফ ফেইমে তিনি জায়গা করে নিয়েছেন একইসঙ্গে।

সঙ্গীত জীবনের শুরুর দিকে মূলত কৃষ্ণাঙ্গরাই ছিল বি বি কিংয়ের শ্রোতা। কিন্তু হৃদয়গ্রাহী কণ্ঠ আর মেধা তাকে দ্রুত পৌঁছে দেয় বিশ্বজোড়া আরও বহু শ্রোতার কাছে, তার গান উঠে আসে টপ চার্টে। 

এরিক ক্ল্যাপটন ও স্টিভ মিলারের মতো কম বয়সী শিল্পীদের সঙ্গে কাজের মধ্য দিয়ে ১৯৬০ এর দশকে নতুন এক প্রজন্মের শ্রোতাদের সঙ্গে পরিচিত হন কিং। সে সময় তার ‘দ্য থ্রিল ইজ গন’ দারুণ জনপ্রিয় হয়। এরপর আসে ‘লাইভ অ্যাট কাউন্টি কুক জেইল’ ও ‘বি বি কিং ইন লন্ডন’-এর মতো অ্যালবাম।  

ব্রিটিশ ব্যান্ড ইউটুর সঙ্গে কাজের মধ্য দিয়ে আশির দশকের শেষভাগে আবারও আলোচনায় আসেন বি বি কিং। আর নতুন শতকের শুরুতে কিংয়ের বয়স যখন ৭৫, ক্ল্যাপটনের সঙ্গে তার ‘রাইডিং উইথ দি কিং’দারুণ ব্যবসায়িক সাফল্য পায়।   

১৯৯৫ সালে প্রকাশিত ‘দি হিস্ট্রি অফ দি ব্লুজ’ বইয়ে সংগীত সমালোচক ফ্রান্সিস ডেভিস লিখেছেন,

আজ ব্লুজ আর কিংয়ের নাম যেন সমার্থক; যেমনটি ছিল লুই আর্মস্টং আর জ্যাজ। কিংকে শুনতে হলে আপনাকে ব্লুজভক্ত না হলেও চলবে। 

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...