কনজারভেশন এবং রেস্টোরেশন | জিয়ো বাংলা শারদ সম্মান ২০১৯

জিয়ো বাংলা শারদ সম্মান ২০১৯ অনুষ্ঠানের পুজোর আড্ডা উপলক্ষে জিয়ো বাংলার স্টুডিওতে উপস্থিত ছিলেন গল্ফগ্রীণ শারদোৎসব কমিটির সদস্যবৃন্দ। সঞ্চালক নবনীতার সাথে আড্ডার ছলে তারা ভাগ করে নিলেন তাদের ক্লাবের পুজো সম্পর্কে নানা কথা। তারা জানালেন, চারদিকে থিম পুজো ক্রমশ বেড়ে চললেও সম্পূর্ণ থিমের উপর ভরসা করতে নারাজ তারা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ক্লাবের সদস্য শ্রী তপন দাসগুপ্ত জানালেন,  অল্প থিম এবং অল্প সাবেকিয়ানার মেলবন্ধনেই এবছরের পুজোর ভাবনাচিন্তা করেছেন এই পুজো কমিটি। সেইমতো প্রতিমাতেও থাকছে হালকা থিমের ছোঁয়া। ক্লাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এইবছর চতুর্থীর দিন মণ্ডপের দ্বার উন্মুক্ত করার ইচ্ছে আছে ক্লাব কর্তৃপক্ষের।

ক্লাবের সদস্য জানিয়েছেন, পুজোর এই কটাদিন প্রতিদিন সন্ধ্যায় বিচিত্রানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় পূজা কমিটির তরফ থেকে জানা। এই পুজোর সাথে যুক্ত থাকেন স্বনামধন্য অভিনেতা শ্রী সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় থেকে শুরু করে শ্রীমতি ব্রততী বন্দোপাধ্যায়, কলকাতার প্রাক্তন শেরিফ ডঃ অমলকুমার চক্রবর্তী প্রমুখ বিশিষ্ট মানুষজন। জিয়ো বাংলার পুজোর আড্ডা  অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রতিমাশিল্পী এবং থিমমেকার শ্রী শুভেন্দু মন্ডল। তিনি জানালেন, এই ক্লাবের এই বছরের থিম 'কনজারভেশন এবং রেস্টোরেশন' অর্থাৎ ‘সংরক্ষন ও পুণরর্পন’। আগেকারযুগের চিত্রকলার সংরক্ষণই মূল লক্ষ্য এই ক্লাবের। অজন্তা-ইলোরা গুহাচিত্র থেকে শুরু করে মহাভারতের যুগের নানা চিত্রকলা তুলে ধরা হচ্ছে এইবারের পূজামণ্ডপে।

শিল্পী জানালেন, হলুদ রঙের বেলেপাথর দিয়েই মূলত তৈরী হচ্ছে এবারের মণ্ডপ এবং মণ্ডপের অভ্যন্তরের বিভিন্ন চিত্রকলা। প্রতিমার ক্ষেত্রে চমক থাকছে বলেই জানিয়েছেন শিল্পী। শিল্পীর মতে, আগেকার দিনে যেই ধরণের মাতৃমূর্তি দেখা যেত সেই ধরণের মূর্তির দেখা মিলতে পারে মণ্ডপে। শিল্পী আরও জানান, এক্ষেত্রে মা’কে অসুরের থেকে অনেক বড় দেখানো হয়েছে। শুভশক্তির সামনে আসুরিক শক্তির যে কোনো অস্তিত্ব নেই তা বোঝানোই একমাত্র লক্ষ্য। ক্লাবের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন ক্লাবের একজন সদস্যা ঝুমা বিশ্বাস। তিনি জানালেন, পুজোর পাশাপাশি এই ক্লাবের পক্ষ থেকে সারাবছর ধরে নানা সামাজিক কাজকর্ম চলতে থাকে। ডেঙ্গু প্রতিরোধ করার জন্য রাস্তার ধারে ব্লিচিং পাউডার ছড়ানো থেকে শুরু করে পথকুকুরদের বন্ধ্যাত্বকরণ প্রভৃতি কাজকর্ম করা হয় এই ক্লাবের পক্ষ থেকে। পুজোর কটাদিন বাড়িতে রান্না হয়না বললেই চলে,  জানালেন ক্লাবের সদস্যবৃন্দ। সপ্তমী, অষ্টমী এবং নবমী, এই তিন দিন থাকছে ভোগের আয়োজন। এতকিছুর মাঝেও দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার কথা ভোলেননি ক্লাব কর্তৃপক্ষ। দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে মণ্ডপে বসানো হচ্ছে সিসিটিভি। এছাড়াও বয়স্কমানুষ এবং বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন মানুষদের জন্য থাকছে হুইলচেয়ারের ব্যবস্থাও। হঠাৎ কোনো মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়লে তার দেখভালের জন্য মণ্ডপ প্রাঙ্গনেই উপস্থিত থাকবেন একজন চিকিৎসক এবং একজন নার্স।

ক্লাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জগন্নাথ দেবের স্নানযাত্রার দিন মাননীয় মন্ত্রী শ্রী অরূপ বিশ্বাস মহাশয় এবং প্রখ্যাত অভিনেত্রী শ্রীমতি ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তর হাত ধরে প্রতিস্থাপিত হয়েছিল খুঁটি। সেই দিন থেকেই শুরু তারপর টানা চলেছে পুজোর মণ্ডপসজ্জার কাজ। জিয়ো বাংলা এই ক্লাবের গর্বিত ডিজিটাল পার্টনার। আদিকালের চিত্রকলা এবং সেইসময়ের ভাস্কর্যকে আজকের দিনে দাঁড়িয়ে একবার প্রত্যক্ষ করতে চাইলে অবশ্যই পৌঁছে যান গল্ফগ্রীণ শারদোৎসব কমিটির পূজামণ্ডপে। গল্প গ্রীন যাওয়ার বহু রাস্তা থাকলেও সবথেকে সহজ হল দমদম বা কবি সুভাষগামী যে কেনও মেট্রো-তে উঠে নামতে হবে রবীন্দ্র সরবর, সেখান থেকে অটো ধরে লর্ডসের মোড়, সেখান থেকে আরও একটি অটো বা সামাণ্য হাঁটা পথেও পৌঁছে যেতে পারেন এই পূজা মন্ডপ।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...