“বছর এগারো আগে, পরিবারের লোকেরা আমাদের বাড়িকে নতুন ভাবে সাজানোর পরিকল্পনা করেন। বাড়ির উপর আরেকটি তলা বানানোর পরিকল্পনা করেন তাঁরা। আমি তখন অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। মনে আছে, বাড়ির সামনে বিস্তর সিমেন্ট আর বালি। তার সাথে নানা যন্ত্রের শব্দ। আমাদের প্রায় প্রতিদিনই শরীর খারাপ হত। আমাদের কুকুরের শরীরেও নানা রোগ লেগেই থাকত। এমনকি পাশের আম গাছটিও শুকিয়ে কাঠ হয়ে গিয়েছিল। ছেলেবেলাতেই আমি জেনেছিলাম নির্মীয়মাণ বহুতল কীভাবে পরিবেশকে দূষিত করতে পারে।”
-গোয়ার আর্কিটেক্ট ডিন ডি’সুজা বলছিলেন এমনই। সেই চিন্তা থেকেই পরিবেশ বান্ধব বাড়ি বানানোর পরিকল্পনা করেন তিনি। গোয়ার স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে এভাবেই পরিবেশ বান্ধব বাড়ি বানিয়ে চলেছেন তিনি।
“আমরা মূলত পরিবারগুলির সাথে কথা বলে, পছন্দমত পরিবেশ সহায়ক কাঁচামাল সংগ্রহ করি। এভাবেই একটা পরিবেশ বান্ধব প্রক্রিয়ায় সামিল হই ক্রমশ আমরা।”
মুম্বইয়ের জে জে কলেজ থেকে পাশ করে বেরিয়ে ৩৫ বছর পর নিজের জন্মস্থান গোয়াতে ফেরেন তিনি। এখনও পর্যন্ত ভারতের প্রায় ৩৫০টি প্রোজেক্টে কাজ করেছেন তিনি। এগুলির মধ্যে ৩০০টি বসবাস উপযোগী বাড়ি, ভারতের ৪০টি হোটেলে কাজ করেছেন তিনি।
২০০১-এ ‘মোজেইক’ নামের একটি আর্কিটেকচার ফার্ম বানান তিনি। এই ফার্মের কাজের সুবাদেই যাদের সঙ্গে কাজ করা শুরু করেন তিনি, তাঁরা শুধু তাঁর সহযোগী হিসেবেই কাজ করেননি, বরং নিজেদের বাড়িগুলিকেও পরিবেশ বান্ধব উপায়ে বানাতে শুরু করেন। গাছের শুকিয়ে যাওয়া কাঠকে যেমন ব্যবহার উপযোগী করে তুলে ফেলেছেন তাঁরা, তেমনি সাইকেলের হাতল থেকে বানিয়ে ফেলেছেন বেসিন।
“বাড়ি বানানো উচিত বাড়ির লোকেদের। কন্ট্রাক্টরদের তো নয়ই। আমরা পরিবেশ বান্ধব উপায়ে সেই চেষ্টাই করেছি। মানুষের একতাই আমাদের লক্ষ্য। বিচ্ছিন্নতা নয়। সেই লক্ষ্যেই এগিয়ে চলেছি আমরা।”