প্রথম দেখায় মনে হতে পারে চাকলা করে কাটা মৌচাক। ভাজা হলুদ রঙের গা। আসলে এক মিঠাই। দেখে যাই মনে হোক, বেশিক্ষণ অপেক্ষা করা যায় না। খেয়ে নিতে হয় সঙ্গে সঙ্গে।
বহু শতাব্দী আগে মুঘলদের সূত্রে এদেশে প্রবেশ করে ঘেওয়ার। মধ্যপ্রাচ্যের রাঁধিয়েরা মুঘল হেঁশেলে তৈরি করতেন এই মিঠাই। সেখান থেকেই ছড়িয়ে পড়ে। যদিও এই তথ্যও অনুমান ভিত্তিক। ঘেওয়ারের আসল জন্মস্থান প্রসঙ্গে আর একটি সূত্র বলে এই মিষ্টির উৎপত্তি রাজস্থানে। পরে হরিয়ানা, দিল্লি, গুজরাট, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশে ছড়িয়ে পড়ে।
ঘেওয়ার জনপ্রিয় তার স্বাদের জন্য। স্বাদের মতোই জনপ্রিয় ঘেওয়ার তৈরির পদ্ধতিটি। দুধ আর ময়দা দিয়ে একটি পাতলা মিশ্রন তৈরি করা হয়। তারপর সেটি বিশেষ কায়দায় ঘিয়ে ভাজা হয়। পরে চিনির রসে ভিজিয়ে রাখা হয়। ওপরে থাকে মেওয়ার আস্তরন।
মাটির উনুনে কয়লার আঁচে তৈরী হয় ঘেওয়ার। স্বাদ-গন্ধের ঐতিহ্য বজায় রাখার জন্য আজও বদল হয়নি সেই ধারার।
রাজস্থানী মিঠাই হিসেবেই ঘেওয়ার বিখ্যাত বাকি দেশে। রাজস্থানী ও উত্তর ভারতীয় উৎসব অসম্পূর্ণ ঘেওয়ার ছাড়া।
ঘেওয়ার নানারকমের হয়ে থাকে। মালাই ঘেওয়ার, মেওয়া ঘেওয়ার, রাবড়ি ঘেওয়ার। বিহারেও এক ধরনের ঘেওয়ার প্রচলিত আছে। একেবারে সেখানকার নিজস্ব রীতিতে।
আবহাওয়া যখন শুকনো থাকে তখন তৈরি করে রাখা হয়। চিনির রসে না ফেলা শুকনো ঘেওয়ার অনেকে সারা বছরের জন্য সংরক্ষণ করে রেখে দেন।
গাঙ্গোর আর তেজ উৎসবে মহিলারা তাঁদের উপবাস ভঙ্গ করেন ঘেওয়ার দিয়ে। বিবাহিত মহিলাদের পিত্রালয় থেকে উৎসব উপলক্ষে পাঠানো হয় ঘেওয়ার। এই প্রথাকে বলা হয় ‘সিনঝারা’।
জয়পুরের ঘেওয়ার পৃথিবী বিখ্যাত। অন্যান্য দেশেও রফতানি হয় নিয়মিত। উৎসবের মরসুমে রফতানির পরিমান আরও বেড়ে