শুরু হতে চলেছে কলকাতা থেকে গঙ্গাসাগর জাহাজ পরিষেবা। আশা করা হচ্ছে বড়দিনের আগেই এই পরিষেবা চালু হয়ে যাবে। রোজ সকাল সাতটায় জাহাজ ছেড়ে সাড়ে দশটার মধ্যে সাগরে পৌঁছে যাবে। বিলাসবহুল জাহাজে দেশ-বিদেশের পর্যটকেরা কলকাতার মিলেনিয়াম পার্ক থেকে জাহাজে চড়ে সাগরের কচুবেড়িয়া ঘাটে পৌঁছবেন। সুন্দরবনগামী পর্যটকদের পৌঁছে দেওয়া হবে নামখানায়। ফেরার সময় জাহাজটি কচুবেড়িয়া থেকে ছাড়বে বিকেল তিনটে থেকে চারটের মধ্যে। কলকাতায় পৌঁছবে সন্ধ্যে সাতটায়। সপ্তাহে সাত দিনই এই পরিষেবা পাওয়া যাবে। মাথা পিছু খরচ পড়বে এক হাজার টাকা।
বাঙালি মেরিন ক্যাপ্টেন অঞ্জন সিনহার উদ্যোগে এই পরিষেবা চালু হচ্ছে। বর্তমানে তিনি 'ইনল্যান্ড ওয়াটারওয়েজ অথরিটি অফ ইন্ডিয়া'র মুখ্য প্রযুক্তি উপদেষ্টা (চিফ টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার) হিসেবে কাজ করছেন। মূলত তাঁর উদ্যোগেই মুম্বই-এর একটি সংস্থার সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে এই ফেরি সার্ভিস চালু হচ্ছে। রাজ্য পরিবহন দফতর সূত্র থেকে সবুজ সংকেত পাওয়া গেছে। কলকাতা থেকে জাহাজ ফেরি সার্ভিস চালু হলে গঙ্গাসাগর এবং সুন্দরবনের প্রতি বিদেশী পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়বে। সাগরের মানুষের জন্য ফ্রি অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা দেওয়া হবে। অসুস্থ রোগীদের নিয়ে আসার জন্য জাহাজে দু'টি সিট বরাদ্দ করা হবে। সেটাও হবে বিনামূল্যে।
জাহাজ কেনার ব্যাপারে মঙ্গলবারই মালয়েশিয়ার সংস্থার সঙ্গে চুক্তি সই হয়েছে। পর্যটন দফতরের আধিকারিকদের মতে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে রাজ্যে নতুন সরকার আসার পর বাংলাকে পর্যটন মানচিত্রে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দিতে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। ট্যুর অপারেটরদের বৃহত্তম সংগঠন 'দ্য ইন্ডিয়ান অ্যাসোশিয়েশন অফ ট্যুর অপারেটর'-এর বার্ষিক সম্মেলনে সম্প্রতি রাজ্য থেকে ঘুরে গেছেন দেশ-বিদেশের নামকরা ট্যুর অপারেটররা। বাংলায় পর্যটন শিল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী রাজ্য সরকার। উল্লিখিত ফেরি সার্ভিসের জন্য মালয়েশিয়া থেকে একটি বিলাসবহুল জাহাজ আনা হচ্ছে। তাতে থাকছে ১৫৬টি আসন। পুরোটাই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। ৬০০ কিলোওয়াটের দু'টি ইঞ্জিন ছাড়াও থাকবে দু'টি জেনারেটর। থাকবে শৌচাগারও। যাত্রীদের মনোরঞ্জনের জন্য টিভি ছাড়াও থাকছে দু'টো বড় স্ক্রিন। সেখানে সিনেমা দেখানো হবে। জাহাজের গড় গতিবেগ থাকবে ঘন্টায় ৩০ কিমি। শুকনো খাবার এবং মিনারেল ওয়াটার দেওয়া হবে যাত্রীদের। জাহাজের মাত্র ১.২ মিটার জলের তলায় থাকবে। তাই নদীপথে জাহাজ চলাচলে কোনও রকম অসুবিধে হবেনা। এবারে শুধু অপেক্ষা জাহাজ ভ্রমণের।