ব্যঙ্গচিত্রের শিরোনাম ‘বিদ্যার কারখানা’, ইংরাজিতে Cramming Machine। সেখানে দেখা যাচ্ছে, ছাত্ররা হাতে বই নিয়ে সিংহদ্বার দিয়ে প্রবেশ করছে একটি কারখানায়। বিদ্যার কারখানায়। কারখানার সিংহদ্বারের মাথায় মস্ত বড় একটি ঘড়ি। সময়কালের চিহ্ন। সিংহদ্বারের বাঁপাশে বেরবার পথে রয়েছে কারখানার বড়-বড় চিমনি। কারখানার চিহ্ন। চিমনি দিয়ে ধোঁয়া বেরচ্ছে। দুটি চিমনির মাথায় ফেজ ও টুপি-পরা দু’জন মানুষ দাঁড়িয়ে। দুটি প্রধান ধর্মের চিহ্ন। এঁরা পড়ুয়াদের প্রবেশ ও প্রস্থান তদারকি করছেন। কারখানার প্রবেশপথে লেখা ‘ইন’, বেরবার পথে ‘আউট’। যে-পথ দিয়ে পড়ুয়ারা বেরিয়ে আসছেন, সেখানে বড়-বড় আকারের মোটা-মোটা কয়েকটা বই। বইগুলির মধ্যে দিয়ে নিষ্পেষিত হয়ে বেরিয়ে আসছে ছাত্ররা। সে গ্রন্থের নিষ্পেষণে ছাত্ররা অধিকাংশই চ্যাপটা। দু’-একজন অক্ষত অবস্থায়, গুরুভার টেক্সটবুকের চাপ সহ্য করে বেরতে পেরেছে।
(‘বিদ্যার কারখানা’, ইংরাজিতে Cramming Machine)
কারখানায় বেরবার পথের পাশে একটি গম্বুজে বসানো রয়েছে একটি টোপর। টোপরের নিচে আঁকা চাঁদ ও তারা। তারার গায়ে লেখা বি.এ.। দুটি অর্থে, ব্যাচেলর অফ আর্টস, স্নাতক, গ্র্যাজুয়েট এবং বিয়ে, বিবাহ। কারখানার এই অক্ষত গ্র্যাজুয়েট ছাত্ররা বিয়ের বাজারে দামি পাত্র হিসেবে বিবেচিত।
সেই সময়কার নাম-করা পত্রিকা ‘ভারতী’তে আলোচনা বের হয়— “বিশ্ববিদ্যালয়ের সিংহদ্বার খোলা; দলে-দলে বলিষ্ঠ ও স্বাস্থ্যসুন্দর যুবক ছাত্র ভিতরে ঢুকিতেছে— তাহারাই বঙ্গের ভবিষ্যৎ আশা ভরসা। ভিতরে বিদ্যার বিরাট কারখানা— উপরে কর্তৃপক্ষ পাহারায় নিযুক্ত। চিমনি দিয়া ধূম বাহির হইতেছে। প্রকাণ্ড গ্রন্থ-যন্ত্র পুরাদমে চলিতেছে এবং তাহারই কঠোর চাপে আষ্টেপৃষ্ঠে থেৎলাইয়া বাঙ্গালার ভবিষ্যৎ শিবরাত্রির সলতেরা যখন বাহির হইয়া আসিতেছে, তখন তাহাদের আর সেই জোরালো গড়ন ও সুশ্রী চেহারা নাই; তাহাদের কাহারও দেহে ধুতি-চাদর— বোধহয় কেরানি; কাহারও পরনে চোগা–চাপকান-সামলা— নিশ্চয়ই উকিল; কেহ হাত-পা ছড়াইয়া পপাত ধরণীতলে— সম্ভবত পঞ্চত্বপ্রাপ্ত।”
-উল্লিখিত ব্যঙ্গচিত্র বা কার্টুনটির সৃষ্টিকর্তা ভারতের আধুনিক শিল্পযাত্রার অবিস্মরণীয় পথিকৃৎ গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর। কার্টুনটি তাঁর প্রথম ব্যঙ্গচিত্র সংকলন ‘বিরূপ বজ্র’-এ প্রকাশ পায়। ‘বিরূপ বজ্র’ প্রকাশিত হয় ১৯১৭-য়। ব্যঙ্গচিত্রটির সময়কাল ও তার ভাব-বিবরণেই স্বচ্ছ ধারনা মেলে গগনেন্দ্রের নিগূঢ় ধ্যান ধারনার। একজন প্রকৃত শিল্পীর মতোই সমসাময়িক সময়কে নিজের শিল্পকর্মে তুলে ধরেছিলেন তিনি। 'বিদ্যার কারখানা' ব্যাতীত তাঁর আঁকা বিভিন্ন ব্যঙ্গচিত্রের মধ্যে 'অদ্ভুত লোক', 'বিরূপ বস্ত্র', 'নয়া হুল্লোড়', 'জাতাসুর', 'বিদ্যার কারখানা', 'বাকযন্ত্র' –এগুলোর প্রত্যেকটিতেই ফুটে উঠেছে জাতপাত ও বর্ণবৈষম্য ব্যবস্থার সমালোচনা, পাশ্চাত্য সভ্যতা ও সংস্কৃতির অন্ধ ভক্ত একশ্রেণীর বাঙ্গালি, খল ব্রাহ্মণ, নারী জাতির দুর্দশা, সমাজের সমাজের ধনী, অভিজাত তথা ‘বাবু’ শ্রেণীর ক্রিয়াকলাপের সমালোচনা। একথা অস্বীকার করা যায় না, জাতীয়তাবাদ বিকাশে গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ব্যঙ্গচিত্র জনমনে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছিল।
অন্বেষণ ও অনুশীলনই ছিল গগনেন্দ্রনাথের জীবনাদর্শ। প্রিন্ট-ডিডিও-ডিজিটাল বর্তমানে যেকোনও মাধ্যমেই কার্টুন সহজলভ্য, কিন্তু উনিশ শতকে ভারতীয় উদ্যোগে পরিচালিত সংবাদপত্রে কার্টুনের অস্তিত্ব ছিল অচিন্ত্যনীয়। ব্যঙ্গচিত্রে সাধারণত কালো রঙের মাধ্যমেই শিল্পী তাঁর অঙ্কনচাতুর্য ও ভাবের প্রকাশ ঘটান। কিন্তু গগনেন্দ্রনাথ যে ব্যঙ্গচিত্রকেও রঙে রসে সিক্ত করে তুলতেন তার নেপথ্যে ছিল তাঁর সৌন্দর্য সৃষ্টির শিল্পী মন। ব্যঙ্গচিত্রাঙ্কনের মাধ্যমে খ্যাতি কিম্বা জীবিকা অর্জনের কোনো উদ্দেশ্য তাঁর ছিল না, সম্পূর্ণ আত্মতৃপ্তির জন্যই তিনি আঁকতেন। বিংশ শতকের দ্বিতীয় দশকে ব্যঙ্গচিত্রকলার প্রদর্শনীর আয়োজনের উদ্যোগই যখন অকল্পনীয় ছিল সেই সময়ও গগনেন্দ্রনাথের কার্টুনের প্রদর্শনী হয়েছে একাধিকবার। কেবলমাত্র প্রদর্শনীর আয়োজনই নয়, গগনেন্দ্রনাথ ব্যঙ্গচিত্র সংকলন প্রকাশেরও পথিকৃৎ।
স্বদেশী যুগের আগের ঘটনা। জাপানি শিল্পী ওকাকুরা — সঙ্গে আরো তিনশিল্পী টাইকান, কাৎসুতা ও হিসিদা জোড়াসাঁকোয় গগনেন্দ্রনাথের বাড়িতে আতিথ্য গ্রহণ করেন। তখনই জাপানি শিল্পীদের ছবি আঁকার কায়দা-কৌশল চাক্ষুষ দেখার সুযোগ পান গগনেন্দ্র ও অবনীন্দ্রনাথ। তাঁদের চিত্রাঙ্কনের রীতিনীতিতে উভয়েই আকৃষ্ট হন। অনুমান করা হয় এই সময় থেকেই শুরু হয়েছিল গগনেন্দ্রনাথের চিত্রচর্চার প্রকৃত অনুশীলন। নিজেদের বাড়ির দক্ষিণের বারান্দায় অবনীন্দ্রনাথের পাশেই ছিল তাঁর বসবার জায়গা। দুই ভাই দু-তিন হাতের ব্যবধানে পাশাপাশি বসে ছবি আঁকতেন কিন্তু ছবি আঁকার রীতিনীতি দুজনের ছিল সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র। নিবিড় অনুশীলন ও সূক্ষ্ম পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে ধীরে ধীরে গগনেন্দ্রনাথ খুঁজে পান তাঁর নিজস্ব রূপ রস যা মননের এক অনাস্বাদিত স্বাদে ভরপুর। কোনও আর্ট স্কুলে চারুকলাচর্চার সুযোগ তাঁর হয়নি। নিজেই নিজের অন্তর্মাধুর্যের উন্মোচন করে তিনি যেন স্বয়ম্ভু। নিজের নিপুণ নিষ্ঠার যে প্রকরণগত কলাকৌশল তিনি আয়ত্ত্ব করেন তা অভিনব এবং অদৃষ্টপূর্ব। গগনেন্দ্রনাথের উত্তরণের সে ইতিহাস বিশেষভাবে স্মরণীয়।
রূপদক্ষ গগনেন্দ্রনাথেৱ তুলিতে ধরা আছে নানা মানুষের প্রতিকৃতি। বাবার ছোট ভাই জ্যোতিরিন্দ্রনাথের মুখাকৃতি তাঁকে বারংবার আকর্ষণ করেছে। প্রতিকৃতিগুলি প্রধানত আঁকা হয়েছিল কালি-তুলির সাহায্যে। কোনো-কোনোটিতে আবার রঙের ছোঁওয়াও আছে। গগনেন্দ্রনাথ তাঁর ‘রবিকা’-র একাধিক মুখচ্ছবি আঁকেন। ছোট ভাই অবনীন্দ্রনাথের প্রোফাইল বা পার্শ্বচিত্রটি যেমন উল্লেখযোগ্য তেমনি এই প্রসঙ্গে সহধর্মিণী প্রমোদকুমারী দেবীর ছোট একটি প্রোফাইলও। ছবিতে তুলির টানে প্রমোদকুমারী দেবীর আয়ত চোখ আর মুখের আদলে মূর্ত হয়ে উঠেছে তাঁর স্নেহময়ী রূপটি। গগনেন্দ্রনাথের আঁকা মুখচ্ছবির সংখ্যা খুব বেশি না হলেও এ বিষয়ে তাঁর শিল্প-দক্ষতা ছিল প্রশ্নাতীত।
ডঃ দীনেশচন্দ্র সেন বলেছেন : ‘গগনবাবুদের বাড়ীতেই ভারতীয় শিল্পকলার নবজন্ম — এ ক্ষেত্রে অবনীন্দ্রনাথের নাম সমস্ত জগতে প্রচারিত — কিন্তু গগনেন্দ্রনাথের দানও অল্প নহে। গগনবাবু যশঃলিপ্সু ছিলেন না। তিনি না আঁকিয়া থাকিতে পারিতেন না বলিয়া আঁকিতেন — প্রতিষ্ঠার জন্য নহে। আমি কখনই তাঁহাকে নিষ্ক্রিয়ভাবে বসিয়া থাকিতে দেখি নাই।’
গগনেন্দ্রনাথের গ্রন্থ চিত্রাঙ্কণে মনোনিবেশ এবং শুরু হয় চিত্রাঙ্কণের আর এক পর্ব। শিল্পী হিসাবে খ্যাতির সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও সেই সময় স্বল্পখ্যাত গগনেন্দ্রনাথকেই তাঁর জীবনস্মৃতি গ্রন্থে অলংকরণের দায়িত্ব দেন রবীন্দ্রনাথ। জীবনস্মৃতি-র ছবিগুলির মাধ্যমে জোড়াসাঁকোর বাড়ির অধিবাসী আর অন্দরমহলের যথাযথ রূপটি ধরে রেখেছেন তিনি। ‘জল পড়ে পাতা নড়ে’ থেকে শুরু করে চাঁদের আলোয় মহর্ষির সান্নিধ্যে উপবিষ্ট বালক রবীন্দ্রনাথ অথবা বাড়ীর পরিচারকের সলতে পাকানোর দৃশ্যে মূর্ত হয়ে উঠেছে অতীতের জোড়াসাঁকোর পরিবেশটি।
জীবনস্মৃতিতে দু-তিনটি প্রাকৃতিক দৃশ্য ছাড়াও দ্বিজেন্দ্রনাথ, জ্যোতিরিন্দ্রনাথ, সত্যপ্রসাদ গঙ্গোপাধ্যায়ের তিনটি মুখচ্ছবির সঙ্গে শ্রীকণ্ঠবাবুর গোলগাল প্রতিকৃতিও এঁকেছিলেন গগনেন্দ্রনাথ। বস্তুতঃ জীবনস্মৃতি-তে লেখনীর প্রতি আনুগত্য বজায় রেখে চিত্রাঙ্কনের অদ্ভুত সমন্বয় সাধন করা হয়েছে। জীবনস্মৃতির ছবিগুলির রচনাকাল ১৯১১ খ্রিষ্টাব্দ এবং চিত্রে জাপানি কলাকৌশলের প্রয়োগ লক্ষণীয়। জীবনস্মৃতির চিত্রাঙ্কণে গগনেন্দ্রনাথ যে জাপানি চিত্রকলার রীতিনীতি এবং আদর্শ গ্রহণ করেছিলেন তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
পরবর্তী চিত্রাঙ্কণ পর্বেও তিনি জাপানি শিল্পীদের কালিতুলির ড্রইং-এর অনুসারী এবং এই ধারায় চাইনিজ কালির সাহায্যে কতকগুলি অসামান্য কাকের ছবি এঁকেছেন। চালাক চতুর কাকের ভীতি-বিহ্বল চাউনি কিংবা গ্রীবাভঙ্গি বা ওদের দলবেঁধে ঝগড়ার দৃশ্য শিল্পীর তুলির বলিষ্ঠ টানে মূর্ত হয়ে উঠেছে। কাকের এই ছবিগুলির কয়েকটি Ten Indian Studies নামে গ্রন্থাকারে সংকলিত হয়েছিল। গগনেন্দ্রনাথের প্রথম চিত্রসংকলনটির প্রকাশকাল ১৯১১ খ্রিষ্টাব্দ।
চিত্রে শিল্পীর নিজের প্রতীকচিহ্ন ব্যবহার জাপানের দীর্ঘদিনের প্রথা। গগনেন্দ্রনাথও জাপানি শিল্পীদের অনুকরণে নিজের আঁকা ছবিতে নামের আদ্যাক্ষর জি টি –র সঙ্গে চতুষ্কোণ একটি মিল ব্যবহার করতেন। তাছাড়া গগনেন্দ্রনাথের চিত্রকলায় যে সোনালি রং-এর ব্যবহার চোখে পড়ে প্রকৃতপক্ষে তা রং নয়। জাপানি স্ক্রিন পেন্টিং-এর অনুসরণে তিনি সোনালি রং-এর কাগজে ছবি আঁকা শুরু করেন। গগনেন্দ্রনাথের জন্য জাপান থেকে রং আর সোনালি বোর্ড আনানো হত। সোনালি বোর্ডে কম সময়ে ছবি আঁকা হয়ে যেতো বলে ওই কাগজ গগনেন্দ্রনাথ খুব পছন্দ করতেন।
গগনেন্দ্রনাথের প্রতিভার অনন্য অবদান দৃশ্যচিত্র। দৃশ্যচিত্র রচনায় তাঁর নৈপুণ্য অতুলনীয়। এই চিত্রকলায় তিনি যেমন নৈসর্গিক সৌন্দর্যের বিচিত্র নিদর্শন রেখে গিয়েছেন তেমনি শহরের রূপের সঙ্গে বাংলার অতিপরিচিত গ্রামীণ জীবনের হৃদয়গ্রাহী ছবিও তুলে ধরেছেন অনায়াসলব্ধ ক্রিয়া কৌশলে। ‘রহস্যলোক’ চিত্রমালায় নিগূঢ় রহস্যাবৃত এক জগতের চিত্রায়ণ করেছেন তিনি অসামান্য মুনশিয়ানায়। এই চিত্রকল্পে গগনেন্দ্রনাথের ভূমিকা মিস্টিক শিল্পীর। জাপানি ও চিনা শিল্পীদের সাদাকালো রীতির প্রতি আকৃষ্ট হয়ে অনুশীলনের মাধ্যমে তিনি এমন একটি নিজস্ব শৈলীর উদ্ভাবন করেছেন, যা তাঁর আগে অন্য কোনো চিত্রকলায় দেখা যায় নি। চাইনিজ কালির সাহায্যে সিলুয়েট বা ছায়াছবি, বিশেষতঃ কালো মুখচ্ছবি রচনাতেও তাঁর প্রবণতা ছিল। গগনেন্দ্র নাথের আগে অন্য কোনো ভারতীয় শিল্পীকে সিলুয়েট রীতির প্রতি আকৃষ্ট হতে দেখা যায় না।
ভারতীয় শিল্পজগতে নতুন পথের দিশারী গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর, তিনি ছিলেন প্রিন্স দ্বারকানাথের প্রপৌত্র। দ্বারকানাথ ঠাকুরের শিল্পপ্রীতি সম্বন্ধে মোটামুটি সকলেই জ্ঞাত। প্রচুর টাকাপয়সা খরচ করে সেসময় তিনি ইউরোপীয় শিল্পকলার বহু মনোজ্ঞ নিদর্শন সংগ্রহ করেন। দ্বারকানাথের এই শিল্পপ্রীতির উত্তরাধিকার পেয়েছিলেন তাঁর সন্তানরাও। পরম্পরায় অর্জিত শিল্প-প্রেমের সেই ঐতিহ্যকে নিজের মনন আর দর্শনের মাধুর্যে মণ্ডিত করেন গগনেন্দ্রনাথ। ১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দের ১৭ সেপ্টেম্বর (৩রা আশ্বিন ১২৭৪) জোড়াসাঁকোয় গুণেন্দ্রনাথের প্রথম সন্তান গগনেন্দ্রনাথের জন্ম হয়। মা সৌদামিনী দেবী। গগনেন্দ্রনাথের ধ্যানধারণা একান্তভাবে শিল্পচর্চার পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না। শিল্প-সাহিত্য ও অভিনয় কলার মাধ্যমে স্বদেশের সাংস্কৃতিক চেতনার বিকাশ ও মান উন্নয়নই ছিল তাঁর লক্ষ্য। বাংলার শিল্প ও সাহিত্যের সারমর্ম অনুধাবন করে জাতীয় ঐতিহ্য আর সংস্কৃতিকে সার্বজনীন করে তুলতে চেয়েছিলেন তিনি।